সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চিকিৎসা পদ্ধতি ঝাড়-ফুঁক ও তা’বীয (১)
, ০৯ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৪ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ২২ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০৭ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْاٰنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَّرَحْـمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِيْنَ
অর্থ: আমি পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল করেছি যার মধ্যে রয়েছে শিফা অর্থাৎ রোগ মুক্তি। আর মু’মিনগণের জন্য রহমত। (পবিত্র সূরা বানী ইসরাঈল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮২)
পবিত্র কুরআন শরীফ, যাহিরী ও বাতিনী উভয় রোগের শিফা দানকারী অর্থাৎ রোগ মুক্তি। বাতিনী-রোগ হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার, তাকাব্বুরী, পরশ্রীকাতরতা, রিয়া বা লৌকিকতা কাম, লোভ ইত্যাদি। পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত দ্বারা সে সকল বদ খাছলত অর্থাৎ বাতিনী রোগ দূর হয়। তবে একজন অভিজ্ঞ ও যোগ্য চিকিৎসক অর্থাৎ কামিল শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার দিক নির্দেশনা অর্থাৎ ছোহবত মুবারক আবশ্যক। একইভাবে যাহিরী রোগ অর্থাৎ শারীরিক ও মানসিক রোগের শিফা অর্থাৎ রোগ মুক্তিও রয়েছে সেখানে। তবে সেক্ষেত্রেও ব্যক্তির অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা পূর্ব শর্ত।
ঝাড়-ফুঁক ও তা’বীয তারাই দিতে পারবেন যাঁরা পরহেজগার, মুত্তাক্বী এবং অভিজ্ঞ ও দক্ষ। কাজেই কাফির-মুশরিক, ফাসিক-ফুজ্জার, বদ মাযহাবী, বদ আক্বীদার লোকদের কাছ থেকে ঝাড়-ফুঁক ও তা’বীয গ্রহণ করা জায়িয নেই। কারণ কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন, বদদ্বীন লোকেরা সাধারণত সম্মানিত শরীয়ত বিরোধী বাক্য দ্বারা ঝাড়-ফুঁক করে তা’বীয দিয়ে থাকে। শিরক, কুফর মিশ্রিত বাক্য দ্বারা ঝাড়-ফুঁক করা জায়িয নেই। তেমনি তা তা’বীয রূপে ব্যবহার করাও জায়িয নেই।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি ঝাড়-ফুঁক ও তা’বীয মুবারক। কেউ অসুস্থ হলে তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার কোন পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করে রোগীর শরীরে ফুঁক মুবারক দিতেন। অথবা কোন দোয়া-কালাম শরীফ পড়ে ফুঁক মুবারক দিতেন, সে ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যেত। সুবহানাল্লাহ! আর এ বিষয়টি উম্মাহকে সুস্পষ্টভাবে শিক্ষা দেয়ার জন্য তিনি নিজে যখন মহাসম্মানিত নূরুল ইহ্সান মুবারক অর্থাৎ মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করতেন তখন পবিত্র আয়াত শরীফ কিংবা দোয়া-কালাম শরীফ পড়ে মহাসম্মানিত নূরুছ ছিহ্হাহ্ মুবারক বা ফুঁক মুবারক দিতেন।
আর যে বাক্যগুলো শিরক ও কুফর মিশ্রিত ছিলো না তা দ্বারা ঝাড়-ফুঁক ও তা’বীয দেয়ার অনুমোদন দিতেন। কাজেই কুফর-শিরক মিশ্রিত বাক্য দ্বারা ঝাড়-ফুঁক করা কখনোই জায়িয নেই। তা আইয়্যামে জাহিলিয়াতের হোক কিংবা ইসলামী যুগে হোক তা সর্বাবস্থায় পরিত্যজ্য।
পবিত্র সূরা নাস শরীফ ও পবিত্র সূরা ফালাক শরীফ পড়ে ফুঁক মুবারক দেয়ার কথা তো সর্বজনবিদিত।
কখনো কখনো তিনি কোন দোয়া মুবারক পড়ে নূরুছ ছিহ্হাহ্ মুবারক বা ফুঁক মুবারক দিতেন। কখনো কাউকে শিখিয়ে দিতেন। যা পড়ে উনারা ফুঁক দিতেন। এমনকি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদেরকে ঝাড়-ফুঁক মুবারক করার তারগীব (উৎসাহ) ও আদেশ মুবারক করেছেন।
তবে আইয়্যামে জাহিলিয়াতের সময়কালীন দোয়া-কালামের মধ্যে যেগুলো কুফরী-শিরকী কালাম (বাক্য) মিশ্রিত ছিল তা পরিহার করার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশ মুবারক দিতেন।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা প্রতিটি কাজে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ-অনুকরণ করতেন। উনারা সেই অনুসরণ-অনুকরণে আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করে, দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করতেন। তা’বীয ব্যবহারের তর্জ-তরীক্বাও প্রনয়ন করেন।
উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক অনুমোদিত এবং দিক নির্দেশিত দোয়া-কালাম শরীফ পড়ে ঝাড় ফুঁক করতেন। একইভাবে উনারা আগত ব্যক্তি বা রোগীকে দোয়া-কালাম শিখিয়ে দিতেন। আবার কোন ক্ষেত্রে সেই আয়াত শরীফ, দোয়া-কালাম লিখে গলায় কিংবা হাতে ঝুলিয়ে দিতেন। সুবহানাল্লাহ!
পরবর্তীতে হযরত ইমাম মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা সেই পথই অনুসরণ করেছেন। কাজেই পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আয়াত শরীফ এবং হাদীছ শরীফ নির্দেশিত দোয়া-কালাম পড়ে ঝাড়-ফুঁক করা, তা’বীয ব্যবহার করা ও করানো সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত।
-সাইয়্যিদ মুফতী মুহম্মদ কাওছার আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্বাবস্থায় আজল বা তাড়াহুড়া না করে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাশরের ময়দানে যে ৫টি প্রশ্নের উত্তর প্রত্যেককেই দিতে হবে
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












