নছীহতে কায়িম মাকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
মু’মিনের চেষ্টা প্রতিদানযোগ্যই হয়ে থাকে
২০শে মুহররম, ১৪৪২ হিজরী (ইয়াওমুল খমীস)
, ১০ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৯ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
مَّنْ كَانَ يُرِيْدُ الْعَاجِلَةَ عَجَّلْنَا لَهٗ فِـيْـهَا مَا نَشَاءُ لِمَنْ نُّرِيْدُ ثُـمَّ جَعَلْنَا لَهٗ جَهَنَّمَ يَصْلَاهَا مَذْمُوْمًا مَّدْحُوْرًا ﴿১৮﴾ وَمَنْ أَرَادَ الْاٰخِرَةَ وَسَعٰى لَـهَا سَعْيَهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولٰئِكَ كَانَ سَعْـيُـهُمْ مَّشْكُوْرًا ﴿১৯﴾ كُلًّا نُّـمِدُّ هٰؤُلَاءِ وَهٰـؤُلَاءِ مِنْ عَطَاءِ رَبِّكَ ۚ وَمَا كَانَ عَطَاءُ رَبِّكَ مَـحْظُوْرًا ﴿২০﴾ سورة الإسراء
যে ব্যক্তি দুনিয়া চায় আমি তাকে দুনিয়াতেই যতটুকু ইচ্ছা ততটুকু দিয়ে দেই। তারপর তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাই বিতাড়িত এবং নিন্দিত অবস্থায়। নাঊযুবিল্লাহ! আর যে মু’মিন আখিরাত চায় এবং আখিরাতের জন্য কোশেশ করে তার চেষ্টা প্রতিদানযোগ্যই হয়ে থাকে। আমি আপনার রব উনার দান থেকে এদেরকে এবং ওদেরকে (অর্থাৎ যারা দ্বীনদার বা ঈমানদার এবং যারা দুনিয়াদার বা কাফির) সবাইকে সাহায্য করি। আপনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার দান বারণকৃত নয়। [সূরা ইসরা শরীফঃ ২০]
আয়াত শরীফে বলা হয়েছে, যে দুনিয়া তালাশ করবে মহান আল্লাহ পাক তার জন্য যতটুকু রিযিক নির্ধারণ করেছেন ততটুকুই দুনিয়াতে দিয়ে দিবেন। তারপর তাকে লাঞ্ছিত, অপমানিত, নিন্দিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। আর যে ঈমানদার পরকাল তালাশ করবে, পরকালের জন্য কোশেশ করবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে তার চেষ্টা অনুযায়ী প্রতিদান দিবেন। সুবহানাল্লাহ! ইহকালেও দিবেন, পরকালেও দিবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি যারা দ্বীনদার বা ঈমানদার এবং যারা দুনিয়াদার বা কাফির সবাইকে দুনিয়াতে দান করেন। এজন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জানিয়েছেন, দুনিয়া কী? দুনিয়ার সাথে উনার সম্পর্ক কেমন?
عَنْ عَبْدِ اللّٰهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَامَ عَلٰى حَصِيْـرٍ فَـقَامَ وَقَدْ أَثَّـرَ فِـيْ جَسَدِهٖ فَـقَالَ اِبْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ أَمَرْتَـنَا أَنْ نَــبْسُطَ لَكَ وَنَـعْمَلَ فَـقَالَ مَا لـِيْ وَلِلدُّنْـيَا ؟ وَمَا أَنَا وَالدُّنْــيَا إِلَّا كَرَاكِبٍ اِسْتَظَلَّ تَـحْتَ شَجَرَةٍ ثُـمَّ رَاحَ وَتَــرَكَهَا. (رواه أحمد والترمذي وابن ماجه)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদিন চাটাইয়ের উপর ঘুমিয়ে ছিলেন। তারপর ঘুম থেকে উঠলেন, উনার জিসিম মুবারকের মধ্যে চাটাইয়ের দাগ পড়েছিল। হযরত ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যদি আপনি আমাদেরকে আপনার জন্য বিছানা মুবারক বিছিয়ে দেয়ার নির্দেশ মুবারক দান করতেন, আমরা বিছিয়ে দিতাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, দুনিয়ার সাথে আমার কি সম্পর্ক? আমার ও দুনিয়ার সম্পর্ক একজন আরোহীর ন্যায়। যে গাছের নিচে ছায়ায় বিশ্রাম নিয়েছে এবং সে স্থান ত্যাগ করেছে।
[আহমদ, তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ শরীফ]
একজন আরোহী যেরূপ গাছের ছায়ায় বসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তারপর সেখান থেকে চলে যায়। অনুরূপ মানুষ দুনিয়ায় আসে অল্প কিছু সময়ের জন্য যাতে আমলে ছলেহ করে মহান আল্লাহ পাক উনার কছে ফিরে যেতে পারে। মহান আল্লাহ পাক তিনি চাইলে সবাইকে একই উম্মত করতে পারতেন। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা ভিন্ন। কারণ তিনি মানুষের হায়াত, মউত সৃষ্টি করেছেন কার আমল উত্তম এ বিষয়টি পরীক্ষা করার জন্য। আর উত্তম আমল হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার মুহাব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত হাছিল করা। এই উত্তম আমলের মাধ্যমে কে উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করলো আর কে সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করা থেকে বিরত থাকলো, দুনিয়া তালাশে ব্যস্ত থাকলো এই বিষয়টিই পরীক্ষা করা হবে। যারা দুনিয়া নিয়ে মশগুল থাকবে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর যারা পরকালের ভালাই বা কল্যাণের জন্য কোশেশ করবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের কোশেশের প্রতিদান অবশ্যই দান করবেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদেরকে দুনিয়া পরিত্যাগ করে পরকালের কামিয়াবীর জন্য বেশি বেশি কোশেশ করার তাওফীক্ব দান করেন। (আমীন)
ইনশাআল্লাহ চলবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্বাবস্থায় আজল বা তাড়াহুড়া না করে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাশরের ময়দানে যে ৫টি প্রশ্নের উত্তর প্রত্যেককেই দিতে হবে
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












