প্রসঙ্গ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের
বেমেছাল মহাসম্মানিত বুলন্দী শান মুবারক এবং উনাদের শানের খিলাফ বর্ণিত মওযূ হাদীছ ও তার খণ্ডনমূলক জবাব (১১)
এডমিন, ১৩ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৬ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০৬ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ২০ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) বরকতময় জিবনী মুবারক

১. নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক উনার খিলাফ বর্ণিত মওযূ হাদীছ ও তার খণ্ডনমূলক জবাব:
গ¦রানীক্ব ও তৎসংশ্লিষ্ট ঘটনা এবং মুসলমানদের সাথে মুশরিকদের সিজদাহ্ বিষয়ে মওযূ হাদীছ ও তার খণ্ডনমূলক জবাব:
রঊফুর রহীম, ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উপরোক্ত প্রত্যেকটি বর্ণনাই বাতিল, মওযূ, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। এ ধরণের কোনো ঘটনাই সংঘটিত হয়নি। কখনও মুশরিকরা মুসলমানদের সাথে সিজদাহ্ করেনি। শয়তান কখনও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক উনার সাথে তার কথা মিলায়নি। এরূপ চিন্তা করাটাও কাট্টা কুফরী ও চির জাহান্নামী হওয়ার কারণ। এগুলো সব বানানো কিচ্ছা-কাহিনী। এগুলো একটাও গ্রহণ করা যাবে না। এগুলো বিশ্বাস করা কাট্টা কুফরী হবে। বর্ণনাকারীরা ইসরাঈলী বর্ণনা দ্বারা প্রতারিত হয়ে ইবলীসের ধোঁকায় পড়ে এগুলো বর্ণনা করেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! এরূপ কুফরী আক্বীদাহ্ থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য ফরযে আইন।” সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
আল্লামা হযরত ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বীয় তাফসীরগ্রন্থে উপরোক্ত বর্ণনা উল্লেখ করে বলেন,
اَمَّا اَهْلُ التَّحْقِيْقِ فَقَدْ قَالُوْا هٰذِهِ الرِّوَايَةُ بَاطِلَةٌ مَوْضُوْعَةٌ وَاحْتَجُّوْا عَلَيْهِ بِالْقُرْاٰنِ وَالسُّنَّةِ وَالْمَعْقُوْلِ
অর্থ: “মুহাক্কিকগণ বলেছেন যে, এই সকল বর্ণনাগুলো বাতিল, মওযূ এবং উনারা তা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ এবং আক্বলী দলীল দ্বারা খ-ন করেছেন।” (তাফসীরে কবীর ২৩/২৩৭)
অতঃপর হযরত ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কতিপয় সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা দলীল পেশ করেন। তন্মধ্যে কয়েকখানা হচ্ছেন- (১) মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ الْاَقَاوِيْلِ. لَاَخَذْنَا مِنْهُ بِالْيَمِيْنِ. ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ الْوَتِيْنَ. فَمَا مِنْكُمْ مِّنْ اَحَدٍ عَنْهُ حٰجِزِيْنَ.
অর্থ: “কেউ যদি আমার নাম মুবারক-এ বানিয়ে বানিয়ে কোনো কথা বলে, তাহলে আমি কুদরতী ডান হাত মুবারক দ্বারা তাকে পাকড়াও করে তার জিহ্বা কেটে দিবো অর্থাৎ তাকে কঠিন শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদ- দিবো। তোমাদের কেউ তাকে মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে রক্ষা করতে পারবে না।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হাক্কাহ্ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৪-৪৭)
(২) মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ مَا يَكُوْنُ لِىْٓ اَنْ اُبَدِّلَهٗ مِنْ تِلْقَآئِ نَفْسِىْ. اِنْ اَتَّبِعُ اِلَّا مَا يُوْحٰىۤ اِلَىَّ
অর্থ: “আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি দয়া করে বলে দিন- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনাকে নিজের পক্ষ থেকে পরিবর্তন করা আমার কাজ নয়। আমার প্রতি যা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক করা হয়, আমি শুধু সেই বিষয়েরই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অনুসরণ মুবারক করি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইঊনুস শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)
(৩) মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوٰى. اِنْ هُوَ اِلَّا وَحْىٌ يُّوْحٰى
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক ব্যতীত নিজ থেকে কোনো কথা মুবারক বলেন না, কোনো আমল মুবারক করেন না, কোনো সম্মতি মুবারক প্রকাশ করেন না।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নজম শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩-৪)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।