মালিকুত তামাম, ক্বাসিমুন নিআম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক উনার বরকত ও ফযীলত (৭)
, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাত্হ মুবারক থাকা দুনিয়া এবং দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু রয়েছে তা অর্জনের চেয়েও অধিক মুহাব্বতের:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ سِيْرِيْنَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ قُلْتُ لِحَضْرَتْ عَبِيْدَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهَا عِنْدَنَا مِنْ شَعَرِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَصَبْنَاهُ مِنْ قِبَلِ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَوْ مِنْ قِبَلِ أَهْلِ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَقَالَ لِأَنْ تَكُوْنَ عِنْدِىْ شَعَرَةٌ مِنْهُ أَحَبُّ اِلَىَّ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا
অর্থ: “হযরত ইবনে সীরীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আবীদাহ রহমতুল্লাহি আলাইহা উনাকে বললাম, আমাদের নিকট নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাত্হ মুবারক (চুল মুবারক) রয়েছে। যা আমরা হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে অথবা উনার সম্মানিত পরিবার উনাদের থেকে পেয়েছি। অতঃপর হযরত ইবনে সীরীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার নিকট নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাত্হ মুবারক থাকা দুনিয়া এবং দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু রয়েছে তা অর্জনের চেয়েও অধিক মুহাব্বতের। ” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, হাদীছ শরীফ নং-১৭০)
এ প্রসঙ্গে কিতাবে একটি ওয়াক্বেয়া বর্ণিত রয়েছে- “বলখ শহরে একজন ব্যবসায়ী ছিলেন, যিনি অনেক সম্পদশালী ছিলেন। দুনিয়াবী ধন সম্পদের পাশাপাশি উনার নিকট এক অমূল্য রতœ মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ৩ খানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাত্হ মুবারক সংরক্ষিত ছিলো। ঐ ব্যবসায়ীর দুইজন পুত্র সন্তান ছিলো। ব্যবসায়ীর ইন্তেকালের পর দুই ছেলে তাদের পিতার সমস্ত সম্পদ নিজেদের মধ্যে সমান সমান করে বণ্টন করে নিলো। কিন্তু তাদের মধ্যে একটা সমস্যা সৃষ্টি হয়, সমস্যাটি হলো, তাদের পিতার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক ছিলো ৩ খানা। যা সমান ভাগ করা যাচ্ছিলো না। সুতরাং বড় ভাই ছোট ভাইকে বললো, একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক তুমি রাখো, আরেকখানা আমি রাখবো। আর তৃতীয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক আমরা দুইভাগ করে নিবো। এভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারকও সমান বণ্টন হয়ে যাবে।
ছোট ভাইয়ের অন্তরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অগাধ মুহাব্বত মুবারক থাকার কারণে তিনি অস্থির হয়ে বললেন, আমি কখনো এটা মেনে নিবো না যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক দুই টুকরো করা হবে। বড় ভাই যার দুনিয়াবী সম্পদের লালসা ছিলো, সে বললো, যদি তোমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক উনার প্রতি এতই মুহাব্বত থাকে নিজের ভাগের সমস্ত সম্পদ আমাকে দিয়ে দাও আর ৩ খানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক তুমি নিয়ে নাও।
ছোট ভাই তৎক্ষণাৎ প্রস্তাব গ্রহণ করে নিজের ভাগের সমস্ত সম্পত্তির বিনিময়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক নিয়ে নিলেন। এরপর ছোট ভাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক নিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করলেন। উনার কাছে যদিও দুনিয়াবী সম্পদ ছিলো না কিন্তু উনার নিকট অমূল্য সম্পদ বিদ্যমান ছিলো।
তিনি প্রতিদিন অত্যন্ত মুহাব্বত ও আদব সহকারে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক উনার যিয়ারত করতেন এবং অধিকহারে পবিত্র দুরুদ শরীফ পাঠ করতেন। একসময় তিনি একটা ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করলেন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক উনার বরকতে উনার সম্পদ দিনের পর দিন বৃদ্ধি পেতে থাকলো। অন্যদিকে বড় ভাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক উনার বিনিময়ে যে সম্পদ গ্রহণ করেছিলো তা কমতে শুরু করলো। এভাবেই সময় অতিবাহিত হতে লাগলো। একদিন ঐ ছোট ভাই যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক উনার সম্মানার্থে দুনিয়ার ধন-দৌলতকে অবহেলা করেছিলেন তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেন।
উনার ইন্তিকালের পর ঐ যুগের এক বুযূর্গ ব্যক্তি স্বপ্নে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দিদার মুবারক লাভ করলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঐ বুযূর্গ ব্যক্তিকে ইরশাদ মুবারক করলেন, “আপনি লোকদেরকে বলে দিন, কারো কোন কিছুর প্রয়োজন হলে সে যেন ঐ ব্যক্তির কবরে যায় আর তাদের যা কিছু প্রয়োজন তার জন্য দোয়া করে। তাহলে তার প্রয়োজন পূরণ করা হবে। ” সুবহানাল্লাহ!
এভাবে ঐ মহান আশিক্বে রসূল উনার মাযার শরীফ বড় মহত্বপূর্ণ হয়ে গেলো। লোকজন দলে দলে সেখানে আসা যাওয়া শুরু করলো এবং নিজেদের নেক উদ্দেশ্য পূরণ করতে লাগলো।
শুধু এতটুকুই নয়! ঐ মহান আশিক্বে রসূল উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক উনার প্রতি আদব প্রদর্শনের এমন ফলাফল হলো যে, বড় বড় লোকেরা উনার মাযার শরীফের পাশ দিয়ে অতিত্রুম করার সময় তাদের বাহন থেকে নেমে যেতো এবং আদব রক্ষা করে মাযার শরীফের পাশ দিয়ে পায়ে হেঁটে ঐ স্থান অতিক্রম করতো। ” সুবহানাল্লাহ! (হাব্বুন নাসীম আলা নাফহাতিস ছলাতি ওয়াত তাসলীম ৩৩ পৃষ্ঠা, যিকরে জামীল ৬৫ পৃষ্ঠা)
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র মহাসম্মানিত ৪ খানা বিশেষ খুছুছিয়ত মুবারক:
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের জন্য আক্বীক্বাহ্ মুবারক করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ উনাকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ বিষয়ে আপত্তি ও তার খন্ডনমূলক জবাব (১২)
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারী উনাদের প্রতি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক প্রকাশ
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল কায়িনাত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা ও তা’যীমার্থে ক্বিয়াম শরীফ করা সুন্নত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ
২৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ উনাকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ বিষয়ে আপত্তি ও তার খন্ডনমূলক জবাব (১১)
২৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ যিয়ারত ও ঈমান মুবারক লাভ:
২৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ উনাকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ বিষয়ে আপত্তি ও তার খন্ডনমূলক জবাব (১০)
২৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারী উনাদেরকে সম্মানিত রহমত, বরকত, সাকীনাহ্ এবং বিশেষ দীদার মুবারক দান:
২৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ উনাকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ বিষয়ে আপত্তি ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৯)
২৫ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)