মহিলাদের ইলিম—তা’লীমের ফাযায়িল—ফযীলত:
“তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম যে নিজে পবিত্র কুরআন শরীফ শিক্ষা করে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়” (১০)
, ১৮ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৯ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ০৮ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
পবিত্র হাদীছ শরীফ সংরক্ষণ, চর্চা ও তা’লীম দানে মহিলাগণের অবদান:
পৃথিবীর চার মহাদেশের ৪০টির বেশী দেশ ভ্রমনকারী মরক্কোর বিখ্যাত মুসলিম পর্যটক ইবনে বতুতা সিরিয়ার রাজধানী দামেশকে থাকার সময় হযরত যয়নাব বিনতে আহমদ রহমতুল্লাহি আলাইহা ও অন্যান্য মুয়াল্লিমাদের নিকট পবিত্র হাদীস শরীফ উনার ইলম মুবারক লাভ করেন। দামেশকের বিখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনে আসাকির বলেন, তিনি ১২০ জন পুরুষ ও ৮০ জন নারী উনাদের নিকট ইলম মুবারক শিক্ষা করেন। ইমাম সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘রিসালাহ্’ গ্রন্থটি হাজার বিনতে মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার কাছে অধ্যয়ন করেন।
এ ছাড়াও যয়নাব বিনতে আল শা’রি রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি একাধিক প্রসিদ্ধ পবিত্র হাদীস শরীফ বিশারদ উনাদের থেকে পবিত্র হাদীস শরীফ অধ্যয়ন করেন এবং পরে উনার ছাত্রদেরকে এসব পবিত্র হাদীস শরীফ শিক্ষা দেন যাদের কেউ কেউ পরে অনেক সুখ্যাতি লাভ করেন। যেমন সুপরিচিত জীবন চরিত সম্বন্ধীয় অভিধান ‘ওয়াফাত আল্—‘আ‘ইয়ান’ এর লেখক ইবনে খাল্লিকান উনার ছাত্র। আরেকজন হচ্ছেন কারিমা যাকে তার সময়ে সিরিয়ার শ্রেষ্ঠ পবিত্র হাদীস শরীফ বিশারদ হিসেবে ধরা হয়।
হযরত ইবনে হাজার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘আল্—দুরার আল্—কামেনা’ গ্রন্থে ৮ম শতাব্দীর ১৭০ জন প্রখ্যাত ও মহিয়সী নারীর সংক্ষিপ্ত জীবনী উল্লেখ করেন। যাঁদের অধিকাংশই পবিত্র হাদীস শরীফ বিশারদ ছিলেন এবং যাঁদের অনেকের অধীনে তিনি নিজে ইলম—তালীম মুবারক অর্জন করেছেন। এসব মহীয়সী নারীর কয়েকজন আবার ঐ সময়ের সবচেয়ে পবিত্র হাদীস শরীফ বিশারদ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ জুয়াইরিয়া বিনতে আহমদ রহমতুল্লাহি আলাইহা—উনার নাম উল্লেখ করা যেতে পারে, যিনি পুরুষ ও নারী উভয় পবিত্র হাদীস শরীফ বিশারদ উনাদের নিকট থেকে পবিত্র হাদীস শরীফ অধ্যয়ন করেছেন এবং তিনি নিজেও ঐ সময়ের বড় বড় মাদরাসায় পবিত্র হাদীস শরীফ উনার দরস মুবারক দিতেন।
হযরত ইবনে হাজার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমার নিজের কিছু শিক্ষক এবং সমসাময়িক অনেকেই উনার জ্ঞানগর্ভ দরস মুবারক শুনতেন। ’ আয়েশা বিনতে আবদ আল্—হাদী রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি দীর্ঘদিন ইবনে হাজারের শিক্ষক ছিলেন। উনাকে উনার সময়ের সর্বোচ্চ মানের পবিত্র হাদীস শরীফ বিশারদ হিসেবে গণ্য করা হত এবং অনেক ছাত্রই দীর্ঘ পথ সফর করে উনার কাছে দ্বীনের সত্যজ্ঞান লাভ করতে ছুটে আসতেন।
নবম শতাব্দীতে পবিত্র হাদীস শরীফ উনার উপর নারী বিশেষজ্ঞদের সকল তথ্য পাওয়া যায় মুহম্মদ ইবনে আব্দুর রহমান আল্—সাখাবী রচিত “আদ—দ্বাউ উল—লামে” গ্রন্থে। এছাড়াও আবদ আল্—আযীয ইবনে উমর উনার ‘মু‘জাম আল—শুয়ূখ’ গ্রন্থটিতে ১৩০ জন নারী আলিমা, ১১০০—এর বেশী লেখকের শিক্ষকদের নাম উল্লেখ করেছেন। এসব নারীদের অনেকে পবিত্র হাদীস শরীফ উনার উপর পাণ্ডিত্য অর্জন করে ঐ সময়ে প্রখ্যাত ছিলেন। তন্মধ্যে হযরত উম্মে হানী রহমতুল্লাহি আলাইহা, হযরত রহমতুল্লাহি আলাইহা উল্লেখযোগ্য। যিনি তার শৈশবেই পবিত্র কুরআন শরীফ উনার হাফেযা ছিলেন এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আইন, ইতিহাস ও ব্যাকরণে বিশদ জ্ঞান লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি পবিত্র হাদীস শরীফ শাস্ত্রে গভীরতা লাভের প্রত্যাশায় কায়রো ও পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে গিয়ে ঐ সময়ের শ্রেষ্ঠ পবিত্র হাদীস শরীফ বিশারদদের থেকে ইলম মুবারক লাভ করেন। তিনি নূনপক্ষে ১৩ বার হজ্জ সম্পাদন করেন। তিনি কায়রোর বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পবিত্র হাদীস শরীফ উনার উপর ব্যাপক দরস পরিচালনা করেন। অনেককে উনার পক্ষ থেকে পবিত্র হাদীস শরীফ প্রচারের ‘ইজাযত্’ বা অনুমতি প্রদান করেন।
—উম্মু মুদ্দাস্সির।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












