মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রতি সমস্ত সৃষ্টির হক্ব (২)
, ২১ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৪ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৩ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৯ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
![মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রতি সমস্ত সৃষ্টির হক্ব (২)](https://www.al-ihsan.net/uploads/1709409022__المؤمنین.png.png)
اَنِ اشْكُـرْ لِــىْ وَلِـوَالِدَيْكَ
“তোমরা আমার শুকুরগুজারী করো এবং তোমাদের পিতা-মাতার শুকুরগুজারী করো।” এটা আমভাবে। কিন্তু হাক্বীক্বত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শুকুরগুজারী করতে হবে। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!)
নিশ্চয়ই প্রত্যেকটা সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বা অন্যান্য যা আছে সেখানে অনেক হাক্বীক্বত রয়েছে। সেখান থেকে যতটুকু জানা যায়, সেটা জেনে সে অনুযায়ী আমল করা দায়িত্ব-কর্তব্য। আমভাবে-
اَنِ اشْكُـرْ لِــىْ وَلِـوَالِدَيْكَ
“তোমরা আমার শুকুরগুজারী করো এবং তোমাদের পিতা-মাতার শুকুরগুজারী করো।”
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বলা হয়- হযরত সুলত্বানুল আরিফীন বাইযীদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছাত্র বয়সে যখন এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফখানা পড়লেন, তখন তিনি উনার উস্তাদকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ মুবারক কী?’ উস্তাদ বললেন- “যিনি খ্বালিক্ব যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনি এখানে বলেছেন যে, ‘তোমরা আমার শুকুরগুজারী করো এবং তোমাদের পিতা-মাতার শুকুরগুজারী করো’।” তখন তিনি বললেন, ‘হুযূর! বেয়াদবী মাফ করবেন- আমাকে আজকে একটু ছুটি দিন।’ উনি ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসলেন। এসে উনি উনার মাকে বললেন- ‘এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি দুটি হক্বের কথা বলেছেন। এক. মহান আল্লাহ পাক উনার শুকুরগুজারী করা। দুই. পিতা-মাতার শুকুরগুজারী করা।’ তিনি বললেন যে, ‘আমার পক্ষে দুটি হক্ব এক সাথে আদায় করা সম্ভব না। হয় আপনি আমাকে মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য ছেড়ে দেন, না হয় আপনার জন্য ক্ববূল করে নেন।’ উনার মা ছিলেন নেককার, আল্লাহওয়ালী। তিনি বললেন, ‘ঠিক আছে; তাহলে আপনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য আমি ছেড়ে দিলাম।’ সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!)
এই প্রসঙ্গে হযরত বাইযীদ বোস্তামী রহমত্ল্লুাহি আলাইহি উনার অনেক ওয়াকেয়া রয়েছে। উনার বিছাল শরীফের পর এক বুযূর্গ ব্যক্তি দেখতে পেলেন, হযরত বাইযীদ বোস্তামী রহমত্ল্লুাহি আলাইহি উনি জান্নাতে উড়তেছেন। উড়ে উড়ে ভ্রমন করতেছেন। সেই বুযূর্গ ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে হযরত সুলত্বানুল আরিফীন রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি এতো মর্যাদা কিভাবে লাভ করলেন? আপনি উড়ে উড়ে সারা জান্নাত ঘুরে বেড়াচ্ছেন!’ তিনি বলেছেন যে, ‘আসলে আমি এটা আমার সম্মানিত মাতা উনার দু‘আর বদৌলতে লাভ করেছি। সম্মানিত মাতা উনার জন্য আমি অনেক কষ্ট স্বীকার করেছি। আমার সম্মানিত মাতা তিনি আমার জন্য দু‘আ করেছেন। সেই দু‘আর বদৌলতে আমাকে এতো মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।’ সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
আমার বলার বিষয় হচ্ছে- এখন কেউ যদি হাক্বীক্বী ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতে চায়, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং উনাদের সংশ্লিষ্ট যাঁরা- উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছানা-ছিফত মুবারক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তা’যীম-তাকরীম মুবারক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার বিষয়টা ব্যাপকভাবে করতে হবে। তাহলে তার পক্ষে হাক্বীক্বী ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা সহজ এবং সম্ভব হবে। কারণ সাধারণ পিতা-মাতার জন্য যদি শুকুরগুজারী করতে হয়, তাহলে উনাদের জন্য কি করতে হবে? মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِــىْ اُمَامَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ رَجُلًا قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا حَقُّ الْوَالِدَيْنِ عَلـٰى وَلَدِهِـمَا قَالَ هُـمَا جَـنَّـتُكَ وَنَارُكَ
হযরত আবূ উমামাতা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
مَا حَقُّ الْوَالِدَيْنِ عَلـٰى وَلَدِهِـمَا
একজন সন্তানের উপর পিতা-মাতার প্রতি কী হক্ব রয়েছে? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি বললেন,
هُـمَا جَـنَّـتُكَ وَنَارُكَ
আপনার পিতা-মাতা আপনার বেহেস্ত এবং আপনার দোজখ। অর্থাৎ পিতা-মাতা উনাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পারলে, সম্মানিত জান্নাত মুবারক লাভ করতে পারবেন। আর সন্তুষ্ট করতে না পারলে জাহান্নামী হতে হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
এটা কিন্তু সাধারণ পিতা-মাতার কথা বলা হচ্ছে। এটা ফিকির করতে হবে। সাধারণ ব্যক্তির সাধারণ পিতা-মাতাকে খুশি করতে পারলে, সে জান্নাত পাবে। অসন্তুষ্ট করলে, জাহান্নাম। না‘ঊযুবিল্লাহ! (যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের জন্য কি করতে হবে?)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ ইবনে মারইয়াম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মতো এরকম সংযোগ আর কারোই হয়নি
১৬ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তোমাদের জন্য ফরয হচ্ছে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুহব্বত মুবারক করা
১৬ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি আমাকে ইখতিয়ার মুবারক দিয়েছেন, আমি যাকে বেহেশত দিবো, সে-ই বেহেশতে যাবে
১৫ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বেমেছাল শান মুবারক
১৫ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারত করার ফযীলত, তারতীব ও আদব (২)
১৫ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত সালাম মুবারক জানিয়েছেন
১৪ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না
১৪ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
এক নজরে বাবুল মুরাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক
১৩ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে সম্মানিত কুরবানী মুবারক দেয়া প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরযে আইন (৪)
১৩ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূত-পবিত্র নূরুল মুজাসসাম মুবারক অর্থাৎ ¬জিসিম মুবারক উনার ছায়া ছিল না সংক্রান্ত বিষয়ে শরীয়ত উনার সঠিক ফায়সালা
১৩ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে সম্মানিত কুরবানী মুবারক দেয়া প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরযে আইন (৩)
১২ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার কাইফিয়াত অর্থাৎ ধরণ মুবারক সম্পর্কে বর্ণনা মুবারক
১২ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)