আত তাক্বউইমুশ শামসী সনের ইতিবৃত্ত
, ২৮ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৭ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ১৬ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ০১ ভাদ্র শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
![আত তাক্বউইমুশ শামসী সনের ইতিবৃত্ত](https://www.al-ihsan.net/uploads/1692131534_399227_196.jpg)
বর্তমানে সমগ্র পৃথিবীতে প্রচলিত সৌরবর্ষপঞ্জিটি খ্রিস্টানদের তথাকথিত ধর্মযাজক পোপ গ্রেগরির নামানুসারে “গ্রেগরিয়ার বর্ষপঞ্জি” নামে পরিচিত। তবে আমাদের দেশে এই বর্ষপঞ্জিটি “ইংরেজি ক্যালেন্ডার” নামেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পোপ গ্রেগরির প্রকৃত নাম উগো বেনকোমপাগনাই; সে ছিল ১৩তম পোপ। ১৫৮২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, গ্রেগরি একটি ডিক্রি জারীর মাধ্যমে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি চালু করে। সে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় গুরু হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও প্রকৃতপক্ষে সে ছিল একজন চরিত্রহীন মানুষ। সে ছিল একজন অবৈধ সন্তানের জনক। যার নাম ইতিহাসে লেখা আছে জিয়াজোমো বেনকোমপাগনাই। পরবর্তীতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার এই অবৈধ সন্তানকে সে আর্মির প্রধান এবং তারপরে ডিউক পদে অধিষ্ঠিত করেছিলো। নাঊযুবিল্লাহ!
এই পোপ গ্রেগরী তার শাসনামলে পুর্তগালের রাজা সিবাসতিয়ানকে প্ররোচিত করেছিলো মরক্কোর বাদশাহ আব্দুল মালিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে। যা তার ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাবের সামান্য নমুনা মাত্র।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির মাধ্যমে গ্রিক দেব-দেবীর স্মরণ :
এই বর্ষপঞ্জির ৬টি মাসের (জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারী, মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন) নামকরণ করা হয়েছে দেব-দেবীর নামে, ৪টি মাসের (সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর) নামকরণ হয়েছে রোমান শব্দ থেকে আর ২টি মাসের (জুলাই ও অগাস্ট) নামকরণ করা হয়েছে দুই রোমান শাসকের স্মরণে। মাসের নামের দ্বারা দেব-দেবী ও রোমান শাসকের নাম স্মরণ করা হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
ঔধহঁধৎু (জানুয়ারী) : রোমে ‘জানুস’ নামক এক দেবতা ছিল। রোমবাসী তাকে সূচনার দেবতা বলে মানত। যে কোনো কিছু করার আগে তারা এ দেবতার নাম স্মরণ করত। তাই বছরের প্রথম মাসটিও তার নামে রাখা হয়েছে।
ঋবনৎঁধৎু (ফেব্রুয়ারী) : রোমান দেবতা ‘ফেব্রুস’-এর নাম অনুসারে ফেব্রুয়ারী মাসের নামকরণ করা হয়েছে।
গধৎপয (মার্চ) : রোমান যুদ্ধ-দেবতা ‘মরিস’ এর নামানুসারে তারা মার্চ মাসের নামকরণ করে।
অঢ়ৎরষ (এপ্রিল) : কেউ বলে এ শব্দটি এসেছে ধঢ়যৎড়ফরঃব (ধঢ়যৎড়ং) অথবা ধঢ়ৎঁ দেবীর নাম থেকে। কেউ বলে এপ্রিল নাম এসেছে একজন কাল্পনিক দেবতা ধঢ়বৎ বা ধঢ়ৎঁং থেকে।
