ঘটনা থেকে শিক্ষা:
মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ উনাকে তা’যীম-তাকরীম করার প্রতিদান
, ১০ই রবিউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৪ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৩ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ১৯ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“তারা ঈমান আনে ওই কিতাব উনার প্রতি, যে কিতাব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি নাযিল করা হয়েছে। আর যে কিতাব পূর্বে নাযিল করা হয়েছে, সে কিতাব উনার প্রতি।
এই মহাসম্মানিত বাণী মুবারক পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বলা হয়, এক বুযূর্গ ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনার নাম মুবারক ছিলো হযরত বিশর হাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি প্রথম জীবনে ছিলেন একজন শরাব খোর, সারাদিন শরাবখানায় মাতাল হয়ে থাকতেন, আজে-বাজে কাজ করতেন। হযরত বিশর হাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একদিন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ দেখলেন- মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম অর্থাৎ بسم الله الرحمن الرحيم একটি কাগজে লিখা এবং কাগজটি মাটিতে পড়ে আছে। ওটা দেখে হযরত বিশর হাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন মনে মনে চিন্তা করলেন, সারা জীবনতো পাপ করেছি, নেক কাজতো করিনি, মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম এটাতো অবশ্যই মাটিতে থাকা উচিত নয়, এটাকে তুলে নেয়া উচিত। কাগজটি তুলে নিলেন। তুলে নিয়ে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে আতর গোলাপ মেখে উনার সেই ঘরের উঁচু স্থানে রেখে দিলেন। এরপর তিনি আবার শরাবখানায় চলে গেলেন।
ওই এলাকায় একজন আল্লাহওয়ালা লোক ছিলেন। তিনি রাতে স্বপ্নে দেখলেন উনাকে স্বপ্নে বলা হচ্ছে, হে ব্যক্তি! তুমি বিশরকে গিয়ে সংবাদ দাও, আমি তাকে কবুল করেছি। স্বপ্নটা দেখার পর উনার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ঘুম থেকে উঠে মনে মনে চিন্তা করলেন, স্বপ্নটা আমি ভুল দেখেছি। কারণ ওই ব্যক্তি নিশ্চয়ই ভালো লোক নয়। তিনি অজু করে দু’রাকায়াত নামায পড়ে আবার শুয়ে পড়লেন। একে একে তিনবার একই স্বপ্ন দেখলেন এবং শেষবার বলা হলো, তুমি তাড়াতাড়ি সংবাদ দাও, আর তা না হলে তোমার অসুবিধা হবে।
বুযূর্গ ব্যক্তি তাড়াতাড়ি সংবাদ দেয়ার জন্য উনার বাড়ীতে গেলেন। উনার বাড়ী থেকে বলা হলো, তিনি তো এখানে নেই, তিনি শরাবখানায়। সেই বুযূর্গ ব্যক্তি তিনি শরাবখানায় গিয়ে উনার যারা বন্ধু-বান্ধব ছিলো তাদেরকে বললেন, বিশর হাফী কোথায়? সেই বুযূর্গ ব্যক্তি বললেন, উনার সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে পয়গাম এসেছে। তিনি দেখলেন, বিশর হাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মাতাল অবস্থায় রয়েছেন শরাব পান করে। তিনি সেখানে গিয়ে বললেন, হে বিশর হাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনার কাছে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ হতে পয়গাম এসেছে। তিনি মাতাল অবস্থায় বললেন, হে ব্যক্তি! শান্তিÍর পয়গাম না অশান্তির পয়গাম? বলা হলো, তোমার জন্য শান্তির পয়গাম এসেছে। হযরত বিশর হাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি লাফিয়ে উঠে বললেন, হে বন্ধুরা আজ থেকে বিদায়। মহান আল্লাহ পাক আমাকে কবুল করে নিয়েছেন এবং সংবাদ প্রেরণ করেছেন। আমি আর এখানে থাকবো না। তিনি চলে গিয়ে সেই যামানার যাঁরা বড় বড় মহান ওলী ছিলেন, উনাদের ছোহবত ইখতিয়ার করলেন এবং পরবর্তী সময় তিনি বড় ওলীআল্লাহ হয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
হাফী শব্দের অর্থ হলো- খালি পায়ে যে চলে অর্থাৎ জুতাবিহীন। তিনি খালি পায়ে চলতেন বাগদাদের রাস্তায় রাস্তায়। উনার প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি যতদিন জীবিত ছিলেন, ততদিন পর্যন্ত বাগদাদের রাস্তার মধ্যে কোন পশু-পাখি সরাসরি ইস্তেঞ্জা করতো না। সুবহানাল্লাহ! একদিন এক পশুর মালিক দেখলেন, এক পশু রাস্তার মধ্যে ইস্তিঞ্জা করছে। তিনি বললেন,انالله وانا اليه راجعون তিনি যখন একথা বললেন, তখন সঙ্গী সাথীরা বললেন যে, ভাই কে মারা গেলো তুমি যে একথা বললে? পশুর মালিক বললেন, দেখো; নিশ্চয়ই কিছুক্ষণ আগে হযরত বিশর হাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিদায় নিয়েছেন। সংবাদ নিয়ে জানা গেলো, সত্যি কিছুক্ষণ আগে হযরত বিশর হাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিদায় নিয়েছেন। পশুর মালিককে জিজ্ঞেস করা হলো- তুমি কি করে এটা বুঝলে? তিনি বললেন, আমি লক্ষ্য করছি আজ পর্যন্ত যতদিন পশু চরাই বাগদাদের রাস্তায় কোন পশু-পাখিকে ইস্তিঞ্জা করতে দেখিনি, একমাত্র হযরত বিশর হাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানার্থে। কিন্তু আজকে যখন এই পশু ইস্তিঞ্জা করলো, আমি নিশ্চিত হয়ে গেলাম নিশ্চয়ই হযরত বিশর হাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জমিনের উপর নেই এবং সত্যিই সংবাদ নিয়ে জানা গেলো তিনি নেই। সুবহানাল্লাহ! ফিকিরের বিষয়; যাঁরা কিতাবের উপর ঈমান এনেছেন এবং তাক্বওয়া অর্জন করেছেন উনাদের কতটুকু মর্যাদা মহান আল্লাহ পাক তিনি দিয়েছেন। কতটুকু উনাদের ফযীলত দিয়েছেন সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












