ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুসরণ করার গুরুত্ব ও ফযীলত (২৪)
, ২১ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩০ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ২৮ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন-
فَاسْتَبِقُوا الْخَيْرَاتِ
“নেক কাজে তোমরা প্রতিযোগিতা করো।
যেমন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারা প্রতিযোগিতা করেছেন, হযরত ইমাম-মুজতাহিদগণ উনারাও করেছেন, ঠিক সেরকম করতে হবে। এ প্রসঙ্গে একটা ওয়াকেয়া বলা হয়ে থাকে যে, পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার প্রতি হাক্বীক্বী আমল করতে হলে, কি জরুরত। হযরত হাতেম আসেম রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি খুব বড় বুযুর্গ ছিলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী ছিলেন। উনার একটা ওয়াকেয়া উল্লেখ করা হয়। হযরত শাক্বীক্ব বলখী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পীর ছাহেব ছিলেন, যিনি ইমামুশ্ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত এবং সেই যামানার বিশ্ব বিখ্যাত আলেম ছিলেন, যিনি পবিত্র তাওরাত, পবিত্র যাবূর, পবিত্র ইনযীল, পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ অর্থাৎ দ্বীন ইসলাম এবং পূর্ববর্তী ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানে খুব পারদর্শী ছিলেন। হযরত শাক্বীক্ব বলখী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ হযরত হাতেম আসেম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনিও বড় আলেম। একদিন এই হযরত শাক্বীক্ব বলখী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার মুরীদ হযরত হাতেম আসেম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে বললেন, হে হাতেম আসেম রহমতুল্লাহি আলাইহি! আজকে কত বৎসর যাবত আপনি আমার ছোহ্বতে আছেন? উনি বললেন- হুযূর! তেত্রিশ বৎসর, তেত্রিশ বৎসর যাবত আপনার ছোহ্বতে আছি। এই তেত্রিশ বৎসরে আপনি কি শিখলেন? হুযূর! তেমন কিছু শিখতে পারিনি, মাত্র কয়েকটা জিনিস শিখেছি। কয়টা জিনিস শিখেছেন? আটটা জিনিস শিখেছি। খুব মনযোগ দিয়ে শুনবেন- তাহলে বুঝতে পারবেন যে, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার প্রতি আমল করতে গেলে কি দরকার এবং কতটুকু থাকা সম্ভব ও কিভাবে তা সম্ভব। মাত্র আটটা মাসয়ালা শিখেছেন? হযরত শাক্বীক্ব বলখী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, হে হাতেম আসেম রহমতুল্লাহি আলাইহি! আমার জীবনের বলতে গেলে সম্পূর্ণটা সময় শেষ হয়ে গেছে, তেত্রিশ বৎসর যদি চলে গিয়ে থাকে, তাহলে আমার আর রইলো কি? আর আপনি মাত্র এই কয়েকটা জিনিস শিখেছেন। উনি বললেন, হুযূর! আপনি তো শিক্ষা দিয়েছেন আমাকে সত্য কথা বলার জন্য। অর্থাৎ
اَلصِّدْقُ يُنْجِى وَالْكِذْبُ يُهْلِكُ
মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, সত্য জীবন দান করে, মিথ্যা ধ্বংস করে দেয়।
যদি তাই হয়ে থাকে, আমি মিথ্যা কি করে বলবো? আমি তো সত্য কথাই বলেছি। আমি সত্য কথাই বলেছি যে, আমি আটটা জিনিস শিখেছি। তখন হযরত হাতেম আসেম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে জিজ্ঞেস করা হলো। হযরত শাক্বীক্ব বলখী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, সেই আটটা মাসয়ালা আপনি কি শিখেছেন তা বলেনতো দেখি। কি শিখেছেন? উনি বললেন, হুযূর! আমিতো আপনার ছোহ্বতে থাকি, যিকির-আযকার করি, তাসবীহ্-তাহলীল পাঠ করি, আপনার হুকুম-আহকাম তামিল করি এবং সাথে সাথে আমি পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ ফিকির করি, গবেষণা করি। ফিকির করতে করতে আমি দেখলাম এবং মানুষের মধ্যে আমি লক্ষ্য করলাম যে, মানুষ যখন ইন্তেকাল করে তখন অনেক ধন-সম্পদ থাকে, নানান বিষয়-সম্পত্তি থাকে, অথর্, বাড়ী-গাড়ী অনেক কিছু তার থাকে। কিন্তু মৃত্যুর সময় সে কিছুই নিতে পারে না। মৃত্যুর সময় কিছুই নিতে পারে না। তখন আমি ফিকির করলাম, মহান আল্লাহ পাক উনার একটা পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দিকে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
فَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَّرَهُ. وَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَّرَهُ
“যে একবিন্দু নেকী করবে, সে তার বদলা পাবে। আর এক বিন্দু পাপ যদি করে, সেটারও বদলা তাকে গ্রহণ করতে হবে।
আমি ফিকির করে দেখলাম- মানুষ তো গাড়ী-বাড়ী, ধন-দৌলত, অর্থ-সম্পদ, টাকা-পয়সা কিছুই নিতে পারে না, আল-আওলাদও তার সাথে যায় না। কিছুই তার সাথে যায় না, শুধু তার আমলনামাটাই যায়। আমলনামা অর্থাৎ নেক আমলটা তার কাজে আসবে। তখন আমি ফিকির করে নেক কাজ বেশী বেশী করতে লাগলাম। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৮)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












