মসজিদে প্রবেশ করার-বের হওয়ার ও অবস্থান করার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
, ২৩ শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৭ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ২৪ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ১০ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
১। প্রথমে বাম পায়ের জুতা খুলে জুতার উপর বাম পা রাখতে হবে। তারপর ডান পায়ের জুতা খুলে ডান পা মসজিদে প্রবেশ করাতে হবে। (বুখারী শরীফ-১/১৬১)
২। মসজিদে প্রবেশের সময় প্রথমে পবিত্র বিসমিল্লাহ শরীফ পাঠ করা ও মসজিদে প্রবেশের দোয়া মুবারক পাঠ করা। নি¤েœ মসজিদে প্রবেশের দোয়া মুবারক উল্লেখ করা হলো-
بِسْمِ اللّٰهِ اَلصَّلٰوةُ وَالسَّلاَمُ عَلٰى رَسُوْلِ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ .اَللّٰهُمَّ افْتَحْ لِىْ اَبْوَابَ رَحْمَتِكَ.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারকে প্রবেশ করছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মহাসম্মানিত ছলাত-সালাম মুবারক। আয় মহান আল্লাহ পাক! আপনি আমার জন্য আপনার রহমত মুবারক উনার দরজাসমূহ খুলে দিন। ” (ইবনে মাজাহ শরীফ)
৩ । ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে প্রবেশ করা। (ফতওয়ায়ে শামী-৩/২৫৪,২/৪৪৩)
৪। মসজিদে ঢুকে প্রথম কাতারের ডান পাশে বসা। ডান পাশে জায়গা না থাকলে বাম পাশে বসা। প্রথম কাতারে জায়গা না থাকলে দ্বিতীয় কাতারে উক্ত নিয়মে বসা। অর্থাৎ সামনের কাতার ফাঁকা থাকতে পিছনের কাতারে না বসা। (তিরমিযী শরীফ-১/৫৩)
৫। মসজিদে প্রবেশের পর সবসময়ের জন্য নিচের কথাগুলো মনে রাখা উচিত।
ক) বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কোন কথা না বলা। দুনিয়াবী কোন কথা বলাই যাবেনা। এতে কমপক্ষে ৪০ বছরের ইবাদত-বন্দেগী নষ্ট হয়ে যায়।
খ) কেউ নামাজ পড়তে থাকলে; সে ক্ষেত্রে যিকির ও পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত আস্তে আস্তেÍ করা। যাতে নামাজী ব্যক্তির নামাজে কোন সমস্যা না হয়।
গ) সম্মানিত ক্বিবলা উনার দিকে পা ছড়িয়ে না বসা। এটা কোন অবস্থাতেই জায়িয নয়।
ঘ) মোবাইলের রিং টোন নিয়ন্ত্রণ করা। মোবাইল বন্ধ করে রাখা। কেননা, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, শেষ জামানায় মসজিদে গান-বাদ্য বাজানো হবে। আর বর্তমানে তা মোবাইলের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। সুতরাং মসজিদে ঢুকার আগেই মোবাইল বন্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করে নেওয়া।
ঙ) মসজিদে কাঁচা পেঁয়াজ, রসুন, গাজর, মুলা ও দুর্গন্ধ জিনিস খেয়ে মসজিদে আসবে না।
মসজিদ থেকে বের হওয়ার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক হলোÑ
১) মসজিদ থেকে বাম পা দিয়ে বের হতে হবে।
২) মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় নি¤েœাক্ত দোয়া মুবারক পাঠ করতে হবে। মসজিদ থেকে বের হওয়ার দু‘আ মুবারক -
بِسْمِ اللّٰهِ اَلصَّلٰوةُ وَالسَّلاَمُ عَلٰى رَسُوْلِ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ .اَللّٰهُمَّ اِنِّىْ اَسْاَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ اَللّٰهُمَّ اعْصِمْنِيْ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ .
অর্থ : মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারকে বের হচ্ছি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র ছলাত-সালাম মুবারক। আয় মহান আল্লাহ পাক! আমি আপনার কাছে আপনার কল্যাণ কামনা করছি। আয় মহান আল্লাহ পাক! আমাকে বিতাড়িত শয়তান থেকে হিফাযত করুন। (আবু দাউদ শরীফ, মুসলিম শরীফ)
৩) মসজিদ থেকে বের হয়ে, বাম পায়ের জুতার উপর বাম পা রেখে, ডান পায়ের জুতা আগে পরিধান করবে। অতঃপর বাম পায়ের জুতা পরিধান করবে।
সম্মানিত মসজিদ দেখলে যে দু‘আ মুবারক পাঠ করতে হয়-
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِىْ ذُنُوْبِىْ وَخَطَئِىْ وَعَمَدِىْ.
অর্থ: আয় মহান আল্লাহ পাক! আপনি আমার ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় সমস্ত গুনাহসমূহ বা পাপরাশি সমূহ ক্ষমা করে দিন।
উল্লেখ্য, মসজিদ হচ্ছে ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য। এখানে গান-বাজনা করা, রাজনৈতিক মিটিং-মিছিল করা, দলীয় নেতা-কর্মীদের ছবি টাঙ্গিয়ে সভা-সমাবেশ করা, এক কথায় সম্মানিত শরীয়ত উনার খেলাফ সব ধরণের কাজ করা হারাম ও কুফরী। মসজিদ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর। এখানে উনারই ইবাদত-বন্দেগী করতে হবে।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খুতবায় লাঠি ব্যবহার করা খাছ সুন্নত মুবারক
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র মিম্বর শরীফে খুতবা দেওয়ার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহাসম্মানিত খাছ সুন্নতী মিম্বর শরীফ উনার বর্ণনা
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ঘরে চন্দন কাঠ পোড়ানো এবং ধূপ জ্বালানো সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অর্ন্তভূক্ত
১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের উদ্দেশ্যেই নিকাহ বা বিবাহ করতে হবে
১৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক হচ্ছে, বিবাহ-শাদী করা। যার দ্বারা রিযিক বৃদ্ধি পায়
১৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তরীক্বায় বিবাহের মোহর
১২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিবাহের পূর্বে বরকে ও কনেকে দেখার সম্মানিত শরয়ী অর্থাৎ মহাসম্মানিত সুন্নতী তরীক্বাহ
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বিবাহের ক্ষেত্রে কুফু বা সমকক্ষতা রক্ষা করা পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বিবাহের প্রস্তাব দেয়া এবং সম্মতি জ্ঞাপন করার মহাসম্মানিত সুন্নতী তরীক্বাহ
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












