সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (৩)
, ১৬ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২০ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ১৭ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ০৩ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ভবিষ্যৎ বাণী:
একবার নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, ইমামুল হুমাম, সিবতু রসূল আর রবি’, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম এবং ইমামুল হুমাম, সিবতু রসূল আর খমিস, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাদেরকে নিয়ে হুজরা শরীফ-এর বাইরে বের হলেন। একটি খেজুর গাছের নিচে বসলেন। উনাদের দুজনকে দুপার্শ্ব মুবারকে বসালেন। উনাদেরকে নানা ধরনের ওয়াকিয়া (ঘটনা) শুনালেন। মূল্যবান উপদেশ ও শিক্ষা দান করলেন।
কথা প্রসঙ্গে তিনি প্রথমে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাকে জিজ্ঞেস করলেন, “হে ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম! আমি যখন দুনিয়ার যমীনে থাকবো না তখন যদি কেউ কখনো আপনার সাথে ঘোর শত্রুতায় লিপ্ত হয় কিংবা অকারণে আপনাকে নিদারুণ কষ্টের ভেতর দিন কাটাতে শক্তি প্রয়োগ করে তখন আপনি তার সাথে কিরূপ ব্যবহার করবেন?”
ইমামুল হুমাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “নানাজান! প্রথমবার আমি তাকে ক্ষমা করবো। দ্বিতীয়বারও আমি তার প্রতিশোধ নেবো না। কিন্তু তারপরও যদি সে আমার সাথে শত্রুতা পোষণ করে বা অন্যায় আচরণ করে তবে আর আমি তাকে ক্ষমা করবো না। অত্যাচারী যতই ক্ষমতাবান হোক না কেন, যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেন আমি তার প্রতিবাদ করবো। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে প্রয়োজনে বন-জঙ্গল, পাহাড়-পর্বতও অতিক্রম করতে পিছপা হবো না। ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠায় আমি আমার জীবনের শেষ শক্তি দিয়ে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে জিহাদ করে যাবো। ”
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত নাওয়াসা আলাইহিস সালাম উনার তেজোদীপ্ত জাওয়াব শুনে খুবই খুশি হলেন। উনার চোখ মুবারকদ্বয় পানিতে ভরে উঠলো। স্বস্নেহে ইমামুল হুমাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার পিঠ মুবারকে পবিত্র হাত মুবারকের শীতল পরশ বুলিয়ে দিয়ে বললেন, হে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম! আপনি সত্য ও ন্যায়ের উত্তম আদর্শ। আপনি শেরে খোদা সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার সুযোগ্য সন্তান। আপনি অশেষ মর্যাদার অধিকারী। মহান আল্লাহ পাক আপনার ন্যায়নীতি, সত্যনিষ্ঠা ও সৎসাহসে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হয়েছেন। আপনি আপনার সত্যনিষ্ঠা ও সৎ সাহসের অফুরন্ত পুরস্কার পাবেন। আপনার বংশে নয়জন বিশেষ ব্যক্তিত্বের আগমন ঘটবে, উনারা প্রত্যেকেই এক একজন প্রসিদ্ধ ইমামরূপে পরিগণিত হবেন। হে লখতে জিগার! আপনার দ্বারা কিয়ামত পর্যন্ত আমার বংশের ধারা জারি থাকবে।
অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইমামুল হুমাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, “হে হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম! আমার পর যদি কোন ব্যক্তি আপনার প্রতি খারাপ আচরণ করে কিংবা আপনার ক্ষতি সাধনে তৎপর হয় বা আপনাকে ভয়ানক দুঃখ কষ্টে ফেলে অকারণে আপনার উপর অত্যাচার করে তাহলে তার সাথে আপনি কিরূপ আচরণ করবেন?”
সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির, জামালি তবিয়তের। তিনি অতীব বিনয়ের সাথে বললেন, “নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি শত্রুকে সদাচরণ দ্বারা জয় করার চেষ্টা করবো। অসদাচরণকারীকে স্বীয় সদাচরণ দ্বারা সংশোধনের আশা রাখি। প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধমূলক আচরণ হতে নিজেকে হিফাযত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবো। প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসা নয় বরং মুহব্বত, এবং সৎ উপদেশ দান করে গোমরাহ বা বিপথগামীদের সৎ ও ন্যায়ের পথে ফিরিয়ে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা করবো। ইনশাআল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার আলাইহিস সালাম উনার জাওয়াব মুবারক শুনে খুবই সন্তুষ্ট হলেন। বললেন, “হে আমার নাওয়াসা আলাইহিস সালাম! আপনার মহৎ প্রাণ এবং ক্ষমা সুন্দর হৃদয়ের প্রকাশ দেখে মহান আল্লাহ পাক তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট হয়েছেন।
জেনে রাখুন! আপনার বংশে বিশ্ব বরেণ্য, শ্রেষ্ঠ একজন ওলীআল্লাহ উনার আবির্ভাব ঘটবে। তিনি তৎকালীন গোমরাহ বা বিপথগামী মুসলমানদের সৎপথে ফিরিয়ে আনবেন। উনার ইলম ও হিকমতের দ্বারা তিনি অন্ধকার দূর করবেন। মুসলিম উম্মাহর জন্য তিনি হবেন মহান পথ প্রদর্শক। উনার মুবারক নাম হবে মুহিউদ্দীন আব্দুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি। (বড়পীর হযরত আব্দুল কাদির জিলানী উনার জীবনী-১৫) (অসমাপ্ত)
-আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