গধু (মে) : রোমানদের আলোক দেবী ‘মেইয়ার’-এর নামানুসারে মাসটির নাম রাখা হয় মে।
ঔঁহব (জুন) : রোমানদের নারী, চাঁদ ও শিকারের দেবী ছিল ‘জুনো’। তার নামেই জুনের সৃষ্টি।
ঔঁষু (জুলাই) : জুলিয়াস সিজারের নামানুসারে জুলাই মাসের নামকরণ।
অঁমঁংঃ (আগস্ট) : অগস্টাস সিজার বছরকে ঢেলে সাজানোর পর আগস্ট মাসটি তার নিজের নামে রাখার জন্য সিনেটকে নির্দেশ দেয়। সেই থেকে শুরু হয় আগস্ট মাস।
ঝবঢ়ঃবসনবৎ (সেপ্টেম্বর) : সেপ্টেম্বর শব্দের শাব্দিক অর্থ সপ্তম মাস। কিন্তু সিজার বর্ষ পরিবর্তনের পর তা এসে দাঁড়ায় নবম মাসে। তারপর এটা কেউ পরিবর্তন করেনি।
ঙপঃড়নবৎ (অক্টোবর) : ‘অক্টোবর’-এর শাব্দিক অর্থ বছরের অষ্টম মাস। সেই অষ্টম মাস ক্যালেন্ডারে এখন স্থান পেয়েছে দশম মাসে।
ঘড়াবসনবৎ (নভেম্বর) : ‘নভেম’ শব্দের অর্থ নয় (৯)। সেই অর্থানুযায়ী তখন নভেম্বর ছিল নবম মাস। জুলিয়াস সিজারের কারণে আজ নভেম্বরের স্থান এগারতে।
উবপবসনবৎ (ডিসেম্বর) : ল্যাটিন শব্দ ‘ডিসেম’ অর্থ দশম। সিজারের বর্ষ পরিবর্তনের আগে অর্থানুযায়ী এটি ছিল দশম মাস। কিন্তু আজ এ মাসের অবস্থান ক্যালেন্ডারের শেষ প্রান্তে।
এছাড়া এই বর্ষপঞ্জির প্রতিটি দিনেরও নামকরণ করা হয়েছে দেব-দেবীর নামে। নাঊযুবিল্লাহ! যেহেতু রোমানরা গ্রহের সাথে দেবতার সম্পর্ক করতো; তাই তাদের সপ্তাহের দিনে নামগুলো ছিল এরূপ-
ঝঁহফধু (সানডে)- উধু ড়ভ এড়ফ (বিধাতার দিন)। নাঊযুবিল্লাহ! দক্ষিণ ইউরোপের সাধারণ ‘লোকেরা বিশ্বাস করত এবং ভাবত যে একজন দেবতা রয়েছে যে শুধুমাত্র আকাশে গোলাকার আলোর বল অঙ্কন করে। ল্যাটিন ভাষায় যাকে বলা হয় ঝড়ষরং ‘সলিস’। এর থেকেই উরবং ঝড়ষরং ‘ডাইচ সলিস’ অর্থাৎ সূর্যের দিন। উত্তর ইউরোপের লোকেরা এই দেবতাকে ডাকত ঝঁহহধফধবম ‘সাননানডায়েজ’ নামে। যা পরবর্তীতে বর্তমান সান ডে-তে রূপান্তরিত হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
গড়হফধু (মানডে)- গড়ড়হ’ং ফধু (চাঁদের দেবীর দিন)। নাঊযুবিল্লাহ! এই নামের সাথেও দক্ষিণ ইউরোপের লোকেরা জড়িত। রাতের বেলায় আকাশের গায়ে রূপালী বল দেখে তারা ডাকত খঁহধ ‘লুনা’ নামে। ল্যাটিন শব্দ খঁহধবফরবং ‘লুনায়েডাইস’। উত্তর ইউরোপের লোকেরা ডাকত গড়হধহফধবম ‘মোনানডায়েজ’। এ মানডে কিন্তু মোনানডায়েজ থেকে রূপান্তর হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
ঞঁবংফধু (টুইসডে)- দেবতা ঞর-িএর নাম থেকে। নাঊযুবিল্লাহ! রোমানরা বিশ্বাস করত যে, ঞরি ‘টিউ’ নামক একজন দেবতা আছে যে যুদ্ধ দেখাশুনা করে। তারা ভাবত যারা টিউকে আশা করত টিউ তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করত যুদ্ধের ময়দানে এবং যারা পরলোক গমন করেছে তাদেরকে টিউ পাহাড় থেকে নেমে একদল মহিলা কর্মী নিয়ে বিশ্রামের জায়গা ঠিক করত। লোকেরা এই ‘টিউ’ দেবতার সম্মানে একদিনের নাম করে ঞরবিংফধবম ‘টিউয়েজডায়েজ’। যার ইংরেজি অর্থ টুইস ডে। নাঊযুবিল্লাহ!
