সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (২)
, ২৯ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৬ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ১৫ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ৩০ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কোথাও এমনকি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীনসহ চার মাযহাবের এমন একজন ইমাম মুজতাহিদ কোথাও কেউ এমন কথা বলেন নাই যে, “সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও পবিত্র রোযা শুরু করতে হবে”। কেউ কেউ নতুন চন্দ্রের উদয় ও অস্ত স্থলের ভিন্নতাকে গ্রহণযোগ্য নয়, এ কথা বললেও তারও ব্যাখ্যা রয়েছে। কিন্তু উক্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে কোন ইমাম, মুজতাহিদ উনারা কখনো এমন ফতওয়া দেন নাই যে, সারাবিশ্বে একই সাথে একই দিনে ঈদ পালন করতে হবে ও রোযা শুরু করতে হবে। এবং নিজেরাও বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে রোযা ও ঈদ কোনটিই পালন করেন নাই। বরং এটা এমন এক শ্রেণীর বিদয়াতী ও গোমরাহ লোকদের গোমরাহী ও কুফরী বক্তব্য যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে মুসলমানদের ইবাদত বন্দেগীসমূহ নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এবং এরা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফের মিথ্যা অর্থ ও অপব্যাখ্যা করে সর্বদা মুসলমানদের মাঝে ফেৎনা সৃষ্টি করে ও বিভ্রান্তি ছড়ায়।
(পূর্ব প্রকাশের পর)
ইবাদত বন্দেগীসহ মানব জীবনের সর্ব বিষয়ে চন্দ্র ও সূর্য দুইটিই মানুষের জন্য সময় নির্ধারণকারী:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَسْأَلُوْنَكَ عَنِ الْأَهِلَّةِ قُلْ هِيَ مَوَاقِيْتُ لِلنَّاسِ وَالْحَجِّ
অর্থ: (আমার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনার নিকট তারা নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলে দিন যে, এটি মানুষের জন্য এবং হজ্জের সময় নির্ধারণকারী (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-১৮৯)
الشَّمسُ وَالقَمَرُ بِحُسبانٍ
অর্থ: সূর্য ও চন্দ্র হিসাব মত চলে। (পবিত্র সূরা আর রহমান শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-৫)
جَعَلَ اللَّيلَ سَكَنًا وَالشَّمسَ وَالقَمَرَ حُسبانًا-
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি (তোমাদের জন্য) রাত্রিকে সৃষ্টি করেছেন বিশ্রামের জন্য এবং সূর্য ও চন্দ্রকে সৃষ্টি করেছেন সময় গণনার জন্য। (পবিত্র সূরা আনআম শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-৯৬)
هُوَ الَّذي جَعَلَ الشَّمسَ ضِياءً وَالقَمَرَ نورًا وَقَدَّرَهُ مَنازِلَ لِتَعلَموا عَدَدَ السِّنينَ-
অর্থ: তিনি সেই মহান যাত পাক, যিনি সূর্যকে উজ্জ্বল আলোকময় বানিয়েছেন, আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ আলোকময় করেছেন। অতঃপর তিনি এর জন্য মনযিলসমূহ নির্ধারিত করেছেন, যাতে করে তোমরা বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব জানতে পারো। (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-৫)
চন্দ্র ও সূর্য দুইটিই তাদের নিজস্ব মনযিলসমূহে পরিভ্রমন করেই সময় নির্ধারণ করে:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
الشَّمسُ تَجري لِمُستَقَرٍّ لَها ذلِكَ تَقديرُ العَزيزِ العَليمِ-وَالقَمَرَ قَدَّرناهُ مَنازِلَ حَتّى عادَ كَالعُرجونِ القَديمِ-لَا الشَّمسُ يَنبَغي لَها أَن تُدرِكَ القَمَرَ وَلَا اللَّيلُ سابِقُ النَّهارِ وَكُلٌّ في فَلَكٍ يَسبَحونَ-
অর্থ: সূর্য তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে পরিভ্রমন করে। এটা মহা পরাক্রমশীল, সর্বজ্ঞ মহান আল্লাহ পাক উনার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। চন্দ্রের জন্যেও আমি বিভিন্ন মনযিল নির্ধারিত করেছি। অবশেষে সে পুরাতন খর্জুর শাখার অনুরূপ হয়ে যায়। সূর্য কখনো চন্দ্রকে নাগাল পেতে পারে না এবং রাত্রি কখনো দিনের অগ্রে চলে না প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে পরিভ্রমন করে। (পবিত্র সূরা ইয়াসীন শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-৩৮, ৩৯, ৪০)
تَرَى الشَّمسَ إِذا طَلَعَت تَزاوَرُ عَن كَهفِهِم ذاتَ اليَمينِ وَإِذا غَرَبَت تَقرِضُهُم ذاتَ الشِّمالِ وَهُم في فَجوَةٍ مِنهُ ذلِكَ مِن آياتِ اللَّهِ
অর্থ: আপনি সূর্যকে দেখবেন, যখন উদিত হয়, তাদের গুহা থেকে পাশ কেটে ডান দিকে চলে যায় এবং যখন অস্ত যায়, তখন তাদের থেকে পাশ কেটে বামদিকে চলে যায়, অথচ তারা গুহার প্রশস্ত চত্বরে অবস্থিত। এটা মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শনাবলীর অন্যতম। (পবিত্র সূরা কাহাফ শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-১৭)
سَخَّرَ لَكُمُ الشَّمسَ وَالقَمَرَ دائِبَينِ وَسَخَّرَ لَكُمُ اللَّيلَ وَالنَّهارَ
অর্থ: তিনি তোমাদের জন্য সূর্য এবং চন্দ্রকে সর্বদা এক নিয়মে নিয়োজিত করেছেন এবং রাত্রি ও দিবসকে তোমাদের কাজে লাগিয়েছেন। (পবিত্র সূরা ইবরাহীম শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-৩৩)
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করলে তা দ্বিগুণ-বহুগুনে বৃদ্ধি করে ফিরিয়ে দেয়া হয়
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












