সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৪০)
, ২৪ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৪ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ০২ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ১৯ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“কম দূরত্বের কারণে সময়ের পার্থক্য যেহেতু মান্য করা ফরয, সেহেতু বেশি দূরত্বের কারণে দিনের পার্থক্য মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন করা ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরা দাজ্জাল ও কায্যাব, তাদের থেকে দূরে থাকা ফরয-ওয়াজিব:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الْأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوْا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ্ করতে পারবে না এবং ফেৎনায় ফেলতে পারবে না। ” (মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, ফতহুল মুলহিম)
দাজ্জালে কাযযাবের অর্থ-
خَلَّاطُوْنَ بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ مُمَوِّهُوْنَ
অর্থ: যারা সত্যের সাথে সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে ও ধোঁকা দেয়।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাবের প্রকৃত অর্থ হলো- যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিভ্রান্তিকর অর্থ ও অপব্যাখ্যা করে সর্বদা মুসলমানদের মাঝে ফেৎনা করে ও বিভ্রান্তি ছড়ায় তাদেরকে বলা হয় দাজ্জালে কাযযাব। মূলতঃ তারা মুনাফিক। তাই সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরাও পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জাল ও কাযযাবের অন্তর্ভুক্ত।
ধারাবাহিক আলোচনা.........
আম বা শর্তহীন নির্দেশ দিলেই যদি সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও পবিত্র রোযা শুরু করতে হয়। তাহলে, আম বা শর্তহীন নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
أَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوْا مَعَ الرَّاكِعِينَ
অর্থ: তোমরা পবিত্র ছলাত আদায় করো, পবিত্র যাকাত প্রদান করো এবং রুকূকারীগণ উনাদের সাথে পবিত্র রুকূ করো। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৪৩)
উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফে আম বা শর্তহীন কয়েকটি নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তা হলো- পবিত্র ছলাত আদায় করা, পবিত্র যাকাত আদায় করা, পবিত্র রুকূ’ করা।
তাহলে উল্লেখিত ৩টি বিষয়ে তারা সারাবিশ্বে একই দিন দাবি করে না বরং এই বিষয়গুলি আদায়ের ক্ষেত্রে তারা নিজেদের স্থানীয় সময়ের অনুসরণ করে। এটা কি তাদের জঘন্যতম ধোঁকাবাজি নয়?
(২) পবিত্র হাদীছ শরীফে صُومُوْا এই আম বা শর্তহীন নির্দেশ দ্বারা যদি নিকটবর্তী ও দূরবর্তী শহরের নতুন চাঁদ দেখার ভিন্নতাকে শর্ত করা না যায়, তাহলে পবিত্র উল্লেখিত আয়াত শরীফ উনার আম নির্দেশের মধ্যে তো একই দিনের কথা উল্লেখ নাই এবং একই দিনকে মোটেও শর্ত করা হয় নাই। তাই পবিত্র রোযা ও পবিত্র ঈদ উনার বিষয়ে একই দিন শর্ত করার দ্বারা তারা মুসলমানদের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে।
(৩) তারা হানাফী মাযহাবসহ অন্যান্য মাযহাব থেকে কতিপয় ইমাম-মুজতাহিদ উনাদের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রচার করে যে, উনারা বলেছেন চাঁদ দেখার ভিন্নতা গ্রহণযোগ্য নয়। এর দ্বারা সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ করার দলীল দিতেছে। অথচ তারা কিয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করলেও তো এটা প্রমাণ দিতে পারবে না যে, যারা বলেছেন চাঁদ দেখার ভিন্নতা গ্রহণযোগ্য নয়, উনারা কেউ জীবনে কখনো একটি বারের জন্য সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ করেছেন বা পবিত্র রোযা শুরু করেছেন। অথবা কোন স্থানে উনারা বলেছেন, তোমরা সারাবিশ্বে একইদিনে পবিত্র ঈদ ও রোযা পালন করো। অথবা উনারা কোথাও এ কথা বলেছেন যে, যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যার কারণে আমরা সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র রোযা শুরু করতে এবং পবিত্র ঈদ উদযাপন করতে পারতেছিনা। যদি কোন যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত হয়, তখন তোমরা সবাই সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন করবে এবং পবিত্র রোযা শুরু করবে। সুতরাং, উল্লেখিত অপপ্রচার করার দ্বারা এবং পবিত্র হাদীছ শরীফের অপব্যাখ্যা করার দ্বারা তারা পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাব হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক!!! সুতরাং খালিছ তওবা করে ঈমানদার হওয়ার ও একই দিনে দাবিকারী অনুসারীদের থেকে দায়মুক্ত হওয়ার পরামর্শ রইলো। চলবে....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আখেরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র ছোহবত মুবারক গ্রহণের ফাযায়িল-ফযীলত, গুরুত্ব-তাৎপর্য ও আবশ্যকতা:
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
যে নিজে পর্দা করে না ও অধীনস্থদের পর্দা করায় না সে দাইয়ূছ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাক্বীক্বী মৃত্যুকে স্মরণ করার মধ্যেই শহীদী দরজা মিলে
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন রোগই ছোঁয়াচে নয়, ছোঁয়াচে বিশ্বাস করা কুফরী
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত আব্বাদ ইবনে বিশর ইবনে ওয়াকাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৩)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা কবীরা গুনাহ ও অসন্তুষ্টির কারণ
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বক্ষেত্রে ফায়সালাকারী হিসেবে মেনে নেয়াই ঈমানদারের পরিচয়
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