ডবফহবংফধু- গবৎপঁৎু দেবতার নাম থেকে। বুধবারের ইংরেজি রূপ ডবফহবংফধু, দেবতাদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ‘উডেন’ বলে দক্ষিণ ইউরোপের লোকেরা ভাবত। সে সারা দিন ঘুরে জ্ঞান লাভ করতো যার জন্য তার একটি চোখ হারাতে হয়েছিল। এই হারানো চোখকে সে সবসময় লম্বাটুপি দিয়ে আবৃত করে রাখতো। দুটো পাখি উডেনের গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করত, তারা উডেনের কাঁধে বসে থাকত। রাতে তারা সারা পৃথিবীর ঘটনাবলী উডেনকে শুনাত। এভাবেই উডেন সারা পৃথিবীর খবর শুনতে সক্ষম হয়। এজন্য লোকেরা নাম রাখল ডবফহবংফধবম ‘উডেনেসডায়েজ’। যা বর্তমান ওয়েডনেস ডে নামে পরিচিত। নাঊযুবিল্লাহ!
ঞযঁৎংফধু- ঞযড়ৎ দেবতার নাম থেকে। বৃহস্পতিবারের ইংরেজি রূপ ঞযঁৎংফধু, বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকানোর সম্পর্ক না জানার ফলে মানুষ মনে করত যে, বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকানোর জন্য একজন দেবতা দায়ী। তারা শুধু আলো জ্বলতে ও বিদ্যুৎ চমকাতে দেখত। তারা দেবতার নাম রাখে ঞযড়ৎ ‘থর’ যাকে ঞযঁহফবৎও বলা হয়। জার্মান বজ্র-দেবতা থর-এর রোমান শব্দ ঔঁঢ়রঃবৎ ‘জুপিটার’ এবং গ্রীক শব্দ ঔবঁং ‘জিউস’। তাদের মধ্যে এই অন্ধ বিশ্বাস ছিল যে, দেবতা থর যখন রাগান্বিত হয় তখন সে রাগে আকাশে একটা হাতুড়ি নিক্ষেপ করে দুটি ছাগলের গাড়িতে বসে। ছাগলের গাড়ি চাকার শব্দ হচ্ছে বজ্রপাত ও হাতুড়ির আঘাত হচ্ছে বিদ্যুৎ চমকানো। থরের প্রতি সম্মান রক্ষার্থে তারা সপ্তাহের একটি দিনের নাম রাখে ঞযড়ৎবংফধবম ‘থরেসডায়েজ’। যাকে আজ থার্স ডে বা বৃহস্পতিবার বলা হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
ঋৎরফধু- দেবী ঋৎরমম-এর নাম থেকে, শুক্রবারকে ইংরেজিতে বলা হয় ঋৎরফধু, রোমানরা বিশ্বাস করত যে, ঙফরহ ‘ওডিন’ একজন শক্তিশালী দেবতা। তার স্ত্রী দেবী ফ্রিগ। প্রকৃতির দেবী ভালোবাসা ও বিবাহের দেবীও ছিল ফ্রিগ। এই জন্য লোকেরা বাকি একটি দিনের নাম ঋৎরমফধবম ‘ফ্রিগডায়েজ’ বা ফ্রাইডে রাখে। নাঊযুবিল্লাহ!
ঝধঃঁৎফধু- শনি গ্রহের (ঝধঃঁৎহ) সম্মানে। নাঊযুবিল্লাহ! শনিবারের ইংরেজিতে বলা হয় ঝধঃঁৎফধু, রোমান আমলের লোকেরা এই বলে বিশ্বাস করত যে, চাষাবাদের জন্য ‘স্যাটার্ন’ নামের একজন দেবতা আছে। যার হাতে আবহাওয়া ভালো-খারাপ করা লেখাটি আছে। তাই তাকে সম্মান করার জন্যই তার নামে একটি গ্রহের সাথে সপ্তাহের একটি দিনের নাম ঝধঃঁরফধবম ‘স্যাটর্নিডায়েজ’ রাখা হয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে স্যাটার্নের দিন। বর্তমানে তা ‘স্যাটারডে’ নামেই পরিচিত। নাঊযুবিল্লাহ!
মুসলমান উনাদের জন্য এভাবে গ্রহ-নক্ষত্র, দেব-দেবীর নামানুসারে দিনের নাম ব্যবহার করা কুফরী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সঙ্গে কখনই মুহব্বত করা ও সাদৃশ্য রাখা যাবে না
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অন্যায়কে ঘৃণা না করলে ঈমানদার থাকা যায় না
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তা’বীয ও ঝাড় ফুঁক সম্পর্কে শরয়ী ফায়সালা (৪)
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)