সম্মানিত ইসলামী শরীয়তে রজম বা ছঙ্গেছারের বিধান (২)
, ১৫ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৫ হাদি আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১৪ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রি:, ১ বৈশাখ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عِمْرَانَ بْنِ حُصِينٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـى عَنْهُ، أَنَّ امْرَأَةً مِنْ جُهَيْنَةَ أَتَتْ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم وَهِيَ حُبْلَى مِنَ الزِّنَا فَقَالَتْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم! أَصَبْتُ حَدًّا، فَأَقِمْهُ عَلَيَّ، فَدَعَا نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم وَلِيَّهَا. فَقَالَ: ্রأَحْسِنْ إِلَيْهَا فَإِذَا وَضَعَتْ فَائْتِنِي بِهَاগ্ধ فَفَعَلَ، فَأَمَرَ بِهَا فَشُكَّتْ عَلَيْهَا ثِيَابُهَا، ثُمَّ أَمَرَ بِهَا فَرُجِمَتْ، ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهَا، فَقَالَ حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ: أَتُصَلِّي عَلَيْهَا يَا نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم، وَقَدْ زَنَتْ? فَقَالَ: ্রلَقَدْ تَابَتْ تَوْبَةً لَوْ قُسِّمَتْ بَيْنَ سَبْعِينَ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ لَوَسِعَتْهُمْ، وَهَلْ وَجَدَتْ أَفَضَلَ مِنْ أَنْ جَادَتْ بِنَفْسِهَا لِلَّهِগ্ধ
অর্থ: “হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জুহাইনাহ গোত্রের এক নারী ব্যাভিচার দ্বারা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে হাজির হয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি হদ্দের উপযুক্ত হয়েছি, আপনি আমার উপর ব্যাভিচারের হদ্দ ক্বায়িম করুন। প্রস্তরাঘাতে হত্যা করে আমার প্রায়শ্চিত্ব বা তাওবার ব্যবস্থা করে দিন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার ওয়ালী তথা খাদিমকে ডাকলেন এবং বললেন, তার সাথে ভালো ব্যবহার করুন, সন্তান জন্মগ্রহণ করলে আমার নিকট তাকে নিয়ে আসুন। উনার খাদিম তাই করলেন। (সন্তান জন্ম গ্রহণ করার পর তাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দরবার শরীফে নিয়ে আসলেন)। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার পরনের কাপড় শক্ত করে বেঁধে দিতে আদেশ মুবারক দিলেন, তারপর উনার আদেশক্রমে উনাকে রজম করা হলো। তারপর উনার পবিত্র জানাযা নামায পড়ালেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনিতো ব্যভিচার করেছেন তবু আপনি উনার পবিত্র জানাযা নামায মুবারক পড়লেন? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, তিনিতো এমন তওবা করেছেন যে, যদি তা পবিত্র মদীনাবাসীর ৭০ জনের মধ্যে বন্টন করে দেয়া হয় তবে তাদের জন্য উনার এ তওবা যথেষ্ট হয়ে যাবে। হে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিম সালাম! আপনি কি উনার চেয়ে উৎকৃষ্ট কোন ব্যক্তি পেয়েছেন? যে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য জানকে বিসর্জন করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, নাসায়ী শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ ইবনে মাজাহ শরীফ, আহমদ শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـى عَنْهُ، أَنَّ حَضْرَتْ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ، أَشْرَفَ عَلَيْهِمْ فَسَمِعَهُمْ وَهُمْ، يَذْكُرُونَ الْقَتْلَ فَقَالَ إِنَّهُمْ لَيَتَوَاعَدُونِي بِالْقَتْلِ فَلِمَ يَقْتُلُونِي وَقَدْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَقُولُ" لا يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ إِلاَّ فِي إِحْدَى ثَلاَثٍ رَجُلٌ زَنَى وَهُوَ مُحْصَنٌ فَرُجِمَ أَوْ رَجُلٌ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ رَجُلٌ ارْتَدَّ بَعْدَ إِسْلاَمِهِ". فَوَاللَّهِ مَا زَنَيْتُ فِي جَاهِلِيَّةٍ وَلاَ فِي إِسْلاَمٍ وَلاَ قَتَلْتُ نَفْسًا مُسْلِمَةً وَلاَ ارْتَدَدْتُ مُنْذُ أَسْلَمْتُ.
অর্থ: “হযরত উমামাহ ইবনে সাহল ইবনে হুনাইফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি ছাদের উপর থেকে বিদ্রোহীদের প্রতি তাকালেন। উনাকে শহীদ করার ব্যাপারে আলোচনা শুনে তিনি বললেন, তারা আমাকে শহীদ করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। কেন তারা আমাকে শহীদ করবে? আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, তিনটি কারণের কোন একটি বিদ্যমান না থাকলে কোন মুসলমানকে শহীদ বা হত্যা করা বৈধ নয়। ১. বিবাহিত ব্যক্তি ব্যাভিচার করলে, তাকে রজম বা ছঙ্গেছার করা ২. অথবা যে ব্যক্তি কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে ৩. অথবা যে ব্যক্তি সম্মানিত ইসলাম গ্রহণের পর মুরতাদ হয়ে যায়। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমি জাহিলী যুগেও কখনো ব্যাভিচারে লিপ্ত হইনি এবং সম্মানিত ইসলামের যুগেও না। সুবহানাল্লাহ! আমি কোন মুসলমানকে হত্যা করিনি এবং আমি সম্মানিত ইসলাম গ্রহণ করার পর থেকে মুরতাদও হইনি। ” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, নাসায়ী শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, আহমদ শরীফ, বাইহাক্বী শরীফ) (ইনশাল্লাহ চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












