সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করেছেন
, ১৮ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৮ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২৭ মে, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মাঝে কথোপকথন:
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আরো বললেন, হে হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! লটারী কি জায়িয? তিনি বললেন, না লটারী জায়িয নয়।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, এটাই আপনার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ। আমরা সে অনুযায়ী আমল করে থাকি। ফতওয়া দেই। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সফরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে সাথে নেয়ার ব্যাপারে লটারী মুবারক করতেন। সেই লটারী মুবারককে আমরা জায়িয ফতওয়া দিয়ে থাকি। যদি আমরা নিজের ক্বিয়াসকে প্রাধান্য দিতাম তাহলে ঐ লটারী মুবারককেও নাজায়িয ফতওয়া দিতাম। কিন্তু আমরা তা করি না।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বললেন, হে আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মোজার উপর মাসেহ করার ক্ষেত্রে মোজার উপরিভাগে মাসেহ করতে হয়, নাকি মোজার নীচের দিক দিয়ে?
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, উপরিভাগে। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, এটা আপনার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার শিক্ষা। আমরা সেভাবে আমল করি ও ফতওয়া দিয়ে থাকি। যদি আমরা সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার উপর নিজের ক্বিয়াস বা ইজতিহাদকে প্রাধান্য দিতাম তাহলে বলতাম, মোজার নিচ দিক থেকে মাসেহ করতে হবে। কিন্তু আমরা তা বলি না।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, হে আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তুলনামূলকভাবে ইস্তিঞ্জা বেশি নাপাক, নাকি মনি?
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, ইস্তিঞ্জা। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আমরা যদি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার উপর নিজের ক্বিয়াসকে প্রাধান্য দিতাম তাহলে বলতাম, ইস্তিঞ্জা করার পর গোসল করতে হবে। আর মনি বের হওয়ার কারণে অযু করতে হবে। কিন্তু আমরা তা বলি না।
হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হিকমতপূর্ণ জাওয়াব শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজ আসন মুবারক থেকে উঠে দাঁড়ালেন এবং হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে মুয়ানাকা-আলিঙ্গন করলেন আর উনার কপাল মুবারকে বুছা দিয়ে বললেন, আপনার ইলিম মুবারকই আপনাকে শত্রু বানিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ আপনার সূক্ষ্ম সমঝের কারণে মানুষ আপনার শত্রুতায় মেতে উঠেছে। নাউযুবিল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রশংসা করতঃ অন্যত্র বলেছেন-
مَا رَاَيْتُ جَوَابًا اَفَحَمُ مِنْهُ
অর্থ: আমি উনার চেয়ে অধিক বিশুদ্ধ ও স্পষ্ট জাওয়াব দিতে আর কাউকে দেখিনি। সুবহানাল্লাহ! (তাযকিরাতুল খাওয়াছ-৩০২, ইমাম আবূ হানিফা হাদীছ শাস্ত্রের প্রধান ইমাম-৩০২)
হযরত ইমাম আবূ হামযা সুমালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমরা একদিন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারকে ছিলাম। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও উনার ছোহবত মুবারকে উপস্থিত হলেন। কিছু মাসয়ালা-মাসায়িল জিজ্ঞাসা করলেন। সাইয়্যিদুনা ইমামুল খমিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তার জাওয়াব দিলেন। যখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি চলে গেলেন তখন তিনি বললেন-
مَا اَحْسَنَ هَدْيَهٗ وَسَـمْتَهٗ وَمَا اَكْثَرَ فِقْهَهٗ
অর্থ: এ ব্যক্তির হিদায়েত কতই না উত্তম, উনার চলার পথ কতই না সুন্দর। উনার জ্ঞানের গভীরতা কতই না গভীর! সুবহানাল্লাহ! (আল ইনতিকা ফী ফাযায়িলে আইম্মাতিস সালাসাতিল ফুকাহা-১৯৩, ইমাম আবূ হানীফা হাদিস শাস্ত্রের প্রধান ইমাম-৩০৬, মানাকিবুল ইমামিল আ’যম আবী হানীফা-৩৩) (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে পুরুষ ও মহিলা ব্যতীত তৃতীয় কোনো লিঙ্গের অস্থিত্ব নেই
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কথিত স্বজন-পরিজন হলেও কাফিরদেরকে বন্ধু বা অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৭)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কাফির-মুশরিকদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা জায়েয নেই
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের বিশাল সৈন্যবাহিনী এবং উনাদের শান-জৌলুশ, শক্তি-সামর্থ্য, রণকৌশল, রণসজ্জা, সুশৃঙ্খলতা, কাতারবদ্ধতা অপরাজেয় বীরত্বপূর্ণ মনোবল মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৩১)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)