হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বদ মাযহাব, বদ আক্বীদা ও বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (২১)
, ১২ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২০ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ১৮ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ০৩ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা:
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এতই বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত ও মযার্দা-মর্তবার অধিকারী যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে প্রত্যক্ষভাবে মনোনীত করেছেন এবং পবিত্র কুরআন শরীফের প্রথম ও প্রধান উত্তরাধিকারী করেছেন। যেমন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “অতঃপর আমি কিতাবের উত্তরাধিকারী করলাম আমার বান্দাগণের মধ্য হতে যাঁদেরকে আমি মনোনীত করেছি। “ (পবিত্র সূরা ফাতির শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩২)
উক্ত আয়াত শরীফের তাফসীরে, ‘তাফসীরে মাযহারীতে’ উল্লেখ আছে, (“আমার বান্দাগণের মধ্য হতে”) এর অর্থ হলো হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম। আর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা হলেন পবিত্র কুরআন শরীফের প্রথম ও প্রধান উত্তরাধিকারী। কারণ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রত্যক্ষভাবে মনোনীত ও পছন্দনীয় বান্দা।
উক্ত আয়াত শরীফের তাফসীরে, ‘তাফসীরে মাযহারীতে’ আরো উল্লেখ আছে, “হযরত ছুহাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি শুনেছি- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম হলেন অগ্রগামী শাফায়াতকারী। উনারা উনাদের রব তায়ালা উনার নৈকট্যধন্য। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, যাঁর হাত মুবারকে আমার মহাসম্মানিত নূরুল আমর মুবারক (প্রাণ মুবারক), সেই সম্মানিত সত্তার কসম করে বলছি, হাশরের দিন উনারা উপস্থিত হবেন কাঁধে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে। উনারা সোজা গিয়ে জান্নাতের দরজায় করাঘাত করবেন। ফেরেশতারা জিজ্ঞাসা করবেন, আপনারা কে? উনারা বলবেন, আমরা মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম। ফেরেশতারা আবারো জিজ্ঞাসা করবেন, আপনাদের হিসাব কি সম্পন্ন হয়েছে? একথা শুনে মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা হাঁটুমুড়ে বসে পড়বেন এবং আকাশের দিকে হাত মুবারক উত্তোলন করে বলবেন, “আয় আমাদের মহান রব! আমরা আপনার সন্তুষ্টির আশায় ঘর-বাড়ী ছেড়ে পথে নেমেছি। পরিত্যাগ করেছি পিতা-মাতা, পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্ততি, সহায়-সম্পদ। তারপরেও কি আমাদেরকে হিসাব দিতে হবে? এর জবাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তখন উনাদেরকে স্বর্ণনির্মিত পাখা দিবেন। যা অলংকৃত থাকবে জবরজদ ও মনিমুক্তা দিয়ে। এই পাখাগুলোতে ভর করে উনারা উড়ে চলে যাবেন জান্নাতে। সুবহানাল্লাহ!
যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে খাছভাবে মনোনীত করেছেন, সেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মর্যাদাও বেমেছাল।
উক্ত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় হাদীছ শরীফে আরো উল্লেখ আছে, “হযরত ওয়াইমার ইবনে সাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে মনোনীত করেছেন এবং আমার জন্য হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকেও মনোনীত করেছেন। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার জন্য হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে কাউকে আমার আত্মীয় করেছেন আর কাউকে আমার জন্য খিদমতকারী নির্ধারণ করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে গালি দিবে ও সমালোচনা করবে তার উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত, ফেরেশতাগণের লা’নত, মানুষ ও সকল মাখলুকাতের লা’নত এবং তাদের কোন ফরয ও নফল ইবাদত মহান আল্লাহ পাক তিনি কবুল করবেন না। (কানযুল উম্মাল, মুযাহিরে হক্ব)
অতএব প্রমাণিত হলো যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত ও মর্যাদা-মর্তবার অধিকারী। সুতরাং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন সমালোচনা করা যাবে না। যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করবে তারা লা’নত প্রাপ্ত হয়ে, চির জাহান্নামী হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৮)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












