জীবনী মুবারক
১৩ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, মুজাহিদে মিল্লাত, শহীদে বালাকোট, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি (১১)
বিলাদত শরীফ: ১২০১ হিজরী বিছাল শরীফ: ১২৪৬ হিজরী বয়স মুবারক: ৪৫ বছর
, ২৩ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৯ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৮ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ০৩ ভাদ্র, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র হজ্জ পালন ও সম্মানিত রওজা শরীফ যিয়ারত মুবারক:
১২৩৬ হিজরী মোতাবেক, ইংরেজী ১৮২১ সালে হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এক বিশাল কাফেলাসহ পবিত্র হজ্জ পালনের জন্য হারামাইন শরীফের উদ্দেশ্যে গৃহ ত্যাগ করেন। পথের বিভিন্ন জায়গা যেমন ইলাহাবাদ, বেনারস, মির্জাপুর, চুনারগড়, গাজীপুর, দানাপুর, ফুলওয়ার শরীফ, আজিমাবাদ, কলিকাতা, তিব্বত প্রভৃতি জায়গা হতে উনার নিকট হাজার হাজার লোক এসে বাইয়াত হয়ে উনার কাফেলায় শরীক হয়। ১৮২২ সালের ১৬ই মে তিনি পবিত্র হারাম শরীফে প্রবেশ করেন। এই সময় পবিত্র হারামাইন শরীফের আলিম-উলামাগণ কেউ সরাসরি কেউ কাশ্ফের মাধ্যমে অবগত হয়ে হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট এসে বাইয়াত হন।
পবিত্র মক্কা শরীফের হজ্জ পর্ব সমাপনের পর তিনি পবিত্র মদীনা শরীফের দিকে রওয়ানা হন। এখানে হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত রওজা শরীফ যিয়ারত করেন। বাতেনীভাবে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট থেকে মহাসম্মানিত নিয়ামত মুবারক লাভ করেন। এখানেও পবিত্র মদীনা শরীফ উনার বহু শায়েখ, আলিম-উলামাগণ উনার নিকট বাইয়াত হন।
পবিত্র মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফের যে সমস্ত জায়গা তিনি যিয়ারত করেন তা হচ্ছে- জান্নাতুল মুয়াল্লা, আকাবার প্রান্তর, হুদায়বিয়া, জান্নাতুল বাকী, উহুদ প্রান্তর, মসজিদে কুবা, মসজিদে ক্বিবলাতাইন, মসজিদে খায়েফ, বাইয়াতে রিদওয়ান, ওয়াদীয়ে ছোগরা (যেখানে বদরী ছাহাবী হযরত আবূ উবাইদা বিন হারিস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পবিত্র মাজার শরীফ আছে) হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ সমস্ত বরকতময় ও পবিত্র জায়গা যিয়ারত করেন।
তরীকায়ে মুহম্মদিয়া:
তরীকায়ে মুহম্মদিয়া বা আওর মুহম্মদিয়া তরীকা কোন নতুন তরীকা নয়। বরং পাক ভারত উপমহাদেশে মশহুর তরীকাগুলোর যেমন, কাদেরিয়া, চীশ্তিয়া, নকশবন্দিয়া, মুজাদ্দেদিয়া, সোহরাওয়ার্দীয়া তরীকাগুলোর নির্যাস মাত্র। এই তরীকায় নতুন কোন সবক সন্নিবেশিত করা হয়নি। বরং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সূক্ষ¥তিসূক্ষ¥ মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণই হচ্ছে- এই তরীকার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সূক্ষ¥তিসূক্ষ¥ মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারকসমূহ পালনের ক্ষেত্রে হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে অগ্রগামী দেখা যায়।
হিন্দুস্থানের বড় বড় আলিম-উলামা উনাদের বাইয়াত গ্রহণ:
খলীফাতুল মুসলিমীন, আমিরুল মু’মিনীন, হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সুনাম ও খ্যাতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লো। উনার এক দৃষ্টি বা সামান্য ছোহবত মুবারকে বহু সাধনার কষ্ট লাঘব হতে লাগলো। সমস্ত সৃষ্টি উনার দিকে ঝুঁকে পড়লো। বিশেষ করে হিন্দুস্থানের বড় বড় আলেম-উলামা ও পীর-মুর্শিদগণ উনার ছোহবত মুবারক থেকে ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ হাছিল করার জন্য উনার ছোহবতে নিয়মিত বসতেন। উনার দরবার শরীফে হাজির হয়ে সকলেই নিজেকে ধন্য মনে করতেন। সুবহানাল্লাহ!
উনাদের মধ্যে ইমামুল হুদা, হযরত মাওলানা কারামত আলী জৈনপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মাওলানা আব্দুর রহীম বেলায়েতী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মাওলানা আব্দুল হাই রহমতুল্লাহি আলাইহি (হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জামাতা), হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পৌত্র হযরত মাওলানা ইসমাঈল শহীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজির মক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শায়েখ, হযরত নূর মুহম্মদ মিয়াঁজী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মাওলানা হাফেজ জামাল উদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি, কাজিউল কুজাত মাওলানা আব্দুল বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি, মাওলানা আব্দুল হাকিম রহমতুল্লাহি আলাইহি, মাওলানা শিহাবুদ্দীন শিয়ালকোর্ট রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মাওলানা শুজাত আলী রামপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রমুখ তৎকালীন বড় বড় আলেম-উলামাগণ উনারা উনাদের সমস্ত অস্তিত্ব বিলীন করে হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বাইয়াত হয়ে ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ হাছিল করে নিজেকে ধন্য মনে করলেন। (ইনশাআল্লাহ চলবে)
-মুহাদ্দিস আহমদ হুসাইন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












