সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৫৫)
, ২৪ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩১ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“কম দূরত্বের কারণে সময়ের পার্থক্য যেহেতু মান্য করা ফরয, সেহেতু বেশি দূরত্বের কারণে দিনের পার্থক্য মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন করা ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরা দাজ্জাল ও কায্যাব, তাদের থেকে দূরে থাকা ফরয-ওয়াজিব:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الْأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوْا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ করতে পারবে না এবং ফেৎনায় ফেলতে পারবে না। ” (মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, ফতহুল মুলহিম)
দাজ্জালে কাযযাবের অর্থ-
خَلَّاطُوْنَ بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ مُمَوِّهُوْنَ.
অর্থ: যারা সত্যের সাথে সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে ও ধোঁকা দেয়।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাবের প্রকৃত অর্থ হলো- যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিভ্রান্তিকর অর্থ ও অপব্যাখ্যা করে সর্বদা মুসলমানদের মাঝে ফেৎনা করে ও বিভ্রান্তি ছড়ায় তাদেরকে বলা হয় দাজ্জালে কাযযাব। মূলতঃ তারা মুনাফিক। তাই সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার দাবিকারীরাও পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জাল ও কাযযাবের অন্তর্ভুক্ত।
ধারাবাহিক আলোচনা.........
ইমাম কুরতুবী মালেকী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
قَالَ عُلَمَاؤُنَا قَوْلُ ابْنِ عَبَّاسٍ (هَكَذَا أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) كَلِمَةُ تَصْرِيحٍ بِرَفْعِ ذَلِكَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبِأَمْرِهِ. فَهُوَ حُجَّةٌ
অর্থ: আমাদের উলামায়ে মালেকীগণ বলেন, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ক্বওল শরীফ
هكَذَا اَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
উক্ত বাণী মুবারক পবিত্র হাদীছে মারফূ হওয়ার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট যা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছেছে এবং উনার নির্দেশ মুবারক আমাদের জন্য দলীল। (তাফসীরে কুরতুবী ২/২৯৫)
হযরত ইমাম দারে কুতনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
هَكَذَا أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَذَا إِسْنَادٌ صَحِيحٌ.
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ক্বওল শরীফ
هكَذَا اَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সনদ ছহীহ। (সুনানে দারে কুতনী শরীফ ৫/৪৭১)
তানক্বীহুত তাহক্বীক প্রণেতা বলেন-
هكذا أمرنا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال الِّترمذيُّ هذا حديثٌ صحيحٌ
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ক্বওল শরীফ
هكَذَا اَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ সম্পর্কে হযরত ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ খানা ছহীহ। (তানক্বীহুত তাহক্বীক্ব লি ইবনে আব্দিল হাদী ৩/২১৭)
উমদাতুল আহকামিল কুবরা (১/২২৩) উক্ত কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-
هكذا أمرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَسَنٌ صَحِيح
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ খানা হাসান ছহীহ।
হযরত ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ )حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ( وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ لِكُلِّ أَهْلِ بَلَدٍ رُؤْيَتَهُمْ
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ (হাসান, ছহীহ, গরীব) উনার উপরেই আহলে ইলম তথা হক্কানী রব্বানী ইমাম-মুজতাহিদ, আলিম-উলামাগণ আমল করে থাকেন। উনারা এ কথা বলেন যে, নিশ্চয়ই প্রত্যেক শহরের অধিবাসীদের নতুন চাঁদ উদয়স্থলের ভিন্নতা রয়েছে। (নাসায়ী শরীফ উনার শরাহ গ্রন্থ “যখীরাতুল উক্ববা ফী শারহিল মুজতাবা” ২০/২৮০) চলবে....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৮)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












