নছীহতে কায়িম মাকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
সেই ব্যক্তিই মুসলমান যার হাত ও জবান থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ-১
, ৩০ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৭ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ১৬ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ৩১ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
عَنْ أَبِـيْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰـى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ دَمُهٗ وَمَالُهٗ وَعِرْضُهٗ. (رواه مسلم)
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এক মুসলমানের জন্য অপর মুসলমানের রক্ত, মাল-সম্পদ ও মানসম্ভ্রম নষ্ট করা হারাম।
[মুসলিম শরীফ]
এখানে, রক্ত হারাম বলার দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, কোনো মুসলমানকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা কবীরাহ গুনাহ। মাল-সম্পদ হারাম বলতে বুঝানো হয়েছে পিতা-মাতা, ভাই-বোন, সন্তান-সন্তানাদি, আত্মীয়-স্বজন একে অন্যের মাল-সম্পদ অবৈধভাবে আত্মসাৎ করা নাজায়েয। আর কারো মানসম্ভ্রম নষ্ট করা কবীরা গুনাহ।
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ عَبْدِ اللهِ ابْنِ عَمْرٍو رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰـى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُوْنَ مِنْ لِسَانِهٖ وَ يَدِهٖ. (بـخاری شریف)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মুসলমান ঐ ব্যক্তি যার জবান ও হাত থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ।
[বুখারী শরীফ]
অর্থাৎ জবান দ্বারা মিথ্যা অপবাদ, গীবত, কষ্টদায়ক কথা বলবে না। আর হাত দিয়ে অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করবে না, মারামারি কাটাকাটি করবেনা। হাক্বীক্বী মুসলমান হতে হলে এ সমস্ত অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। অথচ সঠিক দ্বীনি জ্ঞান না থাকার কারণে মানুষের মাঝে এ সমস্ত কাজগুলোই বেশি সংঘটিত হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
দেখা যায়, যারা রাজনৈতিক দল করে তারা সবসময় একে অপরের দোষ-ত্রুটির পিছনে লেগে থাকে। তারা কুফরী নিয়ম-নীতির অনুসরণ করে, তাই তাদের মাঝে এ ধরণের বদ স্বভাব থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, যারা ছুফী, দ্বীনদার-পরহেযগার ও মুসলমান দাবীদার তাদের মাঝেও এ ধরণের বদ স্বভাব প্রায়ই পরিলক্ষিত হয়। অথচ এটা তাদের জন্য শোভনীয় নয়। যেহেতু এটা কবীরা গুনাহ।
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلَا تَـلْمِزُوْا أَنْـفُسَكُمْ وَلَا تَـنَابَـزُوْا بِالْأَلْقَابِ ۖ بِئْسَ الْاِسْمُ الْفُسُوْقُ بَـعْدَ الْإِيْـمَانِ ۚ وَمَنْ لَّـمْ يَـتُبْ فَأُولٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُوْنَ ﴿১১﴾ سورة حجرات
তোমরা নিজেদের লোকদেরকে দোষারোপ করো না এবং পরস্পর পরস্পরকে মন্দ নামে ডেকো না। ঈমান গ্রহণ করার পর কাউকে মন্দ নামে সম্বোধন করা খুবই মন্দ কাজ। আর যারা এহেন কাজ থেকে তওবা করে না তারাই যালিম। [সূরা হুজুরাত শরীফ: ১১]
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ أَبِـيْ بَـرَزَةَ الْأَسْلَمِيْ رَضِيَ اللهُ تَـعَالٰـى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا مَعْشَرَ مَنْ آمَنَ بِلِسَانِهٖ وَلَـمْ يَدْخُلِ الْإِيْـمَانُ قَـلْبَهٗ لَاتَـغْتَابُوا الْمُسْلِمِيْـنَ، وَلَا تَـتَّبِعُوْا عَوْرَاتِـهِمْ، فَإِنَّهٗ مَنِ اتَّـبَعَ عَوْرَاتِـهِمْ يَـتَّبِعُ اللّٰهُ عَوْرَتَهٗ، وَمَنْ يَـتَّبِعِ اللهُ عَوْرَتَهٗ يَـفْضَحْهُ فِي بَـيْتِهٖ. (رواه أحـمـد وأبو داود وابن حبّان، وصحّحه ابن حبّان والألباني)
হযরত আবূ বারাযাহ আসলামী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে লোক সকল! তোমরা যারা শুধুমাত্র মৌখিকভাবে মুসলমান হয়েছো, তোমাদের অন্তরে ঈমান প্রবেশ করেনি; তোমরা মুসলমানের গীবত করবে না এবং তাদের দোষ ও ছিদ্রান্বেষণে লেগে থাকবে না। কেননা যারা মুসলমানের দোষ-ত্রুটি অন্বেষণে লেগে থাকে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের দোষ-ত্রুটিগুলো মানুষের কাছে প্রকাশ করেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যাদের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করেন তারা ঘরের চৌহদ্দীর মধ্যে অবস্থান করলেও তিনি তাদেরকে অবশ্যই অপমানিত করবেন। নাঊযুবিল্লাহ!
[আহমদ শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ]
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত উম্মে সুরাইকা দাওসিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্বাবস্থায় আজল বা তাড়াহুড়া না করে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












