এই উপমহাদেশে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানদের ঈমান-আমলের ক্ষতিসাধনে দেওবন্দীদের কার্যক্রম এবং তাদের ভ্রান্ত ফতওয়া (১)
, ২৯ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ১৫ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ভূমিকা:
পাক-ভারত উপমহাদেশের মুসলিম উম্মাহর দেহে মারণঘাতী ক্যান্সার হলো দেওবন্দী ফিরক্বা ও তার প্রচারিত কুফরী আক্বীদাসমূহ। সাতচল্লিশে ভারত বিভাগের বিরোধিতা করে ভারতবর্ষের মুসলমানদের যে ক্ষতি করেছিল এই দেওবন্দীরা, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভবপর নয়। এই দেওবন্দীদের অন্যতম প্রধান ব্যক্তি আশরাফ আলী থানভীর কিতাবেই বর্ণিত রয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইলমে গাইব মুবারক পাগল, শিশু ও চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায়। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ!! নাঊযুবিল্লাহ!!!
এই দেওবন্দ আজও কংগ্রেস-বিজেপির মতো তাবৎ হিন্দুত্ববাদী শক্তিসমূহের লেজুড়বৃত্তি করে, গরু কুরবানীর বিরুদ্ধে ফতওয়া দিয়ে ভারতে মুসলিম নির্যাতনের রাস্তা প্রশস্ত করছে। তাদের সমস্ত অপকর্মসমূহ নিয়েই আমাদের পত্রিকার ধারাবাহিক আয়োজন। দেওবন্দীদের অপকর্ম নিয়ে নিন্মোক্ত দলিল প্রমাণসমূহ নেয়া হয়েছে তাদের রচিত কিতাব এবং ভারতের বিভিন্ন মিডিয়া ও পত্রপত্রিকা থেকে। শিক্ষিত পাঠকদের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে ভারতীয় পত্রিকা ও বিভিন্ন ওয়েব এড্রেসের শর্টলিঙ্কও দেয়া হয়েছে।
দেওবন্দী-হিন্দু ভাই-ভাই
(১) অখ- ভারত তত্ত্বে বিশ্বাসী দেওবন্দ:
দারুল উলুম দেওবন্দ গোষ্ঠী সর্বদাই অখ- ভারতে বিশ্বাসী। তারা মন থেকে মেনে নেয়নি মুসলিম ভূমি পাকিস্তানের সৃষ্টি। দেওবন্দ নেতা হুসাইন আহমদ মাদানি দেশভাগের সময় বাসায় বাসায় ঘুরে ঘুরে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে মিথ্যা একাত্মতার কথা বলেছিলো। এই দারুল উলুমের অপপ্রচারের কারণে হিন্দুরা বড় এলাকা পেয়ে যায়, মুসলমানরা ছোট এলাকা পায়। এদের অপপ্রচারের কারণে ভারত নামক হিন্দু রাষ্ট্রের মধ্যে একটি বিশাল মুসলিম জনগোষ্টী আটকা পড়ে যায়। সোভিযেত ইউনিয়ন যেমনি ভাগ হয়ে ৬টি আলাদা মুসলিম রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছিল, ঠিক তেমনি ভারত বিভক্তের সময় বেশি কয়েকটি মুসলিম রাষ্ট্রের (যেমন কাশ্মীর, আসাম, হায়দারাবাদ) জন্ম হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এ গোষ্ঠীটির বিরোধিতা এবং দ্বীন ইসলামের নামে ফতওয়ার কারণে তা হতে পারেনি। যার ফল এখন ভোগ করছে ভারতের মুসলমানরা। তাদের প্রতিদিন প্রতিনিয়ত কষ্ট পেতে হচ্ছে হিন্দুদের কাছ থেকে।
উল্লেখ্য, সাতচল্লিশে বাংলাদেশের সিলেটকেও ভারতের অংশ করতে প্রচেষ্টা চালিয়েছিলো দেওবন্দীরা, কিন্তু তারা সফল হয়নি।
(২) দেওবন্দী কর্তৃক হারাম নারী নেতৃত্ব গ্রহণ:
দেওবন্দীরা রাজনৈতিকভাবে কংগ্রেসের সাথে গাঁটছড়া বাঁধে। দ্বীন ইসলামে তো নারী নেতৃত্ব জায়িয নেই, সেখানে তারা ইসলামের নাম দিয়ে নারী নেতৃত্ব গ্রহণ করলো, তাও আবার এক হিন্দু মহিলার (ইন্দিরা গান্ধী)! নাঊযুবিল্লাহ!
