নছীহতে কায়িম মাকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্যের মাধ্যমেই কুদরতি রিযিক পাওয়া যাবে-৫
, ১১ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৮ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
![মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্যের মাধ্যমেই কুদরতি রিযিক পাওয়া যাবে-৫](https://www.al-ihsan.net/uploads/1700945429_Nosihote-Ummul-Umam-350x350.png)
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে ,
عَنْ أَبـِـيْ ذَرٍّ رَضِىَ اللّٰهُ تَـعَالٰـى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنِّـيْ لَأَعْلَمُ آيَةً لَوْ أَخَذَ النَّاسُ بِـهَا لَكَفَتْـهُمْ وَمَنْ يَــتَّـقِ اللّٰهَ يَـجْـعَلْ لَهٗ مَـخْرَجًا وَيَــرْزُقْـهُ مِنْ حَـيْثُ لَا يَـحْـتَسِبُ وَمَنْ يَــتَـوَكَّلْ عَلَى اللّٰـهِ فَـهُوَ حَسْبُهٗ. (رواه احـمد و ابن ماجه و الدارمى)
বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আবূ যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পবিত্র কুরআন শরীফের এমন একখানা আয়াত শরীফ আমি জানি, যদি লোকেরা সেই আয়াত শরীফ [সূরা ত্বলাক্ব শরীফ : ২,৩] এর উপর আমল করতো, তাহলে তাদের জন্য ইহাই যথেষ্ট হতো। (পবিত্র সেই আয়াত শরীফখানার অর্থ হচ্ছে) যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে গাইরুল্লাহ থেকে বের করেন এবং এমন স্থান থেকে রিযিক দান করেন যে, সে কল্পনাও করতে পারে না। আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি তাওয়াক্কুল করবে মহান আল্লাহ পাক তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হবেন। সুবহানাল্লাহ!
[আহমাদ শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, দারেমী শরীফ]
অন্য আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرٰى آمَنُـوْا وَاتَّــقَوْا لَـفَتَحْنَا عَلَـيْهِمْ بَــرَكَاتٍ مِّنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ وَلٰكِنْ كَذَّبُـوْا فَأَخَذْنَاهُمْ بِـمَا كَانُـوْا يَكْسِـبُـوْنَ ﴿৯৬﴾ سورة الأعراف
যমীনবাসী যদি ঈমান আনতো এবং তাক্বওয়া হাছিল করতো, অবশ্যই আমি তাদের জন্য আসমান এবং যমীনের বরকতসমূহ খুলে দিতাম। বরং তারা মিথ্যারোপ করেছে। আমি তাদের কৃতকর্মের কারণে তাদেরকে পাকড়াও করেছি। [সূরা আরাফ শরীফ: ৯৬]
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ أَبـِيْ هُرَيْـرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قَالَ رَبُّكُمْ عَزَّ وَجَلَّ لَوْ أَنَّ عَبِـيْدِيْ أَطَاعُوْنِـيْ لَأَسْقَـيْـتُـهُمُ الْمَطَرَ بِاللَّيْلِ وَأَطْلَعْتُ عَلَـيْهِمُ الشَّمْسَ بِالنَّـهَارِ وَلَـمْ أُسْـمِعْهُمْ صَوْتَ الرَّعْدِ. (رواه أحـمد)
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনাদের রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, যদি আমার বান্দারা আমার আনুগত্য করতো, অবশ্যই আমি তাদের জন্য রাতে বৃষ্টি বর্ষণ করতাম, তাদের জন্য দিনে সূর্যের কিরণ ছড়িয়ে দিতাম এবং তাদেরকে মেঘের গর্জন শুনাতাম না। সুবহানাল্লাহ!
