১০০ টি চমৎকার ঘটনা
শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় ঈমানে
ঘটনা-৬২
, ০৯ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৪ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৮ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সময় এক বৃদ্ধা মহিলা ছিল। সে ছিল উনার মুখালিফ অর্থাৎ উনার বিরুদ্ধবাদী। সে একদিন উনার এক ছাত্রকে বললো, ‘তোমাদের ইমাম সাহেব তো খুব বড় ইমাম। তিনি তো অনেক মাসয়ালা-মাসায়িলের জওয়াব দিয়ে থাকেন। আমার একটা মাসয়ালা রয়েছে, এই মাসয়ালার জওয়াব কি তিনি দিতে পারবেন?’ সেই ছাত্র বললো, ‘হে বৃদ্ধা মহিলা! আপনি উনাকে জিজ্ঞাসা করে দেখতে পারেন। আশা করি তিনি আপনার মাসয়ালার জওয়াব দিতে পারবেন।’
বৃদ্ধা মহিলা হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলো, ‘হে হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি! আমার একটা ছাগল আছে। ছাগলের থুতনীর মধ্যে কিছু পশম রয়েছে। আর আপনার থুতনীতেও দাড়ি রয়েছে। এখন আমার প্রশ্ন হলো, আপনার দাড়িটা শ্রেষ্ঠ, না আমার ছাগলের থুতনীর পশমটা শ্রেষ্ঠ?’ হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, ‘হে বৃদ্ধা মহিলা! তুমি তিনদিন পরে এসো, তোমার মাসয়ালার জওয়াব দেয়া হবে।’
বৃদ্ধা মহিলা চলে গেলো। মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরতে এর তিন দিন পর হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইন্তিকাল করলেন। যখন বৃদ্ধা মহিলা এই খবর শুনলো, সে রটনা করতে লাগলো, ‘দেখ তোমাদের ইমাম সাহেব আমার মাসয়ালার জওয়াব দেয়ার ভয়ে ইন্তেকাল করেছেন।’ নাঊযুবিল্লাহ! এই কথা বলতে বলতে সে চৌরাস্তার মধ্যে এসে থামলো। একই সময়ে হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কাফন পরানো লাশ মুবারকও খাটিয়ায় করে ঐ রাস্তার মাথায় এসে পৌঁছলো।
ঠিক সেই মুহূর্তে মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক যাহির হলো! হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি খাটিয়া থেকে বললেন, ‘হে বৃদ্ধা মহিলা! তুমি তোমার মাসয়ালার জওয়াব নিয়ে যাও। তোমার সেই ছাগলের থুতনীর পশম থেকে আমার দাড়ি লক্ষ কোটিগুণ শ্রেষ্ঠ। আমি তখন তোমার প্রশ্নের জওয়াব দেইনি। কারণ, যদিও মানুষ আমাকে অনেক বড় বলে, ৫৫ বছরে আমি ৫৫ বার পবিত্র হজ্জ পালন করেছি, দু’রাকায়াত নামাযের মধ্যে আমি সম্পূর্ণ কুরআন শরীফ খতম করেছি, অনেক ইবাদত বন্দেগী করেছি, অনেক নেক আমল করেছি; কিন্তু আমার একটা ভয় ছিল। আমি ঈমানের সাথে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে পারবো কিনা? আমি যদি ঈমানের সাথে যেতে না পারি, তাহলে তোমার ছাগলের থুতনীর পশমের অনেক কদর হবে। কারণ তাকে মিটিয়ে দেয়া হবে, তার কোনো শাস্তি হবে না। কিন্তু আমি যদি নাজাত না পাই, আমাকে জাহান্নামে শাস্তি দেয়া হবে। এখন আমি যেহেতু ঈমান নিয়ে পরকালে আসতে পেরেছি, কাজেই আমার দাড়ি মুবারকের ফযীলত অনেক বেশি।’ সুবহানাল্লাহ!
ইনশাআল্লাহ চলবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্বাবস্থায় আজল বা তাড়াহুড়া না করে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাশরের ময়দানে যে ৫টি প্রশ্নের উত্তর প্রত্যেককেই দিতে হবে
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












