আত্ব-তাক্বউইমুশ শামসী প্রণয়নের প্রেক্ষাপট: ফসলী সনসহ প্রচলিত সৌর বর্ষপঞ্জিগুলো পরিত্যাজ্য হওয়ার কারণ
, ১৭ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৪ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০৬ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ফসলী সন পরিহার করার কারণ:
ফসলী সন তৈরি হয় মুঘল শাসক আকবরের নির্দেশে। সে মুসলমানদের হিজরী সন বাদ দেবার জন্যই এই বাংলা সন চালু করেছিলো। অনেকে বলে তার সিংহাসন আরোহণের দিন মনে রাখার জন্যই এই সন চালু করে। যে ব্যক্তি দ্বীন-এ-ইলাহী নামক নতুন একটি ধর্ম তৈরি করে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে ধ্বংস করার কাজে নিয়োজিত ছিল তার নির্দেশে রচিত সৌর সন অনুসরণের কোনই প্রয়োজন মুসলমানদের নেই।
আমাদের বাংলা ভাষায় অনেক হিন্দুয়ানী শব্দ আছে সেক্ষেত্রে কি হবে? মুশরিকরা গরুকে বলে মা আর মায়ের অংশকে বলে মাংস। যেহেতু মুসলমানগণ গরুকে মা মনে করে না তাই তার অংশকে মাংস বলতে পারে না। আবার তরকারীর শুরাকে তারা ঝোল বলে। এই ঝোল এসেছে জল থেকে। এরকম অনেক শব্দ আছে যা মুশরিকদের নিজেদের শব্দ, মুসলমানগণ তা ব্যবহার করতে পারে না। অর্থাৎ বাংলা ভাষায় হিন্দুয়ানী শব্দও পরিত্যাজ্য, দেব-দেবীর নাম উচ্চারণও পরিত্যাজ্য।
প্রচলিত সৌরবর্ষপঞ্জিগুলো পরিত্যাজ্য হওয়ার কারণ:
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার একটি নিজস্ব স্বকীয়তা আছে। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ, এখানে অপূর্ণতার কোন অবকাশ নেই। তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلْيَوْمَ اَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ
অর্থ: “আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম। ” (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩)
যেহেতু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম পূর্ণ। সেহেতু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নিয়ম-নীতি ব্যতিত অন্য কোন নিয়ম-নীতি বা রীতি গ্রহণ করার ব্যাপারে মুসলমানদের হুশিয়ার করে দেয়া হয়েছে।
তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَنْ يَّبْتَغِ غَيْرَ الْاِسْلَامِ دِيْنًا فَلَنْ يُّقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِى الْاٰخِرَةِ مِنَ الْـخَاسِرِيْنَ
অর্থ: “যে ব্যক্তি পবিত্র দ্বীন ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন বা নিয়ম-নীতি তালাশ করে, তা কখনোই তার থেকে গ্রহণ করা হবে না এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلَا تُطِعِ الْكَافِرِيْنَ وَالْمُنَافِقِيْنَ
অর্থ: “তোমরা কাফির ও মুনাফিক্বদের অনুসরণ অনুকরণ করো না। ” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১ ও ৪৮)
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَمرِو بْنِ شُعَيْبِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ اَبِيْهِ عَنْ جَدّهٖ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا لاَتَشَبَّهُوْا بِالْيَهُوْدِ وَلَا بِالنَّصَارٰى
অর্থ: “তাবিয়ী হযরত আমর বিন শুয়াইব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পিতা হতে তিনি উনার দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমাদের ভিন্ন অন্য জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। কাজেই আপনারা ইয়াহুদী এবং নাছারাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করবেন না। ” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ ৩৯৯ পৃষ্ঠা)
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَر رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত অর্থাৎ তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে। ” (আবূ দাঊদ শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ)
কাজেই কোন অবস্থাতেই কাফির-মুশরিকদের অনুসরণ ও অনুকরণ করা অর্থাৎ বিধর্মীদের দ্বারা প্রবর্তিত পদ্ধতি, আইন-কানুন ও তর্জ-তরীক্বা অবলম্বন করা সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ও হারাম।
আর পৃথিবীতে প্রচলিত বিভিন্ন সৌরবর্ষপঞ্জি ব্যবহারের নিয়ম-কানুন যেহেতু বিধর্মীদের দ্বারা প্রবর্তিত। এছাড়াও এই প্রচলিত বিভিন্ন সৌরবর্ষপঞ্জির মাধ্যমে মুসলমানরা বিধর্মীদের বিভিন্ন দেব-দেবীর নাম স্মরণ করতে বাধ্য হয়। নাঊযুবিল্লাহ! তাই মুসলমানদের জন্য সার্বিকভাবেই প্রচলিত সৌরবর্ষপঞ্জিগুলো ব্যবহার করা হারাম। (সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












