সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল,
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (১৫)
, ০২ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০২ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ০১ মে, ২০২৫ খ্রি:, ১৮ বৈশাখ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নূরুল বারাকাত মুবারক অর্থাৎ থুথু মুবারক দান:
সাইয়্যিদুল আউলিয়া, গাউসুল আ’যম, মাহবূবে সুবহানী, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একবার মিম্বর শরীফে দাঁড়িয়ে বললেন, “একবার সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার যিয়ারত মুবারক হয়। তিনি আমাকে বললেন-
لـما تتكلم
অর্থাৎ আপনি ওয়াজ শরীফ করেন না কেন? আমি আরয করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আজমী (অনারবী)। বাগদাদ শরীফ উনার আরবী ভাষাভাষি, জ্ঞানী-গুনী উনাদের সামনে কি করে ওয়াজ শরীফ করার সাহস করতে পারি। তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে মুখ খুলতে বললেন। আমি মুখ খুললাম। তিনি পবিত্র কালাম পাক উনার এই পবিত্র আয়াত শরীফখানা পাঠ করলেন-
ادع الى سبيل ربك بالحكمة والـموعظة الحسنة
অর্থাৎ, “হিকমতের সাথে এবং উত্তম নছীহত মুবারক দ্বারা আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় আহ্বান করুন। ” অতঃপর আমার মুখে সাতবার উনার পবিত্র নূরুল বারাকাত মুবারক অর্থাৎ থুথু মুবারক দান করলেন। আর নির্দেশ মুবারক দিয়ে বললেন, “লোকদের কাছে মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশনাবলী পৌঁছাতে থাকুন। ” আমি সে দিন যোহরের নামাযের পর ওয়াজ শরীফ করতে শুরু করলাম। অনেক লোক জমায়েত হলো। তবে আমার শরীর কাঁপছিলো। সেই সময় ইমামুল আউওয়াল, আমীরুল মু’মিনীন, বাবুল ইলিম ওয়াল হিকাম, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সামনে আমাকে উপস্থিত দেখলাম। তিনি আমাকে বললেন, আপনার মুখ খুলুন। আমি মুখ খুললে তিনি আমার মুখে ছয়বার থুথু মুবারক দিলেন। আমি আরয করলাম, সাতবার কেন দিলেন না? তিনি বললেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মান প্রদর্শনার্থে একবার কম দিলাম। একথা মুবারক বলার পর উনাকে আর দেখলাম না। তিনি আমার দৃষ্টি থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। (যুবতাতুল আছার, গাউসুল ওরা-৩৯)
শায়েখ হযরত আবুল হাসান আলী বিন হায়তী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন- যখন গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মিম্বর শরীফ উনার উপর বসতেন এবং আলহামদুলিল্লাহ বলতেন, তখন ধরাপৃষ্ঠের সমস্ত ওলীআল্লাহ উনারা নিশ্চুপ হয়ে যেতেন। উনারা মজলিসে থাকুন বা মজলিস থেকে অনেক দূরে থাকুন সম্মান প্রদর্শনপূর্বক নিরবতা অবলম্বন করতেন। তিনি বারবার যখন আলহামদুলিল্লাহ বলে নিশ্চুপ হতেন, তখন ওলীআল্লাহ উনারা ও হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারা মজলিসে সমবেত হয়ে যেতেন। হাজার হাজার ওলীআল্লাহ ও হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা এ রকম অবস্থায় মজলিসে উপস্থিত থাকেন, যাদেরকে বাহ্যিক চোখে দেখা যেতো না। ওই সব অদৃশ্য শ্রোতাদের সংখ্যা দৃশ্যমান শ্রোতাদের থেকে কয়েকগুণ বেশি হতো। সেই মজলিসে উপস্থিত শ্রোতাদের উপর মহান আল্লাহ পাক তিনি রহমতের বৃষ্টি বর্ষন করেন। যা বর্ণনাতীত।
শায়েখ হযরত আবু হাফস ওমর বিন হুসাইন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন, আমাকে গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন, হে হযরত ওমর রহমতুল্লাহি আলাইহি! আমার মজলিস থেকে দূরে থাকেন কেন? এখানে বেলায়েতের পোশাক বণ্টন হতে থাকে। সে ব্যক্তি বড় দুর্ভাগা, যে এ মজলিস থেকে বঞ্চিত থাকে। অনেক দিন যাবত আমি মজলিসে উপস্থিত থাকতে লাগলাম। একদিন মজলিসে বসাবস্থায় আমার ঘুম এসে গেলো। আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আসমান থেকে লাল ও সবুজ পোশাক অবতীর্ণ হচ্ছে এবং মজলিসে উপস্থিত সবাইকে পরানো হচ্ছে। আমি ভীত হয়ে জেগে উঠলাম এবং চিৎকার করতে লাগলাম। এমতাবস্থায় গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, বেটা, চুপ থাকেন, শুনাটা দেখার মতো। (অসমাপ্ত)
-আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৮)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












