হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বদ মাযহাব, বদ আক্বীদা ও বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (২৩)
, ২৬ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৪ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৭ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা:
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এতই বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত ও মর্যাদা-মর্তবার অধিকারী যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাদীছ শরীফে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত বর্ণনা করেছেন। যেমন কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “এই সম্পদ (অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে সম্পদের মালিক করে দিয়েছেন উক্ত সম্পদ) অভাবগ্রস্ত (হযরত) মুহাজির (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের) জন্যও। যাঁরা (অর্থাৎ যে সকল ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম) নিজেদের ঘর-বাড়ী ও মাল-সম্পদ ছেড়ে হিজরত করেছেন। উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ও আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের উভয়ের খেদমত করেন। আর উনারাই তো সত্যবাদী। ” (সূরা হাশর শরীফ-আয়াত শরীফ ৮)
উক্ত আয়াত শরীফে এটাই প্রমাণিত হলো যে, সম্পদের হক্বদার হিসেবে অভাবগ্রস্ত হযরত মুহাজির ও আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাই অগ্রগণ্য। কারণ উনারা নিজের ঘর-বাড়ী, মাল-সম্পদ সমস্ত কিছুই পরিত্যাগ করে হিজরত করে অভাবগ্রস্ত হয়েছেন।
দ্বিতীয়তঃ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুগ্রহ এবং সন্তুষ্টি লাভের আশায় ঘর-বাড়ী, মাল-সম্পদ ছেড়ে হিজরত করেছেন।
তৃতীয়তঃ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খেদমত মুবারক করার জন্যই নিজের ঘর-বাড়ী, মাল-সম্পদ ছেড়ে হিজরত করেছেন।
চতুর্থতঃ মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে ঘোষণা করলেন যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা চরম সত্যবাদী।
কাজেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে যারা মিথ্যাবাদী বলবে, সমালোচনা করবে, তারা এই আয়াত শরীফ অস্বীকার করার কারণে কাট্টা কাফির হয়ে চির জাহান্নামী হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
উক্ত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় “তাফসীরে মাযহারীতে” আরো উল্লেখ আছে, “উনারা ছিলেন হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম: যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে নিজেদের ঘর-বাড়ী, সহায়-সম্পদ, আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্ততি ছেড়ে হিজরত করেছেন। ইসলামের পথে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে সহ্য করতে হয়েছিলো অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট। উনারা আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় শহীদ হওয়ার জন্য ব্যাকুল ছিলেন।
যদি তাই হয়, তাহলে ইসলামের পথে অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট সহ্য করাতো দূরের কথা, যারা সামান্য দানা-পানির লোভে দ্বীন ইসলাম উনাকে বিক্রি করে দিতে দ্বিধা-বোধ করছে না, তারা আবার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করার দুঃসাহস দেখায় কোন যুক্তিতে?
শুধু তাই নয়, যারা নিজেরাই চরম মিথ্যাবাদী, গুমরাহ তারা আবার চরম সত্যবাদী, হিদায়েতকারী, পথপ্রদর্শক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করার মত ধৃষ্টতা দেখানোর অধিকার পেলো কোথা থেকে?
সুতরাং, বিষয়টি আরো স্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করবে তারা কাট্টা কাফির হয়ে চিরজাহান্নামী হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৮)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












