রবীবাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার জীবনী মুবারক
, ২৮ শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩২ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ২৯ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ১৫ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর থেকে সুদীর্ঘ সময়ব্যাপী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খেদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
একজন মমতাময়ী মা উনার একমাত্র সন্তানকে যেমন মুহব্বত করেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তার চেয়েও লক্ষ কোটি গুণ বেশি মুহব্বত মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!
স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম তিনি উনার সম্মানিত খেদমত মুবারক-এ সন্তুষ্ট মুবারক হয়ে ইরশাদ মুবারক করেছেন-
رَحِـمَكِ اللهُ يَا اُمِّىْ كُنْتِ اُمِّىْ بَعْدَ اُمِّىْ وتُشْبِعِيْـنِـىْ وَتَعْرَيْنَ وتُكْسِيْـنِـىْ وَتَـمْنَعِيْـنَ نَفْسَكِ طَيِّبًا وَتُطْعِمِيْـنِـىْ تُرِيْدِيْنَ بِذٰلِكَ وَجْهَ اللهِ وَالدَّارَ الاٰخِرَةَ
অর্থ: “হে আমার মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার প্রতি সম্মানিত রহমত মুবারক বর্ষণ করুন। আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার পরে আপনি ছিলেন আমার মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম। আপনি আমাকে পরিতৃপ্ত করতেন- আপনি না পরে আমাকে পরাতেন এবং ভালো কিছু নিজে না খেয়ে আমাকে খাওয়াতেন। এই কাজগুলো করার মাধ্যমে আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক এবং পরকাল লাভের আশা করতেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারনী ১৮/৮২)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার ২০ বছর পূর্বে ২৭শে রজবুল হারাম ইয়াওমুল জুমু‘আহ্ শরীফ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাহ্ বিনতে আসাদ আলাইহাস সালাম) তিনি মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবরক প্রকাশ করেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক উনার বেমেছাল আন্জাম:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এমনভাবে রক্ষণাবেক্ষণ মুবারক করতেন, যেমন একজন মানুষের বুক তার অন্তরকে রক্ষা করে এবং মানুষের চোখের পাপড়ি যেমন চোখ দুটিকে রক্ষা করে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি থাকা অবস্থাতেই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খেদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া শুরু করেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সময় যখন নিকটবর্তী হন, তখন তিনি উনার সম্মানিত আওলাদ খাজা আবূ তালিব উনাকে ডেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান মুবারক বর্ণনা করেন। এবং খাজা আবূ ত্বালিব এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনাদের উভয়কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যাপারে বিশেষ যতœবান হওয়ার জন্য তাকীদ দেন।
উনারা দুজনই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খেদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত মনোযোগী হন।
খাবারের সময় হলে খাজা আবূ ত্বালিব তিনি সবসময়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য অপেক্ষা করতেন। তিনি তাশরীফ মুবারক নেয়ার পর সর্বপ্রথম তিনি খাবার মুবারক গ্রহণ করতেন, অতঃপর উনারা সবাই খাবার গ্রহণ করতেন। উনারা দেখতে পান যে, খাজা আবূ ত্বালিব উনার পরিবারের লোকজন যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে খাবার খান, তখন উনাদের খাবারে অনেক বরকত হয়। সুবহানাল্লাহ! খাজা আবূ ত্বালিব উনার অনেক আওলাদ ছিলেন, উনারা যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে খাবার মুবারক গ্রহণ করতেন, তখন সবাই পেট ভরে তৃপ্তি সহকারে খাওয়ার পরেও খাবার অতিরিক্ত থেকে যেতো। সুবহানাল্লাহ! এক পেয়ালা দুধ থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রথমে পান করতেন, তারপর উনারা সবাই তৃপ্তি সহকারে পান করতেন। যদিও স্বাভাবিকভাবে উনাদের একজনই সেই পূর্ণ পেয়ালাটি শেষ করে ফেলতে পারতেন। এজন্য খাজা আবূ ত্বালিব তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলতেন,
اِنَّكَ لَـمُبَارَكٌ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আপনি অত্যন্ত বরকতময়। ” সুবহানাল্লাহ! (‘উয়ূনুল আছার ১/৫১, খ¦ছাইছুল কুবরা ১/১৩৯, আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ্ ১/১৮৯, আস সীরাতুন নুবুবিয়্যাহ্ লি ইবনে কাছীর ১/২৪২, দালাইলুন নুবুওওয়াহ্ লি আবী না‘ঈম আল ইছবাহানী ১/১২২, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ২/১৩৫ ইত্যাদি)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সবসময় নিজের সন্তানের থেকেও অধিক মুহব্বত মুবারক করতেন এবং সার্বিকভাবে উনার খেদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে ‘উম্মী বা’দা উম্মী’ বলে সম্বোধন মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে দায়িমীভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার জন্য নির্দেশ মুবারক দিতেন। সুবহানাল্লাহ!
একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি হুজরা শরীফ থেকে বের হয়েছেন, তখন খাজা আবূ ত্বালিব তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে ডেকে পেলেন না। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আমি উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে যেতে দেখেছি। খাজা আবূ ত্বালিব তিনি খুঁজতে খুঁজতে শি‘আবে আবী ত্বালিব-এ গিয়ে দেখতে পান যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছলাত মুবারক আদায় করছেন আর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে পাহারা দিচ্ছেন। ” সুবহানাল্লাহ!
-আল্লামা ইবনে আকরাম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












