আলোচনায় বা লেখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইসমে যাত বা নাম মুবারক বারবার বলা ও লেখা সম্পূর্ণ আদবের খিলাফ
, ২২ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৮ রবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০২ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
(১ম পর্বের পর)
(৪-৭) এছাড়াও মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুয্যাম্মিল শরীফ উনার শুরুতে- يَااَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ, সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুদ্দাছ্ছির শরীফ উনার শুরুতে- يَااَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ, সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইয়াসীন শরীফ উনার শুরুতে- يس এবং সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ত্ব-হা শরীফ উনার শুরুতে- طه এবং আরো অনেক স্থানেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক দ্বারা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অত্যন্ত মুহব্বতে, তা’যীম-তাকরীম এবং সম্মানের সাথে সম্বোধন মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে এভাবেই সুন্দর সুন্দর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক দ্বারা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অত্যন্ত মুহব্বত, তা’যীম-তাকরীম এবং সম্মানের সাথে সম্বোধন মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
কিন্তু বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে- নামধারী আলিম, বক্তা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলেই তাদের আলোচনায়, লিখনীতে, কথা-বার্তায় সব স্থানেই বারবার সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক বলে থাকে ও লিখে থাকে। এমনকি সেখানে তারা কোনো আদবও রক্ষা করে না। নাঊযুবিল্লাহ! তারা একে অপরকে যেভাবে সম্বোধন করে সেভাবেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন করে থাকে। নাঊযুবিল্লাহ! যেটা চরম আদবের খিলাফ এবং ঈমান নষ্ট হওয়ার কারণ। কেননা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে সামান্য থেকে সামান্যতম বেয়াদবী করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। নাঊযুবিল্লাহ!
আর স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই নিষেধ করেছেন উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মানুষ যেভাবে একে অপরকে সম্বোধন করে সেভাবে সম্বোধন করতে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَا تَـجْعَلُوْا دُعَآءَ الرَّسُوْلِ بَيْنَكُمْ كَدُعَآءِ بَعْضِكُمْ بَعْضًا
অর্থ: তোমরা পরস্পর পরস্পরকে যেভাবে সম্বোধন করে থাকো, সেভাবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করো না। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা নূর শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৩)
এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দা-বান্দী, উম্মত, কায়িনাতবাসী সবাইকে নিষেধ করে দিয়েছেন যে, তারা একে অপরকে যেভাবে সম্বোধন করে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যেন সেভাবে সম্বোধন মুবারক না করে। অর্থাৎ উনাকে অত্যন্ত মুহব্বত ও আদবের সাথে সম্মান মুবারক বজায় রেখে সম্বোধন মুবারক করতে হবে। উল্লেখিত সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় তাফসীর গ্রন্থসমূহে বিষয়টা আরো স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে।
হযরত কাতাদাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বলেন-
اَمَرَ اللهُ اَنْ يُّهَابَ نَبِيَّه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاَنْ يُّبَجَّلَ وَاَنْ يُّعَظَّمَ وَاَنْ يُّفَخَّمَ وَيُشَرَّفَ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তা’যীম মুবারক করার জন্য, সম্মান মুবারক করার জন্য, মর্যাদা মুবারক দেয়ার জন্য এবং উনার মহত্ম ও আভিজাত্য মুবারক প্রকাশ করার জন্য আদেশ মুবারক করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ১১/১২৮)
হযরত মুজাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
اَمَرَهُمْ اَنْ يَّقُوْلُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِىْ لِيْنٍ وَتَوَاضُعٍ وَلَا يَقُوْلُوْا يَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِىْ تَجَهُّمٍ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি মু’মিনদেরকে আদেশ মুবারক করেছেন, অত্যন্ত নমনীয়তা ও বিনয়ের সাথে ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে সম্বোধন মুবারক করার জন্য। আর বিষন্নতা বা বিরক্তীর সাথে উনার মহাসম্মানিত ইসমে যাত মুবারক ধরে সম্বোধন করতে নিষেধ করেছেন। ” (তাফসীরে মুজাহিদ ২৭১ পৃষ্ঠা, তাফসীরে দুররে মানছূর ১১/১২৮)
‘তাফসীরে মাক্বাতিল’ উনার মধ্যে বর্র্ণিত রয়েছে-
يَقُوْلُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ لَا تَدْعُوا النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِاِسْمِه يَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَا اِبْنَ عَبْدِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا كَلَّمْتُمُوْهُ كَمَا يَدْعُوْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا بِاِسْمِه يَا فُلَانُ وَيَا اِبْنَ فُلَانٍ وَلكِنْ عَظَّمُوْهُ وَشَرَّفُوْهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقُوْلُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا نَبِىَّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উনার সম্মানিত নাম মুবারক ধরে- ইয়া মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে অথবা ইয়া ইবনু আব্দিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে সম্বোধন করো না। যেমনিভাবে তোমরা পরস্পর কথা বলার সময় একে অপরকে হে অমুক বা হে অমুকের পুত্র অমুক বলে সম্বোধন করে থাকো। বরং তোমরা উনাকে অত্যন্ত তা’যীম-তাকরীম মুবারক ও সম্মান মুবারক উনার সাথে সম্বোধন মুবারক করো। তোমরা বলো ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইয়া নাবিইয়াল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!” (তাফসীরে মাক্বাতিল ইবনে সুলাইমান ২/৪২৮)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












