সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৪৬)
, ০২ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১০ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ০৮ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“কম দূরত্বের কারণে সময়ের পার্থক্য যেহেতু মান্য করা ফরয, সেহেতু বেশি দূরত্বের কারণে দিনের পার্থক্য মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন করা ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরা দাজ্জাল ও কায্যাব, তাদের থেকে দূরে থাকা ফরয-ওয়াজিব:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الْأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوْا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ করতে পারবে না এবং ফেৎনায় ফেলতে পারবে না। ” (মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, ফতহুল মুলহিম)
দাজ্জালে কাযযাবের অর্থ-
خَلَّاطُوْنَ بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ مُمَوِّهُوْنَ.
অর্থ: যারা সত্যের সাথে সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে ও ধোঁকা দেয়।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাবের প্রকৃত অর্থ হলো- যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিভ্রান্তিকর অর্থ ও অপব্যাখ্যা করে সর্বদা মুসলমানদের মাঝে ফেৎনা করে ও বিভ্রান্তি ছড়ায় তাদেরকে বলা হয় দাজ্জালে কাযযাব। মূলতঃ তারা মুনাফিক। তাই সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরাও পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জাল ও কাযযাবের অন্তর্ভুক্ত।
ধারাবাহিক আলোচনা.........
এ কে এম মাহবুব সে ১০ পৃষ্ঠায় আরো লিখেছে যে- ছুবহে ছাদিক এবং রাত হওয়া অবশ্যই সূর্যের সাথে সম্পর্কিত, চাঁদের সাথে নয়।
সে ১১ পৃষ্ঠায় লিখেছে- তাই সূর্যের পরিভ্রমনের প্রতি লক্ষ্য রেখেই স্থানীয় সময় অনুপাতে পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সাহরী, ইফতার, নামায আদায় করতে হয়।
জাওয়াব: সূর্যের পরিভ্রমনের প্রতি লক্ষ্য রেখেই যদি স্থানীয় সময় অনুপাতে পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সাহরী, ইফতার, নামায আদায় করতে হয়। তাহলে, এই সময়ের ভিন্নতা যে কারণে মান্য করা ফরয, ঠিক একই কারণে অর্থাৎ সূর্যের পরিভ্রমনের প্রতি লক্ষ্য রেখেই পৃথিবীর সর্বত্রই কম দূরবর্তীস্থানে সময়ের পার্থক্য হয়। আর বেশি দূরবর্তী স্থানে দিনের পার্থক্য হওয়ার কারণে উক্ত দিনের ভিন্নতাও মান্য করা ফরযে আইন। এই সহজ কথা যারা বুঝে না। তারা নিকৃষ্ট জাহিল।
সে ১১ পৃষ্ঠায় আরো লিখেছে- যেহেতু বাংলাদেশে সূর্য উদয়-অস্ত মধ্যপ্রাচ্যের মক্কার উদয়-অস্তের সময় থেকে ৩ ঘন্টা অগ্রগামী সে কারণেই বাংলাদেশে সাহরী, ইফতার ও নামাযের সময় মধ্যপ্রাচ্যের স্থানীয় সময়ের চেয়ে ৩ ঘন্টা আগে হবে।
জাওয়াব: গ- মুর্খ ও আশাদ্দুদ দরজার জাহিলে মুরাক্কাব কোথাকার! সূর্য উদয়-অস্তের ভিন্নতাকে সে স্বীকার করে নিলো। আর সে কারণে বাংলাদেশে সাহরী, ইফতার ও নামাযের সময় মধ্যপ্রাচ্যের স্থানীয় সময়ের চেয়ে ৩ ঘন্টা আগে করতে হবে। এটাও স্বীকার করে নেয়ার পর সারাবিশ্বে একই দিন দাবি করা এটা মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদের ইচ্ছাকৃত ষড়যন্ত্র ছাড়া অন্যকিছু নয়। কেননা, মধ্য প্রাচ্যের ৩ ঘন্টা আগে যদি বাংলাদেশে সাহরী, ইফতার ও পবিত্র ছলাত আদায় ইত্যাদি করতে হয়, তাহলে যে সকল দেশে মধ্য প্রাচ্যের ১৫ থেকে ২৪ ঘন্টা আগে বা পরে সাহরী, ইফতারী ও পবিত্র নামায কালাম ইত্যাদি করে থাকে, তারা তো একই দিনে বা একই বারে বা তারিখে পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযা শুরু করা সম্ভবই নয়।
অন্যদিকে মধ্য প্রাচ্যকে চাঁদ দেখার কেন্দ্র বিন্দু বানানো পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিরোধী কথা যা আমরা ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি।
তাছাড়াও তাদের উপরোল্লেখিত কথাই প্রমাণ করে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলমানদের পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযা নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। যা মুনাফিকদেরই কাজ।
হাস্যকর বিষয় হলো! তার কথায় প্রমাণিত হলো যে, সে সূর্যের উদয়স্থলের ভিন্নতাকে মেনে নিয়েছে, কারণ সে বলেছে যে, “সূর্যের পরিভ্রমনের প্রতি লক্ষ্য রেখেই স্থানীয় সময় অনুপাতে পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সাহরী, ইফতার, নামায আদায় করতে হয়”
তাহলে আমাদের কথাতো এটাই যে, কম দূরত্বের কারণে সময়ের পার্থক্য হয়, আর বেশি দূরত্বের কারণে দিনের পার্থক্য হয়।
তাই কম দূরবর্তী স্থানে সময়ের ভিন্নতার কারণে যদি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সাহরী, ইফতার, নামায আদায় করতে হয়। এবং ভিন্ন সময়ে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করতে হয়। তাহলে বেশি দূরবর্তী স্থানে দিনের পার্থক্যের কারণেও অবশ্যই ভিন্ন দিনে ঈদ পালন করা এবং রোযা শুরু করা ফরযে আইন। চলবে....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৮)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












