মহিলাদের সম্মানিত সুন্নতী লিবাস মুবারক, অলংকার ও সাজ-সজ্জা-৮
, ২৫শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৯ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০৩ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
পবিত্র দ্বীন ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা, যার মধ্যে পুরুষ-মহিলা উভয়ের জন্যই পবিত্র সুন্নতী লিবাস-পোশাকসহ মানব জীবনের সকল সমস্যার সুস্পষ্ট সমাধান দেয়া হয়েছে। অনেক আমল-ই মানুষ ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় করে থাকে। উক্ত আমল সমূহের মধ্যে কিছু আমল রয়েছে মূলতঃ পবিত্র সুন্নতী নেক-আমল মুবারক। কিন্তু পবিত্র সুন্নত মুবারক পালনের নিয়তে উক্ত আমলগুলি আদায় না করার কারণে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের রিদ্বামন্দি-সন্তুষ্টি থেকেও বঞ্চিত হয়। ঐ সকল আমল মুবারক উনার মধ্যে একটি হলো মহিলাদের সম্মানিত সুন্নতী লিবাস মুবারক, অলঙ্কার ও সাজ-সজ্জাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ।
উক্ত বিষয়সমূহ সম্পর্কে নিম্নে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হলো-
পূর্বে প্রকাশিতের পর...
মহিলাদের পাতলা ক্বমীছের নীচে غِلالَة (সেমিজ) পরিধান করা সুন্নত:
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো উল্লেখ রয়েছে-
عَنْ حَضْرَت أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ رَضِىَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْه أَنَّ أَبَاهُ أُسَامَةَ رَضِىَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْه قَالَ كَسَانِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُبْطِيَّةً كَثِيفَةً كَانَتْ مِمَّا أهداها دحْيَة الْكَلْبِيّ رَضِىَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْه فسكوتها امْرَأَتِي فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم مَالك لَمْ تَلْبَسِ الْقُبْطِيَّةَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَسَوْتُهَا امْرَأَتِي فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُرْهَا فَلْتَجْعَلْ تَحْتَهَا غِلالَةً إِنِّي أَخَافُ أَنْ يَصِفَ حَجْمَ عِظَامِهَا
অর্থ: হযরত উসামা ইবনে যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়া’লা আনহুমা তিনি উনার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, উনার পিতা বলেন, মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে মিশরের তৈরী পাতলা কাপড়ের একটি ক্বমীছ মুবারক হাদিয়া করলেন। যে ক্বমীছ মুবারক হযরত দিহ্ইয়াতুল ক্বলবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়া’লা আনহু তিনি উনাকে হাদিয়া মুবারক করেছিলেন। হযরত উসামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়া’লা আনহু তিনি বলেন, আমি উক্ত ক্বমীছ মুবারক আমার আহলিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়া’লা আনহা উনাকে পরিধান করার জন্য দিয়ে দিলাম। অতঃপর, মহাসম্মানিত হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিছুদিন পর আমাকে বললেন, হে উসামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়া’লা আনহু! আপনি কেন মিশরের তৈরী ক্বমীছটি পরিধান করেন না। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উক্ত ক্বমীছ মুবারকটি আমি আমার আহলিয়া উনাকে পরিধান করতে দিয়ে দিয়েছি। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে বললেন, আপনি উনাকে নির্দেশ প্রদান করুন, যাতে উক্ত ক্বমীছের নীচে একটি গিলালাহ (সেমিজ) পরিধান করে নেন। কেননা, আমার আশংকা হয় উক্ত পাতলা ক্বমীছ পরিধান করলে উনার শরীর বা দেহের গঠন প্রকাশ পেতে পারে। (মুসনাদে আহমাদ, মুসনাদে বাযযার-৭/৩০, মুসনাদে ইবনে আবী শাইবা-১/ ১২৬, নাইলুল আওতার -২/১৩৫, ইবনু সায়া’দ, ত্ববারানী শরীফ, বাইহাক্বী শরীফ, আদ্ব-দ্বিয়াউ ফীল মুখতার)
উল্লেখ্য যে, উপরোল্লেখিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে-
مُرْهَا فَلْتَجْعَلْ تَحْتَهَا غِلالَةً إِنِّي أَخَافُ أَنْ يَصِفَ حَجْمَ عِظَامِهَا-
অর্থ: আপনি উনাকে নির্দেশ প্রদান করুন, যাতে উক্ত ক্বমীছের নীচে একটি গিলালাহ (সেমিজ) পরিধান করে নেন। কেননা, আমার আশংকা হয় উক্ত পাতলা ক্বমীছ পরিধান করলে উনার শরীর বা দেহের গঠন প্রকাশ পেতে পারে।
غِلالَة (গিলালা) শব্দটির অর্থ প্রসঙ্গে “আস-সুমুওউর রুহীল আ’যম ওয়াল জামালুল ফানা ফীল বালাগাতিন নবুওওয়াহ” নামক কিতাবের ৬৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে-
الغِلالة: شعار يُلْبَسُ تَحْتَ الدِّثَارِ مِثْلَ الْقَمِيْصِ تَحْتَ الثِّيَابِ الظَّاهِرة-
অর্থ: গিলালা বলা হয় শরীরের সাথে লাগোয়া এমন পোশাক, যা বাহ্যিক ক্বমীছের অনুরূপ পোশাকের নীচে পরিধান করা হয়।
তাফসীরে নিশাপূরী ১ম খ- ৩৩৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে-
غلالة وهي شعار يلبس تحت الثوب وتحت الدرع أيضا-
অর্থ: গিলালা বলা হয় শরীরের সাথে লাগোয়া এমন পোশাক, যা মহিলাদের ক্বমীছ বা অন্য কোন পোশাকের নীচে পরিধান করা হয়।
আল-মাজাযাতুন নাবাভিয়্যাহ ১৩০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে-
غلالة- وإنّما سمّيت غلائل لانغلالها بين الدروع والأجساد
অর্থ: গিলালাকে গিলালা হিসেবে নামকরণ করার কারণ হলো- মহিলাদের পরিহিত ক্বমীছ ও শরীরের মাঝখানে এটা আবরণ বা পর্দা সৃষ্টি করে দেয়।
উপরোল্লেখিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ক্বমীছ যদি এমন পাতলা হয় যার দ্বারা দেহের গঠন অনুভব করা যায়। তাহলে উক্ত ক্বমীছের নীচে গিলালাহ বা সেমিজ পরিধান করা সুন্নত মুবারক। (চলবে)
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