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফের ৮২নং আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ পাক যেখানে নিজেই বলেছেন: নিশ্চয়ই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু ইহুদী, অতঃপর মুশরিক। ” সেখানে সারা বছর মাদরাসায় পড়ে এবং পড়িয়ে সেই হিন্দু শত্রুদের সাথে তারা বন্ধুত্ব করে। নাঊযুবিল্লাহ!
(৩) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরই গান্ধীর আদেশ (নাউযুবিল্লাহ!) -দেওবন্দ মালানা
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর খিলাফত আন্দোলনের সময়ে আলী ভ্রাতৃদ্বয় তথা মুহম্মদ আলী ও শওকত আলী তারাসহ দেওবন্দ মাদরাসা সংশ্লিষ্টরা পাপাত্মা গান্ধীকে নিজেদের দলে নিয়ে, হিন্দুদের দ্বারা উপকৃত হওয়ার অলীক কল্পনায় বিভোর হয়েছিলো। এ নিয়ে ভারতীয় ঐতিহাসিক গোলাম আহমদ মোর্তজার ‘ইতিহাসের ইতিহাস’ গ্রন্থের ৪২৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে-
“মুহম্মদ আলী বড় আলেমদের (দেওবন্দীদের) নিয়ে গোপনে পরামর্শ করলো এবং জানালো, ভারতে হিন্দু জাতি বিরাট একটি শক্তি, তাদেরকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতা আনা যায় না। যদিও তারা দূরে আছে তবুও তাদের কাজে লাগাতে এমন একজন নেতাকে সামনে রেখে জয়ঢাক বাজাতে হবে, যার ফলে হিন্দুজাতি তার আহবানে দলে দলে আসতে পারে। ... শেষে গান্ধীকেই বাছাই করা হয়। তাকে ‘মহাত্মা’ উপাধির পোশাক পরানো হয় এবং সারা ভারতে তার নাম প্রচার করে তার অধীনস্থের মতো মুসলিম নেতারা সভা সমিতি করে বেড়াতে থাকে। ”
অর্থাৎ দেওবন্দীরাই গান্ধীকে ‘মহাত্মা’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলো। শুধু তাই নয়, গান্ধীকে সর্বভারতীয় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পেছনে এই মুসলমান নামধারী নেতা এবং দেওবন্দী ওলামায়ে সূ’রাই দায়ী ছিলো। তারা শুধু এই পাপাত্মা গান্ধীর প্রশংসাতেই মাতেনি, তার সাথে সাথে নিজেরাও আপাদমস্তক হিন্দু হওয়া শুরু করলো গান্ধীর মন যোগাতে। এ প্রসঙ্গে পুলিৎজার প্রাইজ বিজয়ী joseph lelyveld- এর লেখা great soul: mahatma gandhi and his struggle with India বইয়ের ১৬১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে-
“After the Prophet, on whom be peace, I consider it my duty to carry out the command of gandhiji", he declared. For a time Muhammad Ali gave up eating beef as a gesture to gandhi and all hindus. Then, campaigning side by side with gandhi across India, he took to wearing khadi.. not only wear khadi; he became an evangelist for the charka.” অর্থাৎ মুহম্মদ আলী সে পাপাত্মা গান্ধী ও তার অনুসারী হিন্দু সম্প্রদায়কে তুষ্ট করতে গরুর গোশত খাওয়া বন্ধ রেখেছিলো। শুধু তাই নয়, হিন্দুদের অনুকরণে খদ্দরের পোশাক পরাও সে শুরু করলো। গান্ধীর অনুকরণে চরকার পক্ষে সে নিবেদিত প্রচারকের ভূমিকা পালন করতে শুরু করলো।
তবে তার সবচেয়ে জঘন্য ঘোষণাটি ছিলো, "After the Prophet, on whom be peace, I consider it my duty to carry out the command of gandhiji" " অর্থাৎ সে এবং তার দেওবন্দী অনুসারীরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই পাপাত্মা গান্ধীর আদেশ-নির্দেশকে প্রাধান্য দিয়ে সেগুলো পালন করার ঘোষণা দিয়েছিলো। নাঊযুবিল্লাহ! (ইনশাআল্লাহ চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পুরুষের জন্য কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












