“আত তাক্বউইমুশ শামসী”একটি নতুন সৌর সন (১)
, ০৯ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২০ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ০৬ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সৌর সন বা ক্যালেন্ডার হচ্ছে- যেখানে দিন, সপ্তাহ, মাসের সমন্বয়ে একটি বছরের সকল তারিখ উল্লেখ থাকে। কিন্তু বছর গণনা করা হয় সূর্যের সাপেক্ষে পৃথিবীর ঘূর্ণন অনুযায়ী।
মুসলমানগণ পূর্ব থেকেই হিজরী সন ব্যবহার করে আসছে। আর হিজরী সন গণনা করা হয় পৃথিবীর চারপাশে চাঁদের আবর্তনের সাপেক্ষে। হিজরী সন ব্যবহার করা (অর্থাৎ চন্দ্র মাস গণনা করা) খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সৌর সন ব্যবহার করাও শরীয়তসম্মত। বর্তমানে মানুষ যেহেতু খ্রিষ্টাব্দ সনে অভ্যস্ত তাই মুসলমানদের জন্য, মুসলমান রচিত একটি সৌর সনের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। কারণ মুসলমানদের অনেক আমল সূর্যের সাথে গণনা করতে হয় যেমন নামাযের ওয়াক্ত নির্ণয়, সাহরী-ইফতারের সময় নির্ণয়, পবিত্র হজ্জ উনার কিছু অনুষঙ্গ ইত্যাদি। তাই একটি সৌর সন অনুযায়ী মুসলমানদের আমলের বিষয়গুলো উল্লেখ থাকলে মুসলমানদের জন্য পালন করা সহজ হবে।
যদিও মুহম্মদ আল বিরুনী এবং মুহম্মদ ফতেউল্লাহ সিরাজী দুজনেই সৌর সন তৈরী করেছিলেন কিন্তু সেগুলো ছিল ত্রুটিপূর্ণ। একটি ত্রুটিহীন এবং পরিপূর্ণ অনুসরণীয় সৌর সন হচ্ছে আত তাক্বউইমুশ শামসী।
আরবীতে ‘তাক্বউইম’ অর্থ ক্যালেন্ডার বা সন আর ‘শামস’ অর্থ হচ্ছে ‘সূর্য’ আর দুয়ে মিলে হয়েছে, “আত তাক্বউইমুশ শামসী”। যখন কোনো নতুন মডেলের মোবাইল বাজারে আসে তখন কিন্তু মানুষ উৎসাহী হয়ে পড়ে তা কেনার জন্য, ব্যবহারের জন্য। তখন কেউ তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলে না। অথচ নতুন মোবাইল ব্যবহারের সাথে ঈমানের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু এই “আত তাক্বউইমুশ শামসী” ক্যালেন্ডার ব্যবহারের সাথে রয়েছে ঈমানের বিষয়, মুসলমানদের আত্মমর্যাদার বিষয়। কোন একটি কাফির রাষ্ট্র যখন কোন মুসলিম দেশ আক্রমণ করে তখন কিন্তু কেউ কাউকে শিখিয়ে দেয় না কোন দেশের পক্ষে কথা বলতে হবে। সকল মুসলমান মুসলিম দেশটিকে সাপোর্ট করেন। কারণ এই প্রীতি আমাদের রক্তের মধ্যে। এই শামসী ক্যালেন্ডার মুসলমান রচিত এবং হিকমতপূর্ণ, তাই কাফিরদের রচিত খ্রিষ্টাব্দ সন বাদ দিয়ে শামসী সন ব্যবহার করা উচিত।
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা ইহুদী-নাছারা ও মুশরিকদেরকে অনুসরণ অনুকরণ করো না। ”
এছাড়াও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুসরণ করবে সে ব্যক্তি তাদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে। ”
আর সে কারণেই পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অনুসরণের জন্যই খ্রিষ্টাব্দ সন বাদ দিয়ে শামসী সন ব্যবহার করা উচিত অর্থাৎ ফরয।
খালিক্ব, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন “তোমরা আমাকে স্মরণ করো আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করবো”।
মুসলমানদের অনেক আমল যেহেতু সূর্যের সাথে আর এক্ষেত্রে সৌর সন যেহেতু ইবাদতে সহায়ক ফলে এমন একটি সৌর সন ব্যবহার করা উচিত যার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার স্মরণ হয়। আর এক্ষেত্রে আত তাক্বউইমুশ শামসী ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই।
খ্রিষ্টাব্দ ক্যালেন্ডার তৈরি করেছে খ্রিষ্টানদের কথিত ধর্মযাজক, চরিত্রহীন, কাফির পোপ গ্রেগরী, যার একটি বিবাহ বহির্ভুত সন্তানও ছিল। তাহলে খ্রিষ্টাব্দ ক্যালেন্ডার ব্যবহার করলে কার স্মরণ হচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়। ফসলী সন, খ্রিষ্টাব্দ সন কোনোটাই মুসলমানরা ব্যবহার করে কাফিরদের স্মরণ করতে পারে না।
ফসলী সন তৈরি হয় শাসক আকবরের নির্দেশে। সে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ক্ষতি সাধনের লক্ষ্যে কয়েক ধর্মের সমন্বয়ে তৈরি করে দ্বীন-ই-ইলাহী। আর সেই ধর্মের অনুসারীরা হিজরী সন বাদ দেয়ার লক্ষ্যে ফসলী সন চালু করে।
অনেক ঐতিহাসিক মনে করে, তার সিংহাসন আরোহণের দিন মনে রাখার জন্যও এই সন চালু হয়। যে ব্যক্তি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে ধ্বংস করার কাজে নিয়োজিত ছিল তার নির্দেশে রচিত সৌর সন অর্থাৎ ফসলী সন অনুসরণের কোনোই প্রয়োজন মুসলমানদের নেই।
-আল হিলাল
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা-হুসনে যন পোষণ করা ঈমান
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৬)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (১)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহিলাদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ নির্দেশনা মুবারক- পর্দা পালন করা
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












