সাইয়্যিদাতুনা হযরত নূরুর রবিয়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ বুখারী শরীফে বর্ণিত জাল হাদীছের খন্ডন (৩)
, ২৪ শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৮ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ২৫ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ১১ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
ফাদাক বাগানের ওয়ারিশত্ব বিষয়ে হাদীছ শরীফগ্রন্থ অনুসন্ধান করে এখন পর্যন্ত ৩৬টি সনদে বর্ণিত রেওয়ায়েত পাওয়া যায়। পাঁচ জন বিশিষ্ট ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে এ বর্ণনাগুলো এসেছে। ৩৬ টি বর্ণনার মধ্যে ১১ টি বর্ণনা হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু তোফায়েল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আমর ইবনে ওয়াসিলা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত উম্মে হানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত।
উপরোক্ত ৪ জন ছাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বর্ণনাসমূহে আপত্তিকর কথাটি নেই। বাকি ২৫ টি বর্ণনার অধঃস্তন রাবী হচ্ছে ইমাম যুহরী এবং উনার ছাত্র মা’মার রহমতুল্লাহি আলাইহি। অবশিষ্ট ২৫ টি বর্ণনার ৯ টিতেও আপত্তিকর কথাটি নাই। বাকি থাকলো ১৬ টি বর্ণনা। এই ১৬ টি সনদের প্রত্যেকটিই যুহরী থেকে বর্ণিত। এবং এখানেই আপত্তিকর কথাটির উপস্থিতি রয়েছে। অর্থাৎ উপরোক্ত আপত্তিকর কথাটি যুহরীর নিজস্ব বক্তব্য, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার কোন সম্পৃক্ততা নাই, যা আমরা দেখেছি বর্ণনায় قَالَ বা পুরুষবাচক বিশেষণ এসেছে।
কেউ বলতে পারে ইমাম যুহরীতো তাবেয়ী ছিলেন। উনার বক্তব্য কেন দলীল হবে না? এর জবাব উছূলে হাদীছ শরীফ উনার কিতাবে উল্লেখ করা আছে,
وَمَا جَاءَ عَنِ التَّابِعِيِّ مَقْطُوْعٌ وَهُوَ لَيْسَ بِحُجَّةٍ
অর্থ: “হযরত তাবেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে যে বর্ণনা এসেছে তা মাকতু, আর তা দলীলযোগ্য নয়। ” (মিযানুল আখবার ২২ পৃষ্ঠা)
আমভাবে মাকতু বর্ণনা দিয়ে আক্বীদা বা শরীয়ত উনার দলীল সাবেত হয়না। তবে যেসকল তাবেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ফতওয়া হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের যুগে মশহুর হয়েছিলো বা প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলো সেগুলো ব্যতিত।
আর যুহরীর আপত্তিকর বর্ণনা কোথাও মশহুর হওয়াতো দূরের কথা বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফের সাথে সাংঘর্ষিক। সবোর্পরি যুহরী থেকে কোন বর্ণনা যার উপরের দিকে কোন মুত্তাছিল সনদ নেই বা যে বর্ণনা মুরসাল সেটা দলীল হিসাবে উপস্থাপনেরই যোগ্য না বলে ইমামগণ একমত হয়েছেন। যুহরীর মুরসাল সম্পর্কে রেজাল শাস্ত্রের ইমামগণ বলেন,
فَـعَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ اَلْقَطَّانِ قَالَ : مُرْسَلُ الزُّهْرِىِّ شَرٌّ مِّنْ مُرْسَلِ غَيْرِهٖ
অর্থ: হযরত ইয়াহিয়া ইবনে সাঈদ আল কাত্তান রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ইমাম যুহরীর মুরসাল অন্যদের মুরসালের চাইতে নিম্নমানের। (সিয়ারু আলামীন নুবালা ৫/৩৩৮)
অন্যত্র উল্লেখ আছে,
وَقَالَ يَحْيَى بْنُ مَعِيْنٍ: مَرَاسِيْلُ الزُّهْرِيِّ لَيْسَ بِشَيْءٍ
অর্থ: হযরত ইয়াহিয়া ইবনে মঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ইমাম যুহরীর মুরসাল কোন কিছুই না। (আল মারাসিল লি ইবনে আবি হাতিম ৩ পৃষ্ঠা)
অন্যত্র আরো উল্লেখ আছে,
وَقَالَ الشَّافِعِيُّ: إِرْسَالُ الزُهْرِيِّ عِنْدَنَا لَيْسَ بِشَيْءٍ
অর্থ: ইমাম হযরত শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ইমাম যুহরীর মুরসাল আমাদের কাছে কিছুই না। [অথার্ৎ ইমাম যুহরীর মুরসাল কোন দলীল হওয়ার উপযুক্তই না] (সিয়ারু আলামীন নুবালা ৫/৩৩৯)
অতএব, বিশুদ্ধ আক্বীদা উনার উছূল, উছূলে হাদীছ, আসমাউর রেজাল দ্বারা বুখারী শরীফের উপরোক্ত বর্ণনাটি জাল, বাতিল, সম্মানিত আক্বীদার সাথে সাংঘর্ষিক বলে প্রমাণিত হলো।
রাজারবাগ শরীফের সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামে আ’যম, হাকীমুল হাদীছ, হুজ্জাতুল ইসলাম, জামিউল ইলিম ওয়াল হিকাম, জামিউল আলক্বাব, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি সকল বদ আক্বীদা থেকে দুনিয়াবাসীকে হিফাজত করছেন। সেই সাথে বিশুদ্ধতম আক্বীদা হাদীয়া করছেন। দুনিয়ার সকলের জন্য ফরয হচ্ছে নিজের ঈমান আমল হিফাজত করতে উনার পবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারকে নিজেকে বিলীন করে দেয়া। মহান আল্লাহ পাক তিনি সবাইকে তাওফীক দান করুন। আমীন।
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ থেকে সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












