ইনশাল্লাহ মুসলমানগণই স্বাবলম্বী হবেন
, ২৭ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৫ আউওয়াল, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৪ জুন, ২০২৫ খ্রি:, ১০ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
كَتَبَ اللهُ لَأَغْلِبَنَّ أَنَا وَرُسُلِي إِنَّ اللهَ قَوِيٌّ عَزِيزٌ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন যে, আমি ও আমার সম্মানিত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাই বিজয়ী হবো। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি অতিশয় শক্তিমান, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। (পবিত্র সূরা মুজাদালা শরীফ-২১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সমস্ত কায়িনাতের মালিক। আর মহান আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ তথা হাকীকী মু’মিনগণ সেই ওয়ারিসত্বে সারা কায়িনাতের মালিক। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
أَنَّ الْأَرْضَ يَرِثُهَا عِبَادِيَ الصَّالِحُونَ
অর্থ: আমার নেককার বান্দাগণই পৃথিবীর উত্তরাধিকারী হবেন। (পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ-১০৫)
অর্থ-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার সৌন্দর্য। কাজেই সন্তান-সন্ততি তথা সমস্ত মুসলমানকে যেমন একতাবদ্ধ হতে হবে তেমনি তাদেরকে অর্থ সম্পদশালী হতে হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا
অর্থ: তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম-আহকাম ও আদেশ-নির্দেশ মুবারককে সম্মিলিতভাবে শক্ত করে ধরো। বিচ্ছিন্ন হবে না। (সূরা আলে ইমরান শরীফ-১০৩)
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلْاِقْتِصَادُ فِي النَّفَقَةِ نِصْفُ الْمَعِيْشَةِ
অর্থ: খরচের ক্ষেত্রে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা (মিতব্যয়িতা হওয়া) সম্পদের অর্ধেক। (তারিখুল বাগদাদ-১১/১২, লিসানুল মীযান ৫/২৩৩, মু’জামুল আওসাত-৬৭৪৪, শুয়াবুল ঈমান -৬৫৬৮, মুসনাদুস শিহাব-৩৩)
প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ করা তথা অপব্যয়ের অভ্যাস অতি নিন্দনীয় ও দারিদ্রতার কারণ। যারা প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ করে তারা পরমুখাপেক্ষী হয়। আর যারা পরমুখাপেক্ষী তারা নিজেরাই নিজের মান সম্মান নষ্ট করে। তারা সমাজে হীন ও নীচু থাকে। সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। সবসময় হীনমন্যতায় ভোগে। তাদের দারিদ্রতার অভিযোগ অনুযোগ মহান আল্লাহ পাক উনার এবং মহাসম্মানিত হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপর চাপিয়ে কুফরীতে নিমজ্জিত হয়।
আয় রোজগারের সবটুকুই খরচ করা এবং ভবিষ্যতের জন্য কিছু জমা না করা বোকামী। ক্ষেত্র বিশেষে কুফরীর কারণ।
কাজেই প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য মিতব্যয়ী হওয়া এবং ভবিষ্যতের জন্য কিছু অর্থ-সম্পদ জমা করা দায়িত্ব ও কর্তব্য।
প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ করলে ধন-সম্পদের বরকত উঠে যায়। যা কিছু নিজের কাছে থাকে তা সবটুকুই খরচ করলে প্রয়োজনের সময় লোকের কাছ থেকে ধার-দেনা করতে হয়।
তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অপব্যয়, অপচয় করা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ
অর্থ: অপচয়কারী শয়তানের ভাই। (পবিত্র সূরা বনী ইসরাইল শরীফ-২৭)
মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অমিতব্যয়ী, অপচয়কারীর উপর অসন্তুষ্ট। আর উনাদের এই অসন্তুষ্টিই মাল-সম্পদ হীনতার কারণ।
সুতরাং মুসলমানগণ সর্বদা প্রয়োজন অনুযায়ী খরচ করবেন এবং তা থেকে কিছু কিছু বাঁচায়ে জমা করবেন। যাতে প্রয়োজনের সময় কাজে আসে এবং অন্য কারো মুখাপেক্ষী হতে না হয়। এটাই তাদের দায়িত্ব কর্তব্য।
যে সব ছেলে-মেয়েরা অপচয় করে তাদের স্বভাব ও খাছলত বিগড়ে যায়। আর যারা মিতব্যয়ী হয় তাদের কাছে টাকা জমা থাকে। যা দ্বারা তারা নিজের প্রয়োজন পূরণ করে, গরীব-দুঃখীদের সাহায্য করতে পারে। মসজিদ, মাদরাসা, ইয়াতিমখানা ইত্যাদি জনকল্যাণমূলক কাজগুলি তারাই প্রতিষ্ঠা করতে পারে। তাদের মধ্যে সৎচরিত্র নেক স্বভাবের সৃষ্টি হয়। মাতা-পিতা, উস্তাদ, মুরুব্বি এবং আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই তাদেরকে ভালো মনে করে। সম্মান ও ইজ্জতের অধিকারী তারাই হয়। তারাই সমাজের সমাজপতি হয়। সব ক্ষেত্রে তারাই প্রতিনিধিত্ব করে। তারাই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। সমাজপতি, রাষ্ট্রপতি, জাতীর কর্ণধার তারাই হয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি মহান মুজাদ্দিদে আ’যম, সুলত্বানুন নাছীর, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার উছিলায় ও সম্মানার্থে সকল মুসলমানকে মিতব্যয়ী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।
-আল্লামা মুফতি সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করলে তা দ্বিগুণ-বহুগুনে বৃদ্ধি করে ফিরিয়ে দেয়া হয়
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












