ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি (১৪)
, ২৪ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৭ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৭ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ০৩ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

(বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী
ইলমে তাছাওউফ হাছিল
অতঃপর ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরয করলেন, হে আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মীস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহিলাদের মীরাস কত অংশ? তিনি বললেন, মহিলার অংশ পুরুষের অর্ধেক। এ উত্তর শুনে ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন-
هذا قول جدك ولو حولت دين جدك لكان ينبغى فى القياس ان يكون للرجل سهم وللمرأة سهمان لأن المرأة اضعف من الرجل
অর্থ: এটা আপনার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মুবারক, যদি আমি ক্বিয়াসের মাধ্যমে আপনার নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মুবারক পরিবর্তন করতে চাইতাম তাহলে পুরুষকে এক অংশ দিতাম ও মহিলাকে দ্বিগুণ দিতে বলতাম। কেননা মহিলাগণ পুরুষের চেয়ে দুর্বল। কিন্তু আমি তা বলিনা। আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা বলেছেন সেটাই পালন করি ও বলি।
অতঃপর ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি দ্বিতীয় প্রশ্ন তুলে ধরলেন এবং বললেন, হে আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মীস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নামায উত্তম, না রোযা? সাইয়্যিদুনা ইমামুল খ¦মীস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ইমাম বাকির আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, নামায। তখন ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন-
هذا قول جدك ولو حولت دين جدك فالقياس ان الـمرأة اذا طهرت من الحيض امرتها ان تقضى الصلوة ولا تقضى الصوم
অর্থ: তা আপনার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইরশাদ মুবারক। যদি আমি ক্বিয়াসের দ্বারা আপনার সম্মানিত নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে পরিবর্তন করতে চাইতাম তাহলে মহিলা যখন স্বাভাবিক মা’জূরতা থেকে পবিত্রতা লাভ করেন তখন যুক্তি দিয়ে বলতাম, সে রোযা ক্বাযা করার পরিবর্তে যেন নামায ক্বাযা করে। কিন্তু আমি তা বলিনা। বরং আপনার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা নির্দেশ দিয়েছেন সেটাই করি ও বলি।
অতঃপর ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তৃতীয় প্রশ্ন করলেন, হে আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মীস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইস্তিঞ্জা বেশি নাপাক, না মণি? সাইয়্যিদুনা ইমামুল খ¦মীস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ইমাম বাকির আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ইস্তিঞ্জা। তখন হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, “এটা আপনার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাদীছ মুবারক। যদি আমি যুক্তি দিয়ে আপনার নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মুবারক পরিবর্তন করতে চাইতাম তাহলে আমি ফতওয়া দিতাম ইস্তিঞ্জা করলে গোসল করতে হবে এবং মণি বের হলে ওযূ করতে হবে। কেননা মণি থেকে ইস্তিঞ্জা বেশি নাপাক। কিন্তু আমি আপনার নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দ্বীন পরিবর্তন করা থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আশ্রয় কামনা করছি।”
অপর একটি বর্ণনায় আছে, তিনি আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা ইমামুল খ¦মীস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ইমাম বাকির আলাইহিস সালাম উনার খিদমতে আরয করলেন, হে আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মীস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি লটারী হারাম-নাজায়িয ফতওয়া দেই। যেটা আপনার সম্মানিত নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই ফতওয়া। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সফরে যাওয়ার সময় হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে কাকে সাথে নিবেন তা লটারির মাধ্যমে ঠিক করতেন। আমি সেই লটারী মুবারককে নাজায়িয ফতওয়া দেই না। বরং তা জায়িয বলি ও করি।
এ কথা শুনা মাত্রই আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা ইমামুল খ¦মীস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ইমাম বাকির আলাইহিস সালাম তিনি উনার আসন মুবারক থেকে উঠে উনার সাথে মুয়ানাকা বা কোলাকুলি করলেন। উনার কপাল মুবারকে বুছা দিলেন। আর বললেন, হে হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনার এরূপ সীমাহীন ইলিম, আক্বল, সমঝই আপনাকে শত্রু বানিয়েছে। অর্থাৎ আপনার সীমাহীন ইলিম, আক্বল, সমঝের কারণে মানুষ ঈর্ষান্বিত হয়ে আপনার সাথে শত্রুতা করে। তারপর উনাকে অত্যন্ত সম্মানের সাথে স্বীয় ছোহবত মুবারকে রেখে তা’লীম-তরবিয়ত দান করলেন। অবশ্য তিনি উনার ছোহবত মুবারক বেশি ইখতিয়ার করতে পারেননি। অল্প কিছুদিন পরই তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেন। পরে উনারই গদ্দীনশীন হন আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক আলাইহিস সালাম। তিনি উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করেন। উনার নিকট থেকেই খিলাফত লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খালি চোখে চাঁদ দেখে মাস শুরু করা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার নির্দেশ মুবারক
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পূর্ব গণনাকৃত বর্ষপঞ্জী দিয়ে মাস শুরু করা শরীয়তসম্মত নয়
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে গরুর গোস্ত শি‘আরুল ইসলাম (৬)
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশি বেশি মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশি বেশি পূঁজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (১)
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছহিবে নিসাব প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য পবিত্র কুরবানী দেয়া ওয়াজিব (১)
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কাফিরদের রচিত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মুসলমানদের জন্য নয় (২)
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র মীলাদ শরীফ বিষয়ে প্রথম দিকে যারা কিতাব রচনা করেছেন উনাদের মধ্যে অন্যতম হলেন হাফিয হযরত আবুল খত্ত্বাব ইবনে দাহিয়্যাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি। যিনি ছিলেন পবিত্র হাদীছ শাস্ত্রের অন্যতম গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)