স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহিলাদেরকে ঘরে নামায পড়তে উৎসাহিত করেছেন
, ১২ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৪ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২৩ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ০৯ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
![স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহিলাদেরকে ঘরে নামায পড়তে উৎসাহিত করেছেন](https://www.al-ihsan.net/uploads/1711139054_ নামায.jpg)
মূলতঃ প্রথম যুগে নামাযসহ সকল অনুষ্ঠানাদিতে মহিলাদের উপস্থিত হওয়ার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল তা’লীম গ্রহণ করা। তদুপরি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন এবং সে সময় ফিতনার আশঙ্কা কল্পনাও করা যায় না। তথাপি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহিলাদেরকে সুসজ্জিতভাবে, সুগন্ধি ব্যবহার করে মসজিদে যেতে নিষেধ করেন এবং তিনি আরো বলেন, “সুগন্ধি ব্যবহারকারিণী মহিলা ব্যভিচারিণী।” আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “যে মহিলা সুগন্ধি ব্যবহার করে, সে যেন ফরজ গোসলের ন্যায় গোসল করে আমার সাথে নামাযে আসে।” শুধু তাই নয়, সাথে সাথে পর্দারও গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই দেখা যায়, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ফজরের নামায এত অন্ধকার থাকতে শেষ করতেন যে, মহিলাগণ নামায পড়ে যখন চলে যেতেন, তখনও উনাদেরকে স্পষ্টভাবে চেনা যেত না। আর এ পর্দার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়েই সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মসজিদে নববী শরীফ উনার এ দরজাটি যদি মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট করে দিতাম, তবে খুবই উত্তম হতো। অর্থাৎ পর্দার জন্য খুবই সুবিধা হতো।”
কিন্তু বর্তমান যামানায় ঐরূপ ব্যবস্থা বা কঠোরতা কল্পনাও করা যায় না। আর এদিকে লক্ষ্য করেই সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “মহিলাদের মসজিদে জামায়াতে নামায পড়ার চেয়ে গোপন প্রকোষ্টে নামায পড়া উত্তম।” সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটা স্পষ্ট হলো যে, মহিলাদের প্রথম যুগে জামায়াত বা ঈদগাহে অথবা অন্যান্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল, তা’লীম গ্রহণ করা। আর আমরা প্রথমেই উল্লেখ করেছি, আমাদের দলীল হচ্ছে- পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র কিয়াস শরীফ। কোন দেশ, ব্যক্তি আমাদের দলীল নয়। কাজেই যেখানে মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া (আম ফতওয়া অনুযায়ী) মাকরূহ্ তাহরীমী, এর উপর উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে এ ইজমা’র বিরোধিতা করে মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফের অনুসরণ করা মোটেও জায়েয নয়।
পর্দার গুরুত্ব সর্ম্পকে মহান আল্লাহ পাক তিনি বহু আয়াত শরীফ নাযিল করেছেন-
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
অর্থ: (হে মহিলাগণ!) “তোমরা তোমাদের ঘরের মধ্যে আবদ্ধ থাকো, জাহিলিয়াত যুগের মেয়েদের মত সৌন্দর্য প্রদর্শন করোনা।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ
অর্থ: “যখন তোমরা (বেগানা) মহিলাদের নিকট কোন জিনিস চাও, তখন পর্দার আড়াল হতে চাও।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৩)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ فَإِذَا خَرَجَتْ اِسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ
অর্থ: “মেয়েলোক হলো আবৃত থাকার বস্তু। যখনই তারা বেপর্দা হয়ে বাইরে বের হয়, শয়তান উঁকি-ঝুঁকি মারে তাদের দ্বারা পাপ কাজ সংঘঠিত করার জন্য।” (তিরমিযী শরীফ, ছহীহ ইবনে খুযাইমা, মুসনাদে বাযযার ইত্যাদি) পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো উল্লেখ করা হয়-
لَعَنَ اللهُ النَّاظِرَ وَالْمَنْظُورَ إِلَيْهِ
অর্থ: “দেখনেওয়ালা আর দেখানেওয়ালী উভয়ের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লানত।” (মেশকাত শরীফ, বায়হাক্বী শরীফ, শুয়াবুল ঈমান ইত্যাদি)
পর্দার গুরুত্বের জন্যই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহিলাদের ঘরে নামায পড়া সর্বোত্তম ও অধিক ফযীলতপূর্ণ বলে উৎসাহ প্রদান করেছেন।
-আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ খুবাইব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ অনুমতি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করা এবং কারো ঘরে উঁকি দেয়া
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহিলাদের সুন্নতী লিবাস, অলংকার ও সাজ-সজ্জা (১৬)
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য (৭)
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সুওয়াল: যার জাররা পরিমাণ ঈমান আছে সেও একদিন জান্নাতে যাবে। ইহা পবিত্র হাদীছ শরীফ কি-না? যদি পবিত্র হাদীছ শরীফ হয় তাহলে জাররা পরিমাণ বলতে কি বুঝানো হয়েছে?
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সুওয়াল: মৃত ব্যক্তির লাশের কাছে কান্নাকাটি করা, দোয়া-কালাম পড়া, কথাবার্তা বলা হয়। এগুলো মৃত ব্যক্তি শুনতে পায় কি না? বুঝতে পারে কি না?
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাইয়ূছ জান্নাতে প্রবেশ করবে না
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র আশুরা সম্পর্কিত সুওয়াল জাওয়াব
১২ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র আশুরা সম্পর্কিত সুওয়াল জাওয়াব
১১ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে ব্যক্তিত্ব বা আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে (৪)
১০ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাসপাতালে নারীর নিরাপত্তা এবং শরয়ী পর্দাভিত্তিক আল মুতমাইন্নাহ মা ও শিশু হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা
০৯ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)