সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল,
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (১০)
, ১১ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৩ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১২ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ২৫ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
রিয়াজত-মাশাক্কাত:
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মা’রিফাত-মুহব্বত, সন্তুষ্টি, রেযামন্দি, তায়াল্লুক, নিছবত মুবারক হাছিলের ক্ষেত্রে রিয়াজত-মাশাক্কাতের গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা হচ্ছে, কোন কাজ করার নিয়ত এবং সেই অনুযায়ী কোশেশ (চেষ্টা) করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি সে কাজটি সুসম্পন্ন করার তৌফিক দেন, মদদ করেন। ফলে কাজটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্য সহজ ও শান্তিদায়ক হয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَيَهْدِىْ اِلَيْهِ مَنْ يُّنِيْبُ
অর্থ: যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে রুজু হন তথা রিয়াজত-মাশাক্কাত করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে হিদায়েত বা সঠিক পথের সন্ধান দেন। ” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالَّذِيْنَ جَاهَدُوْا فِيْنَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا
অর্থ: যারা আমার পথে তথা মা’রিফাত, মুহব্বত, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি, তায়াল্লুক, নিছবত মুবারক লাভের জন্য মুজাহাদা তথা রিয়াজত-মাশাক্কাত করে আমি অবশ্যই অবশ্যই তাদেরকে আমার সেই পথের সন্ধান দিয়ে থাকি। ” (পবিত্র সূরা আনকাবুত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৯)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَجَاهِدُوْا فِىْ سَبِيْلِهِ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ
অর্থ: তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় মুজাহাদা তথা রিয়াজত-মাশাক্কাত করো, অবশ্যই কামিয়াব হবে। ” (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৫)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ اللهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّى يُغَيِّرُوْا مَا بِاَنْفُسِهِمْ
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না; যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। ” (পবিত্র সূরা রা’দ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র বলেছেন-
وَاَنْ لَّيْسَ لِلْاِنْسَانِ اِلَّا مَا سَعَى
অর্থ: আর মানুষ যা চেষ্টা-কোশেশ করে তাই পায়। ” (পবিত্র সূরা নজম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৯)
তবে একথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত মুবারক ব্যতীত কোন কিছুই সম্ভব নয়। কাজেই যারা মনে করে, শুধু চেষ্টা কোশেশ বা রিয়াজত-মাশাক্কাত দ্বারাই সব হাছিল হবে তারা কামিয়াবী লাভ করতে পারে না। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যর্থতার গ্লানি বহন করতে থাকে। পক্ষান্তরে যারা ভাগ্যের উপর দোষারোপ করে রিয়াজত-মাশাক্কাত বা চেষ্টা-কোশেশ ছেড়ে দিয়ে উচ্চাকাঙ্খা করে তারাও জীবনের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে না। আমীরুল মু’মিনীন, বাবুল ইলম ওয়াল হিকাম, ইমামুল আউওয়াল হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি তাদের সম্পর্কে বলেন, যারা বিনা পরিশ্রমে কামিয়াবীর শীর্ষ চূড়ায় পৌঁছার আশা করে তারা যেন অসম্ভবের পথে সারাটি জীবন ব্যয় করলো। ”
কাজেই, মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত মুবারক দ্বারা সবকিছুই হয়- এ বিশ্বাস দৃঢ়তার সাথে পোষণ করতঃ রিয়াজত-মাশাক্কাত তথা চেষ্টা-কোশেশ করা উচিত। কারণ উক্ত আক্বীদা পোষণ করতঃ রিয়াজত-মাশাক্কাত করলে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রহমত ও ইহসান লাভ হবে। আর তখনই তাকমীলে পৌঁছা সহজ ও সম্ভব হয়।
এই রহমত ও ইহসান রয়েছে নিজের শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার ছোহবতে, খিদমতে, তায়াল্লুক-নিসবতে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاِنَّ اللهَ لَـمَعَ الْـمُحْسِنِيْنَ
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি মুহসিন তথা ওলীআল্লাহগণ উনাদের সাথে রয়েছেন। ” (পবিত্র সূরা আনকাবুত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৯)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ رَحْمَتَ اللهِ قَرِيْبٌ مِّنَ الْـمُحْسِنِيْنَ
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত মুহসিন তথা ওলীআল্লাহগণ উনাদের ছোহবতে রয়েছে। ” (পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
সাইয়্যিদুল আউলিয়া, গাউসুল আ’যম, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুবারক জীবনীতেও ব্যতিক্রম হয়নি। বরং অনাগত সকলের জন্য একটি উত্তম আদর্শ হিসেবে পরিগণিত। তিনি বাগদাদ শরীফ-এ ইলমে ফিক্বাহ শিক্ষা করার পাশাপাশি ইলমে তাছাউফ হাছিলের জন্য শায়খুল মাশায়িখ হযরত আবূ সাঈদ মুবারক মাখযুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট বাইয়াত হন। নিয়মিত ছোহবত ইখতিয়ার করেন। তাকমীলে পৌঁছার জন্য কঠিন রিয়াজত-মাশাক্কাতে লিপ্ত হন। (অসমাপ্ত)
-আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












