মহিলাদের পাতা
মহিলাদের জন্য হাত, পা ও চেহারা আবৃত করে ঘর থেকে বের হওয়া ফরজ। খোলা রেখে বের হওয়া হারাম, জায়েয বলা কুফরী (৬)
, ০৭ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৭ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রি:, ২১ চৈত্র, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
স্বাধীনা মেয়েদেরকে প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় চেহারা ঢাকার নির্দেশ মুবারক দিয়ে যিনি খ¦ালিক, যিনি মালিক, যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِأَزواجِكَ وَبَناتِكَ وَنِساءِ المُؤمِنينَ يُدنينَ عَلَيهِنَّ مِن جَلابيبِهِنَّ ذلِكَ أَدنى أَن يُعرَفنَ فَلا يُؤذَينَ -
অর্থ: মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি মহাসম্মানিতা মহাপবিত্রা হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, মহাসম্মানিতা মহাপবিত্রা আপনার হযরত বানাত আলাইহিন্নাস সালাম এবং মুমিনগণ উনাদের আহলিয়াগণকে বলে দিন, উনারা যেন উনাদের চাদরের কিয়দংশ মাথার উপর থেকে টেনে নিয়ে চেহারাসহ সমস্ত শরীর পর্দায় আবৃত করে নেয়। এর দ্বারা চিনা যাবে যে, উনারা স¦াধীনা মুমিনা নারী, ফলে উনাদেরকে উত্যেক্ত করা বা কষ্ট দেয়া হবে না। (পবিত্র সূরা আহযাব : আয়াত শরীফ-৫৯)
উল্লিখিত আয়াত শরীফ উনার তাফসীর ও ব্যাখ্যা (৪):
তাফসীরে ত্ববারী শরীফ- ১৯তম খ-, ১৮১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে-
لَا يَتَشَبَّهْنَ بِالْإِمَاءِ فِي لِبَاسِهِنَّ إِذَا هُنَّ خَرَجْنَ مِنْ بُيُوتِهِنَّ لِحَاجَتِهِنَّ فَكَشَفْنَ شُعُورَهُنَّ وَوُجُوهَهُنَّ وَلَكِنْ لِيُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ لِئَلَّا يَعْرِضَ لَهُنَّ فَاسِقٌ-
অর্থ: স্বাধীনা মহিলাগণ উনারা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় দাসীদের পোশাকের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে বের হবেন না। দাসীরা মাথা ও চেহারা খোলা রেখে বের হবে, কিন্তু স্বাধীনা মহিলাগণ উনারা মাথা ও চেহারায় চাদর টেনে আবৃত করে বের হবেন। যাতে ফাসিকদের সামনে উনাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না পায়।
তাফসীরে মাযহারী ৬ষ্ঠ খ-, ৪৯৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে-
ويدل على عدم جواز إبداء المرأة وجهها قوله تعالى يا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْواجِكَ وَبَناتِكَ وَنِساءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَ .....الاية- قال حَضْرَتْ ابن عباس رَضِيَ اللّٰهُ تعالى عَنْهُ و حَضْرَتْ ابو عبيدة رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ أمرت نساء المؤمنين ان يغطين رءوسهن ووجوههن بالجلابيب الا عينا واحدا يعلم انهن حرائر.... (مسئلة) هذه الاية مختص حكمها بالحرائر من النساء اجماعا-
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র ক্বওল শরীফ يا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْواجِكَ وَبَناتِكَ وَنِساءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَ উনার দ্বারা স্বাধীনা মেয়েগণ উনাদের জন্য ঘর থেকে বের হওয়ার সময় উনাদের চেহারা খোলা রেখে বের হওয়া, না জায়িয প্রমাণিত। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়া’লা আনহু এবং হযরত আবূ উবাইদাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন, উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে স্বাধীনা মেয়েলোক উনাদের প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় পথ চলার জন্য একটি চক্ষু খোলা রেখে চাদর দিয়ে উনাদের মাথা ও চেহারা ঢেকে বের হওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। যাতে উনাদেরকে স্বাধীনা মেয়েলোক হিসেবে চেনা যায়। (মাসয়ালাহ) এ ব্যাপারে ইজমা’ হয়েছে যে, উক্ত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র আয়াত শরীফ খানা স্বাধীনা মেয়েলোকগণ উনাদের জন্য প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়ার বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে নির্দেশনা জারীকরে নাযিল হয়েছে।
একটি চক্ষু খোলা রাখার অর্থ:
একটি চক্ষু খোলার অর্থ এই নয় যে, উনাদের একটি চক্ষু দেখা যেতো, বরং উনারা এমনভাবে চাদর পরিধান করতেন যে, উনাদের শরীরের গঠনতো দেখাই যেতো না, এমনকি উনাদের চক্ষু কাছ থেকে মোটেও দেখা যেতো না বরং لِيُدْنِينَ অর্থাৎ উনারা চাদরকে মাথা থেকে লম্বা করে চেহারার উপর দিয়ে এমনভাবে ঝুলিয়ে রাখতেন, যাতে পথ চলার জন্য মাত্র কয়েক হাত দেখা যায়। মোট কথা সামনের দিকে সম্পূর্ণরূপে সোজা উনারা দেখতেন না, বরং পথ চলার জন্য যতটুকু প্রয়োজন ছিলো ততটুকুই উনারা এক চক্ষু দ্বারা নিচের দিকে দেখে দেখে পথ চলতেন।
সুতরাং যারা তাদের দু’চক্ষুকে স্পষ্ট করে পর-পুরুষকে দেখিয়ে চলে, আজকের যুগের ঐ সমস্ত বেপর্দা মহিলাদের মতো সমস্ত শরীর বোরকা দ্বারা আবৃত করে সরাসরি দু’ চক্ষু খোলা রাখতেন না। নাঊযুবিল্লাহ! আর এটা সম্পূর্ণ বে-পর্দা ও বেহায়ার অন্তর্ভূক্ত।
মূলত জিলবাব বা চাদরের মাধ্যমে প্রথম যুগে পর্দা করা হতো, এটা একটু কষ্ট হওয়ায় মহিলারা অরো ভালোরূপে সহজভাবে পর্দা করার জন্য পরবর্তী যুগে ঐ চাদরের পরিবর্তে বোরকা নামক হিজাবটি চালু করে। এবং চক্ষুকে ঢেকে রাখার জন্য নেকাব ব্যবহার করার হুকুমটি স্বয়ং হুযূও পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানাতেই প্রচলন ছিলো, ফলে বোরকার মাথার সাথে ঐ নিকাব সংযুক্ত করে মহিলাদের জন্য সহজে পর্দা করার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু কিছু নফসের পূজারীরা তাদের নফসের খোরাক পূরণের জন্য পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মিথ্যা ব্যাখ্যা করে মুখ খোলা রেখে ঘর থেকে বের হওয়াকে জায়িয বলে তাদের খাহেশাতে নফসানীকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। নাঊযুবিল্লাহ!
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত উম্মে সুরাইকা দাওসিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্বাবস্থায় আজল বা তাড়াহুড়া না করে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












