জীবনী মুবারক
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৬)
বিলাদত শরীফ: (তারিখ উল্লেখ নেই) বিছাল শরীফ: ৪৩ হিজরী (৬৬৩ খৃ:)
, ১৬ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৯ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ২৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ফযীলত ও মর্যাদা:
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার শানে সূরা আহক্বাফ শরীফ ও সূরা আর-রা‘দ শরীফ উনার যথাক্রমে ১০নং ও ৪৩ নং আয়াত শরীফ দু’টি নাযিল হয়-
পবিত্র সূরা আহক্বাফের ১০নং আয়াত শরীফ-
قُلْ أرَءَيْتُمْ إنْ كَانَ مِنْ عِنْدِ اللهِ وَ كَفَرْتُمْ بِهِ وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِنْ بَنِى إسْرَاءِيْلَ عَلَى مِثْلِهِ فَآمَنَ وَاسْتَكْبَرْتُمْ - إنَّ اللهَ لَا يَهْدِىْ الْقَوْمَ الظَّالِمِيْنَ.
অর্থ: (আপনি বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছো কি, যদি এই কুরআন শরীফ মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট হতে অবতীর্ণ হয়ে থাকে, আর তোমরা এতে অবিশ্বাস করো, অথচ বনী ইসরাইলের একজন ইহার অনুরূপ কিতাব (অর্থাৎ তাওরাত শরীফ) সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়েছেন, অতঃপর এতে বিশ্বাস স্থাপন করলেন, আর তোমরা অহংকার করলে, (তাহলে তোমাদের পরিণাম কি হবে)? নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি জালিমদের সৎপথে পরিচালিত করেন না। )
এখানে বনী ইসরাইলের একজন বলতে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বুঝানো হযেছে।
পবিত্র সূরা রা‘দ শরীফ উনার ৪৩নং আয়াত শরীফ-
وَيَقُوْلُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لَسْتَ مُرْسَلًا- قُلْ كَفَى بِاللهِ شَهِيْدًا بَيْنِىْ وَ بَيْنَكُمْ َ مَنْ عِنْدَهُ عِلْمُ الْكِتَابِ.
অর্থ: (কাফিরেরা বলে, আপনি আল্লাহ পাক উনার প্রেরিত নন। আপনি বলুন, মহান আল্লাহ পাক এবং যাদের নিকট কিতাবের জ্ঞান রয়েছে, তারা আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট। )
এখানে “যাদের নিকট কিতাবের জ্ঞান রয়েছে” দ্বারা হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও উনার সঙ্গীগণকে বুঝানো হয়েছে।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার শানে উপরোক্ত আয়াত শরীফ দু’টি ছাড়াও আরো দু’টি আয়াত শরীফ নাযিল হয়েছে বলে অনেক মুফাস্সির মত প্রকাশ করেছেন।
আল্লামা ইবনে ইসহাক হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সূত্রে বর্ণনা করেছেন, পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফের ১১৩ ও ১১৪নং আয়াত শরীফ দু’টি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত ছা‘লাবা ইবনে সাইয়ার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের প্রশংসায় নাযিল হয়েছে-
لَيْسُوْا سَوَاءً مِنْ أهْلِ الْكِتَابِ أُمَّةٌ قَائِمَةٌ يَتْلُوْنَ آيَاتِ اللهِ آنَاءَ الَّيْل وَهُمْ يَسْجُدُوْنَ. يُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَيَأْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُسَارِعُوْنَ فِى الْخَيْرَات وَأُولآئِكَ مِنَ الصَّالِحِيْنَ.
অর্থ: (তারা সমান নয়। আহলে কিতাবদের মধ্যে কিছু লোক এমনও আছে যারা অবিচলভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার আয়াত শরীফসমূহ পাঠ করেন ও রাতের গভীরে তারা সিজদা করেন। তারা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি ঈমান রাখেন এবং কল্যাণকর বিষয়ে নির্দেশ দেন এবং মন্দ বিষয় থেকে নিষেধ করেন এবং সৎকাজের দিকে দ্রুত ধাবিত হন। আর উনারাই হলেন সৎকর্মশীল। ) (সূরা আলে ইমরান শরীফ ১১৩-১১৪)
এভাবে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মর্যাদার সাক্ষ্য দান করেছেন। তিনি কত মহান ব্যক্তি ছিলেন তা মহান আল্লাহ পাক উনার এসব ঘোষণায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনায় হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি খুব সতর্কতা অবলম্বন করতেন। তিনি মাত্র ২৫টি হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। অনেক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উনার নিকট থেকে হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন, যেমন হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত যুরারা ইবনে আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হানজালা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু প্রমুখ। তাছাড়া উনার নিকট থেকে অনেক তাবেয়ীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা)
সূত্র: উসুদুল গাবা, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা, হায়াতুছ ছাহাবা, তাবাকাত, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুসনাদসহ অন্যান্য সীরত গ্রন্থাবলী। (সমাপ্ত)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা-হুসনে যন পোষণ করা ঈমান
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (১)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহিলাদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ নির্দেশনা মুবারক- পর্দা পালন করা
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












