আজ মহিমান্বিত পবিত্র ২রা রমাদ্বান শরীফ! যা ইবনু রসূলিল্লাহ, আউওয়ালু আওলাদি রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুল বাশার, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস।
গোটা উম্মাহ ও মুসলিম বিশ্বের প্রত্যেক সরকারের উচিত- যথাযথ ভাবমর্যাদা ও ভাবধারার সাথে এ দিবস মুবারক পালন করার মাধ্যমে ব্যক্তি, সমাজ তথা রাষ্ট্রীয় জীবনে পূর্ণ রহমত প্রাপ্ত হয়ে শান্তি ও সমৃদ্ধির জীবন যাপন করা।
এডমিন, ০২ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৫ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ২৫ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ১১ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সম্পাদকীয়

সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
আজ মহিমান্বিত পবিত্র ২রা রমাদ্বান শরীফ। ইবনু রসূলিল্লাহ, আউওয়ালু আওলাদি রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুল বাশার, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার প্রায় সাড়ে ১২ বছর পূর্বে পবিত্র ২রা রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র মক্কা শরীফে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- ইবনু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় মুবারক হচ্ছেন, তিনি হলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, মহাসম্মানিত ‘আবনা’ (ছেলে) আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
প্রসঙ্গত, মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা যেভাবে ঈমান; অনুরূপভাবে হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহমুস সালাম উনাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারকও হচ্ছে পবিত্র ঈমান। সুতরাং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ও উনাদের মুহব্বত মুবারক হাছিল করতে না পারলে কোনো মুসলমান ঈমানদার হতে পারে না।
কারণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো মুসলমান ব্যক্তির অন্তরে পবিত্র ঈমান দাখিল হবে না (হাক্বীক্বীভাবে ঈমানদার হবে না), যতক্ষণ পর্যন্ত সে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্য আমার সম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক না করবে।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ, তাফসীরে ইবনে কাছীর)
তাছাড়া মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি জানিয়ে দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না। (আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়।) তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য ফরয হচ্ছে- আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের মুবারক গোলামীতে আনজাম দেয়া।” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
এ পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মিছদাক্ব হচ্ছেন- ইবনু রসূলিল্লাহ, আউওয়ালু আওলাদি রসূলিল্লাহ, র্কুরতু আইনি রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুল বাশার, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুল বাশার, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার দিবস ও উনার বেমেছাল শান-মান মুবারক, মর্যাদা মুবারক, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক সম্পর্কে মুসলিম উম্মাহ চরম বেখবর। অথচ উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সুমহান দিবসে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আলাদাভাবে রহমত মুবারক, বরকত মুবারক, সাকীনা মুবারক ও ইহসান মুবারক যমীনে নাযিল করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
কিন্তু সরকার অথবা জনগণ তথা সাধারণ মুসলমানগণ এসব বিষয় উপলব্ধি না করার কারণেই আজ ওৎপ্রোতভাবে বিবিধ খোদায়ী আযাব-গযবে ভারাক্রান্ত।
উল্লেখ্য রহমত নাযিলের বিপরীত হলো রহমত উঠে যাওয়া। রহমত উঠে যাওয়ার বিষয় যে শুধু খাদ্যদ্রব্য, ফল-ফসলের ক্ষেত্রে হয় বিষয়টি তা নয়। রহমত রাষ্ট্র, সমাজ এমনকি ব্যক্তি পর্যায়ে থেকেও উঠে যেতে পারে। বলাবাহুল্য আজ ভয়ানকভাবে আমরা সে ভীষণ বিপর্যস্ত অবস্থাটাই দেখছি।
রাষ্ট্র আজ তথাকথিত বৈশ্বিক সংকটে নিপতিত। বৈশ্বিক হুমকী-ধামকীতে বিরক্ত। ডলার সংকটে অর্থনীতি টালমাতাল সমাজ জীবনে পরকীয়া, দূর্নীতি, অনাচার, দূর্ঘটনা ইত্যাদিতে ক্ষত-বিক্ষত, শিল্পপতি, ব্যবসায়ীরা আজ নূন্যতম মানবিকতা দয়া, সহমর্মিতা শুন্য।
ভেজাল, দূর্নীতি, মুনাফাখোরী, মজুদদারিতে জনজীবন বিধ্বস্ত। কিন্তু এর বিপরীতে যদি সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে রহমতের ফাল্গুধারা প্রবাহিত থাকতো তাহলে ব্যক্তি, সমাজ রাষ্ট্র এভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতো না।
সাধারণভাবে আল্লাহওয়ালাদের আলোচনা করলেই সেখানে রহমত নাযিল হয়। সেক্ষেত্রে আউওয়ালু আওলাদি রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আলোচনায় এমন অঝোর ও অব্যক্ত, অবর্ণনীয় রহমত প্রাপ্তি সম্ভব যা শুধু আমাদের দুনিয়াবী জীবনের শান্তি ও সমৃদ্ধিতেই শেষ নয়। পাশাপাশি পরকালীন নাযাত ও নেয়ামত তথা জান্নাত হাছিলও সম্ভব হবে। ইনশাআল্লাহ!
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)