সুওয়াল-জাওয়াব:
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (২)
, ০৪ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৮ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ১১ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সুওয়াল:
ছারছিনা থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক পত্রিকা ৬০ বর্ষ ১লা সংখ্যা ১৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম এবং হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার নিষেধাজ্ঞা না মেনে নাফরমান হয়ে বেহেশত থেকে পৃথিবীতে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম এবং উনার সম্মানিতা আহলিয়া হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদের শান মুবারকে বেয়াদবীমূলক উক্ত বক্তব্যের শরঈ ফায়ছালা জানতে ইচ্ছুক।
জাওয়াব: (২য় অংশ)
স্মরণীয় যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কেউই মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ-নিষেধ মুবারকের খিলাফ বা বিপরীত কোন কাজ কখনো করেননি। এটাই হচ্ছে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা তথা সকল মু’মিন-মুসলমানদের আক্বীদা। এর বিপরীত আক্বীদাই হচ্ছে ৭২টি বাতিল ও জাহান্নামী ফেরকার আক্বীদা। কাজেই, মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত নবী ও রসূল হযরত আবুল বাশার আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার ওহী মুবারক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। উনার পরিপূর্ণ অনুগত, ফরমাবরদার, আজ্ঞাবহ, আদেশ-নিষেধ মুবারক পালনকারী। কাজেই, তিনি কখনো মহান আল্লাহ পাক উনার কোন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেননি এবং তিনি কোন নাফরমানীও করেননি।
হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি যদি মহান পাক উনার কোন আদেশ কিংবা নিষেধ অমান্য করে থাকেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নাফরমান হয়ে থাকেন তাহলে হযরত নবী ও রসূল হিসেবে উনাদের খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক থাকলো কোথায়! পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে কোথাও কি উল্লেখ আছে যে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম এবং হযরত হওওয়া আলাইহাস সালাম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার নিষেধাজ্ঞা না মেনে নাফরমান হয়ে বেহেশ্ত থেকে পৃথিবীতে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন? আদৌ নেই। মনে রাখতে হবে যে, মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত নবী ও রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার প্রতি উক্ত মিথ্যা তোহমত দেয়ার পরিণাম নিঃসন্দেহে কাট্টা কুফরী এবং কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার এক বিশেষ কারণ।
উল্লেখ্য, পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের অর্থ বর্ণনায় সবখানে লুগাতী বা অভিধানগত অর্থ প্রযোজ্য ও গ্রহণযোগ্য নয় বরং ক্ষেত্র বিশেষে লুগাতী অর্থ পরিহার করে তাফছীলী বা তা’বীলী অর্থ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় অর্থ শুদ্ধ হবে না। বিশেষ করে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সম্পর্কে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হযরত আব্বা ও হযরত আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের সম্পর্কে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্পর্কে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের সম্পর্কে এমন অর্থ গ্রহণ করা যাবে না, যে অর্থ গ্রহণ করলে উনাদের শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা, বুযুর্গী সম্মানের খিলাফ হয়। উদাহরণস্বরূপ পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ উনার ৪৫নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারকে مكر শব্দ মুবারক উনার লুগাতী বা আভিধানিক অর্থ “ধোঁকাবাজি প্রতারণা বা ষড়যন্ত্র” গ্রহণ না করে ‘হিকমত বা কৌশল’ গ্রহণ করতে হবে। একইভাবে উপরে বর্ণিত সকল মনোনীত ও সম্মানিত বান্দা-বান্দী উনাদের শান মুবারক সম্মত অর্থ ও ব্যাখ্যা গ্রহণ করতে হবে।
মূলতঃ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মর্যাদা বা শান মুবারক বিরোধী কথা-বার্তা যারা বলে থাকে বা লিখে থাকে তারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ এবং পবিত্র আক্বায়িদ সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই তা বলে থাকে। যেমন কেউ বলে থাকে যে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি গন্ধম খেয়ে ভুল করেছিলেন। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! আবার কেউ বলে থাকে যে, তিনি গন্ধম খেয়ে একটা গুণাহ করেছিলেন। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! আবার অত্র সুওয়ালে বলা হয়েছে যে, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিষেধাজ্ঞা না মেনে নাফরমান হয়ে বেহেশত থেকে পৃথিবীতে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
প্রকৃতপক্ষে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার শান মুবারক বিরোধী উল্লেখিত বক্তব্যসমূহের একটিও সঠিক নয়। প্রত্যেকটি কাট্টা কুফরী। মুসলমান নামধারী কেউ কুফরী করলে সে মুরতাদ ও কাফিরে পরিনত হয়। নাউযুবিল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












