ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
দুনিয়ার বুরায়ী বা খারাবী (১৭)
, ২৪ শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৮ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ২৫ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ১১ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মানুষের আশা-আকাঙ্খা কতটুকু? মানুষ কতটুকু চায়? মানুষ কতটুকু মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে আরজু করে?
এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, অনেক আগেকার ঘটনা। এক লোক, জিনিসপত্রের দাম যখন খুব কম ছিল, সে বাজারে গিয়েছে, কিছু মাল-সামানা খরীদ করবে। সে জরুরত মনে করে বাজার থেকে এক কলসী তেল খরীদ করলো। এক কলসী তেল সে খরীদ করলো আট আনা দিয়ে।
খরীদ করে সেই লোক মনে করলো যে, এক কলসী তেল তো হাতে করে আনা কঠিন। একটা মিন্তী বা কুলির দরকার রয়েছে। সে মিন্তী বা কুলি তালাশ করতে লাগল।
তালাশ করতে করতে একটা মিন্তী পাওয়া গেল। তাকে সে জিজ্ঞেস করলো যে, তুমি আমার এই তেলের কলসীটা আমার বাড়ীতে পৌঁছিয়ে দিতে পারবে কি?
সেই মিন্তী বললো যে, হ্যাঁ-এটাই আমার কাজ, আমি এটাই করে থাকি, এটাই আমার পেশা। যদি আপনি আমাকে দেন, আমি অবশ্যই পৌঁছিয়ে দিব।
তখন সে তেলের মালিক বললো, কত দিতে হবে তোমাকে?
বেশি না, এক পয়সা দিলেই চলবে।
সে রাজী হয়ে গেল। মিন্তীর মাথায় সে তেলের কলসীটা তুলে দিল।
রাস্তায় চলতে থাকলো তারা পর্যায়ক্রমে। বৃষ্টি হওয়ার কারণে রাস্তা ছিল খুব স্যাঁতস্যাঁতে অর্থাৎ কাদাযুক্ত ছিল রাস্তা। খুব পিচ্ছিল ছিল, সহজে একটা লোক পিছলিয়ে যেতে পারে, এমন রাস্তা ছিল। সতর্কতার সাথে তারা চলতে থাকলো।
কিন্তু যে লোকটা সরিষার তেলের কলসী মাথায় নিয়েছে। (খুব মনযোগ দিয়ে শুনবেন, তাহলে বুঝতে সহজ হবে) সে মাথায় নেয়ার পরে ফিকির করতে থাকলো- আজকে সকালে আমি যে পয়সা পেয়েছি, আমার সংসার চলার জন্য এটাই যথেষ্ট আজকের জন্য, আজকে আর পয়সা লাগবে না। আজকের সংসারের খরচ আমার উঠে গেছে। এখন আমি যে এক পয়সা পাব, এটা দিয়ে আমি কি করবো? সে ফিকির করতে লাগলো। এই পয়সা দিয়ে কি করা যেতে পারে?
ফিকির করতে করতে তার মনের মধ্যে উদিত হলো যে, তাহলে এক কাজ করা যেতে পারে, কিছু ডিম কিনা যেতে পারে। যেহেতু এ পয়সা অতিরিক্ত। ডিম খরীদ করে এটা রাখবো। ডিম থেকে অনেক বাচ্চা হবে, মুরগী হবে। মুরগী বৃদ্ধি হতে হতে অনেক হয়ে যাবে।
এটা কিন্তু সেই যে কুলি সে রাস্তায় হাঁটছে খুব সতর্কতার সাথে, স্যাঁতস্যাঁতে কাদাযুক্ত রাস্তা, খুব পিচ্ছিল, রাস্তা দিয়ে হাঁটছে এবং সে ফিকির করছে।
সেই ডিমগুলি খরীদ করার পরে অনেক বাচ্চা হবে। বাচ্চা থেকে একদিন অনেক মুরগী হবে। বড় বড় মুরগী হবে। এতবেশি হবে, যেটা আমার পক্ষে লালন-পালন করা কষ্ট হবে। দেখাশুনা করা কষ্ট হবে, তখন কি করতে হবে? মুরগীগুলি বিক্রি করে ছাগল কিনতে হবে। তখন আস্তে আস্তে সেই ছাগলগুলি থেকে আরো অনেক ছাগল হবে, বাচ্চা হবে। এত বেশি হয়ে যাবে, যেটা আমার জন্য লালন-পালন করা কষ্ট হবে। তখন সেইগুলি আমি বিক্রি করে গাভী গরু কিনব। গাভী আস্তে আস্তে অনেক হয়ে যাবে। অনেক গাভী হয়ে যাবে। তখন গাভীগুলিও আমার জন্য লালন-পালন করা কষ্ট হবে। তখন আমি সেটা বিক্রি করে দিব।
সমস্ত গরু-ছাগল যা রয়েছে, তা বিক্রি করে দিলে আমার অনেক টাকা হবে। আর এই শহরের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় বাজার। এই বাজারের মধ্যে একটা দোকানের দাম হচ্ছে এক লক্ষ টাকা। এক লক্ষ টাকা একটা বড় দোকানের দাম। এক লক্ষ টাকা দিয়ে আমি একটা দোকান কিনব। একটা দোকান কিনলে বেচা-কিনা অনেক হবে। আমি অনেক ধনী হয়ে যাব। এই শহরের মধ্যে যারা বিশিষ্ট ধনী, তাদের মধ্যে আমি একজন হবো।
যেহেতু আমি এখনও বিয়ে-শাদী করিনি। তখন এই শহরের যিনি প্রধান রয়েছেন, তার মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিব। সে তো সহজে রাজী হয়ে যাবে। আমার এত সম্পদ, এত টাকা-পয়সা দেখে, সে রাজী হয়ে যাবে। রাজী হয়ে সে তার মেয়ে আমার কাছে বিয়ে দিবে। বিয়ে করব, কিছুদিন পর আমার একটা সন্তান হবে।
সে চলছে আর ফিকির করছে। যখন সন্তান হবে, কথা বলবে, কথা শিখবে। কথা শিখলে সে আমাকে বলবে একদিন খাওয়ার জন্য। তখন সেই মিন্তী ফিকির করছে। সন্তান যখন আমাকে বলবে খাওয়ার জন্য, তখন আমি অভিমান করব। অভিমান করে বলবো খাবো না। রাস্তাতো খুব কাঁদাযুক্ত ছিল। সে যখন খাবো না বলে তার পা সামনের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে, তার মাথায় কলসী ভরা সরিষার তেল, ওজন রয়েছে অনেক। আর এক পা সে তুলে ফেলেছে, এক পা পিছলিয়ে সে পড়ে গেছে। এটা যখন সে বললো, তার ছেলে যখন তাকে খাদ্যের জন্য বলবে, বারবার তাকে বলতে থাকবে খাওয়ার জন্য, অনুরোধ করতে থাকবে, তখন সে অভিমান করে বলবে, আমি খাবো না বলে পা দিয়ে সে সামনের দিকে ধাক্কা দিবে। এই বলে সে পা তুলে ফেললো। সে পিছলিয়ে পড়ে গেল। পড়ে যাওয়ার কারণে তার মাথায় যেহেতু তেলের কলসী ছিল, কলসীটা মাটিতে পড়ে গেল।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (৩)
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হক্ব তালাশীদের জন্য সার্বিক দিক-নির্দেশনা রয়েছে পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ উনার মধ্যেই
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (২)
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছাহিবে কা’বা কাওসাইনে আও আদনা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আযীমুশ শান মি’রাজ শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক (১০)
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (১)
০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)