হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
, ২১ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২১ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ২০ মে, ২০২৫ খ্রি:, ৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন,
فَاِنْ اٰمَنُوْا بِـمِثْلِ مَا اٰمَنْتُمْ بِهٰ فَقَدْ اهْتَدَوْا.
অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেরূপ সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন তদ্রƒপ যদি তোমরা সম্মানিত ঈমান মুবারক গ্রহণ করতে পারো তাহলে তোমরা হিদায়েত মুবারক লাভ করতে পারবে। (পবিত্র সূরা বাক্বারাহ : আয়াত শরীফ ১৩৭)
এ লিখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বে-নজীর মুহাব্বত মুবারক প্রকাশের কতিপয় দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
(২)
কেমন আছেন মহাসম্মানিত মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
দ্বীন ইসলাম উনার প্রাথমিক যুগ। মুসলমানদের সংখ্যা মাত্র ৪৮। তখন সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রকাশ্য ঘোষণার প্রয়োজনীয়তা কেউ অনুভব না করলেও সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি অনুভব করলেন পূর্ণরূপে। মহাসম্মানিত বাইতুল্লাহ শরীফ উনার পাশে প্রকাশ্যে হক্বের ঘোষণা করতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে আরজি করলেন তিনি।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, হে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম! আমাদের সংখ্যা তো কম। কিন্তু হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বারবার আবদার করতে লাগলেন, আরজু পেশ করতে লাগলেন।
একসময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মতি মুবারক প্রকাশ করেন।
সম্মতি মুবারক পেয়ে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বাইতুল্লাহ শরীফ উনার দিকে রওনা হলেন। মুসলমানগণ বাইতুল্লাহ শরীফ উনার দিকে চলতে লাগলেন, সেখানে দ্বীন ইসলাম উনার প্রকাশ্য ঘোষণা করতে।
সকলে উপস্থিত হওয়ার পর সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি লোকদের উদ্দেশ্যে বয়ান করার জন্য দাঁড়ালেন।
এ দৃশ্য দেখে মুশরিকরা ক্রোধে ফেটে পড়লো। কাফেরগুলি মুসলমানদের উপর হামলা শুরু করে দিলো। কাফেরদের জুুলুমের মুখে মুসলমানগণ গুরুতর আহত হলেন।
এ অবস্থা দেখে তামীম বংশের লোকেরা সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার দেহ মুবারককে কাপড়ে জড়িয়ে ধরে উনার বাড়িতে পৌঁছে দিলো। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার দৈহিক অবস্থার ব্যাপক অবনতি দেখে সকলে উনার ইন্তিকালের ব্যাপারে আশঙ্কা করলেন।
এমতাবস্থায় তামীম বংশের লোকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আবার খালি মাথায় বাইতুল্লাহ শরীফে প্রবেশ করলো এবং প্রকাশ্যে ঘোষণা দিলো যে, যদি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ইন্তেকাল হয়ে যায়, তাহলে আমরা অবশ্যই উতবা ইবনে রাবিয়াকে হত্যা করবো। এ ঘোষণার পর মক্কা শরীফে তোলপাড় শুরু হয়ে গেলো।
সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার কোনো হুঁশ ছিলো না। সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি স্বীয় ঠোঁট পর্যন্ত নাড়তে পারছিলেন না। অতঃপর হুঁশ আসার পর উনার মুখে সর্বপ্রথম যে কথা বের হলো, তা ছিলো- মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কেমন আছেন?
সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার মুখে একথা শুনে তামীম বংশের লোকদের অনেকেই মনঃক্ষুণœ হলো। তারা বিস্ময় প্রকাশ করে ফিরে চলে গেলো। কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বারবার জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কেমন আছেন?
উম্মে জামীল বিনতে খিতাব বললো- হ্যাঁ, তিনি ছিহহাতী শান মুবারকে (সুস্থতা শান মুবারকে) আছেন। ভালো আছেন, নিরাপদে আছেন। একথা শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি এতমিনান প্রকাশ করলেন, প্রশান্ত হলেন। তারপর বললেন- তিনি এখন কোথায় আছেন? একথা বলতে বলতে তিনি বিছানা থেকে উঠে বসলেন।
উম্মে জামীল বললো- তিনি এখন হযরত ইবনে আবী আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার গৃহ মুবারকে অবস্থান করছেন।
একথা শুনে তিনি বললেন- আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ না করে, আমি কোনকিছু খাবো না। একথা বলে তিনি বিছানা থেকে উঠার চেষ্টা করলেন। কিন্তু প্রচ- ব্যথার কারণে উঠতে সক্ষম হলেন না। তখন উম্মে জামীল উনাকে নিয়ে হযরত ইবনে আবি আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ারা আনহু উনার গৃহ মুবারকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট পৌঁছে দিলেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে দেখে এতো আনন্দিত শান মুবারক প্রকাশ করলেন যে, উনাকে মহাসম্মানিত নূরুত তাসকীন মুবারক (বুছা মুবারক) দিলেন। সুবহানাল্লাহ! (হায়াতুস ছাহাবাহ)
-মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন মুরাদী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৫)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত রজব মাস হলেন মহান আল্লাহ পাক উনার মাস
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত উম্মে সুরাইকা দাওসিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