[আহমাদ শরীফ]
মূল বিষয় হলো, বান্দা-বান্দী যদি মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করে, উনার প্রতি তাওয়াক্কুল করে, উনার শোকরগুজারী করে এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করে, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে এমন কুদরতী রিযিক দান করবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। শুধু তাই নয় রিযিকে বরকত দান করে ইতমিনান করে দিবেন।
কিন্তু বান্দা মহান আল্লাহ পাক উনাকে হাক্বীক্বীভাবে বিশ্বাস করে না এবং উনার প্রতি তাওয়াক্কুলও করে না। তারা মনে করে যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি দিবেন, কিন্তু আমাদেরকেই রিযিক অন্বেষণ করতে হবে। মহান আল্লাহ পাক বলেন, ঠিক আছে! তোমরা তোমাদের রিযিক খুঁজে নাও।
কারণ পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ أَبـِيْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰـى عَنْهُ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَـقُوْلُ اللهُ تَـعَالٰـى أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَـبْدِيْ بـِـيْ. (متفق عليه)
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই আমি বান্দার ধারণা অনুযায়ী।
[বুখারী ও মুসলিম শরীফ]
অর্থাৎ বান্দা মহান আল্লাহ পাক উনাকে যেভাবে ধারণা করবে সেভাবেই সে মহান আল্লাহ পাক উনাকে পাবে। বান্দা যদি এমন ধারণা বা বিশ্বাস রাখে যে, মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করলে, তাক্বওয়া (আল্লাহভীতি) অবলম্বন করলে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে কুদরতী রিযিক দিবেন। তাহলে ঠিকই সে সেভাবে রিযিক পাবে। প্রকৃতপক্ষে বান্দা এই বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারে না বলেই সে ইবাদত-বন্দেগী, আনুগত্যতার মাধ্যমে কুদরতি রিযিক পায় না।
পক্ষান্তরে, বান্দা যদি এ ধারণা করে যে, চাকরিবাকরির মাধ্যমে রিযিক পাবে; তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে সেভাবেই রিযিক দিবেন।
মূলত ধারণা অনুযায়ী বান্দা দুইভাবে রিযিক পায়। (১) মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্যতার মাধ্যমে সরাসরি কুদরতী রিযিক লাভ করে। (২) উসীলার মাধ্যমে রিযিক লাভ করে। যেমন চাকরিবাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি বিভিন্ন কাজকর্মের মাধ্যমে প্রাপ্ত রিযিক।
এক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাকে যে কোনো একটি বেছে নেয়ার এখতিয়ার দান করেছেন। তিনি বান্দাকে পরীক্ষা করবেন যে, বান্দা কোনটাকে গ্রহণ করে। এই দুটোর মধ্যে হাক্বীক্বীভাবে তাওয়াক্কুল করে ইবাদত-বন্দেগী, আনুগত্যতায় মশগুল থাকাই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অধিক পছন্দনীয়। সুবহানআল্লাহ।
ইনশাআল্লাহ চলবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ অনুমতি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করা এবং কারো ঘরে উঁকি দেয়া
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহিলাদের সুন্নতী লিবাস, অলংকার ও সাজ-সজ্জা (১৬)
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য (৭)
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সুওয়াল: যার জাররা পরিমাণ ঈমান আছে সেও একদিন জান্নাতে যাবে। ইহা পবিত্র হাদীছ শরীফ কি-না? যদি পবিত্র হাদীছ শরীফ হয় তাহলে জাররা পরিমাণ বলতে কি বুঝানো হয়েছে?
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সুওয়াল: মৃত ব্যক্তির লাশের কাছে কান্নাকাটি করা, দোয়া-কালাম পড়া, কথাবার্তা বলা হয়। এগুলো মৃত ব্যক্তি শুনতে পায় কি না? বুঝতে পারে কি না?
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাইয়ূছ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র আশুরা সম্পর্কিত সুওয়াল জাওয়াব
১২ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র আশুরা সম্পর্কিত সুওয়াল জাওয়াব
১১ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে ব্যক্তিত্ব বা আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে (৪)
১০ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাসপাতালে নারীর নিরাপত্তা এবং শরয়ী পর্দাভিত্তিক আল মুতমাইন্নাহ মা ও শিশু হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা
০৯ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)