কথিত প্রাচ্যবিদদের ইসলামবিদ্বেষী ষড়যন্ত্র বনাম মুসলমানদের করণীয়
, ০১ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৮ আউওয়াল, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৭ জুন, ২০২৫ খ্রি:, ১৩ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পাশ্চাত্যের ঐ সমস্ত লোক যারা প্রাচ্যের তথা মুসলমানদের ভাষা সাংস্কৃতিক দর্শন সাহিত্য ও ধর্ম নিয়ে গবেষণা ও লেখালেখি করে থাকে তাদেরকে প্রাচ্যবিদ ইংরেজিতে Orientalist. আরবীতে মুস্তাশরিকীন বলে। মূলত, তারা পাশ্চাত্যের অধিবাসী কিন্তু প্রাচ্য নিয়ে গবেষণা করার কারণে তাদেরকে প্রাচ্যবিদ বলা হয়।
পশ্চিমা প্রাচ্যবিদদের লক্ষ্য: পাশ্চাত্যের আহলে কিতাবরা প্রাচ্যের তথা মুসলমানদের বংশ ও সংস্কৃতি ও ধর্মের উপর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য সবসময় তথাকথিত সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম কারণ বের করে ইসলাম ও মুসলমানদের ক্ষতিসাধন করা। এ লক্ষ্যে তারা মুসলমানদের শিক্ষা সংস্কৃতি ইতিহাস ধর্ম দর্শন নিয়ে ব্যাপক অধ্যায়ন করে থাকে।
আর এক্ষেত্রে তারা সর্বপ্রথম মুসলমানদের খাঁটি দ্বীনী বিশ্বাসের মাঝে ঘুণ ধরানোর জন্য তথা ঈমানে বিচ্যুতি ঘটানোর জন্য চেষ্টা করে থাকে। তাদের এ উদ্দেশ্যকে সফল করার জন্য তারা হাজার হাজার বই লিখে থাকে। আর সে বইগুলো সূক্ষ্ম কৌশলে মুসলমানদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে থাকে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ: তাদের এই হীন চিন্তাধারাকে সফল করা জন্য তারা শত শত বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক বিষয় দিয়ে ভরে রেখেছে, যেখানে তাদের ভাব ধারায় লিখিত উক্ত বইগুলো পড়ানো হয়। আর যার ছাত্র হয় মুসলিম দেশের মেধাবী ছেলেরা, যেহেতু সেখানে স্কলারশিপ-এর মাধ্যমে মেধাবী ছাত্রদেরকেই বাছাই করা হয়। তখন এই মেধাবী ছাত্রগুলো বিদেশী ডিগ্রি নিয়ে এসে এদেশে ভ্রান্তি ছড়াতে থাকে। আর তারাই মুসলিম সমাজের ঈমানহরণের মূল উৎস হয়ে উঠে। এছাড়াও তাদের বইগুলো মুসলিম দেশে পা-ুলিপি আকারে পাঠানো হয়।
যেমন বহুল প্রচলিত “ইসলামী বিশ্বকোষ” বইটির একজন লেখক প্রাচ্যবিদ- د . س . مرجيليوث যার নাম D . S .Margoliouth মারগোলিয়াছ।
অথচ সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর বারবার অপবাদ দিয়েছে খুব খারাপ ভাষায়। যেমন তার উক্তি-
وقد اتهمَ النبيَّ صلّى اللهُ عليهِ وآلهِ وسلّمَ بتهم كثيرةٍ، وبأوصافٍ قذرةٍ، منها قولهُ: (لقد عاشَ محمد هذه السنينَ الست بعد هجرتهِ للمدينةِ، على التلصص ِوالسلبِ والنهبِ)
অর্থ: সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনেকগুলো অপবাদ দিয়েছে এবং নিন্দনীয় গুণে গুণান্নিত বলে আখ্যায়িত করেছে। নাঊযুবিল্লাহ! তার মধ্যে একটি জঘন্য অপবাদ হলো: হিজরতের পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে ৬টি বছর সম্মানিত মদীনা শরীফে কাটিয়েছেন, তা তিনি ছিনতাই, ডাকাতি এবং চুরি করার মাধ্যমে কাটিয়েছেন। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
এই ধরণের কাফির কুলাঙ্গার বদবখত ব্যক্তিদের চূ-চেরা, কিল-কাল মূলত ঈমান হরণের অস্ত্র সম্বলিত বইগুলো মুসলিম দেশগুলোতে পা-ুলিপি আকারে পাঠানো হয়। যেন ছোটকাল থেকেই একজন শিক্ষার্থীর অন্তরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বিরূপ আক্বীদা পয়দা হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
প্রাচ্যবিদের আবির্ভাব কাল: ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে তাদের এই বিষয়টি মানুষের দৃষ্টিতে আসে। আর তখন থেকে এই বিংশ শতাব্দীর মধ্যে তারা প্রায় ৬০ হাজার কিতাব লিখেছে। তাদের কিতাবগুলো লেখা হয়েছে ইসলাম উনার ইতিহাস, ইসলাম উনার আক্বীদা, ইসলাম উনার দ্বীন উনার ফিক্বাহ্ এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিবনী মুবারক সম্পর্কে।
মুসলমানদের করণীয়: প্রথমত ইহুদী, মুশরিক, নাছারা ও সমস্ত বিধর্মীদের সাথে কোনো ধরণের মুহব্বত রাখা যাবে না এবং তাদের ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। চাই সেটা মৌখিক বয়ানের মাধ্যমে হোক বা লেখনীর মাধ্যমে হোক।
দ্বিতীয়ত তারা যে সমস্ত পবিত্র আয়াত শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ সম্পর্কে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের শান মান নিয়ে কীল-কাল ও ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ করে থাকে, লেখনীর মাধ্যমে তার দালীলিক জাওয়াব দেয়া। তাহলে ইনশাআল্লাহ মুসলমানরা নিজেদের ঈমান ও আমলকে কাফির মুশরিকদের ষড়যন্ত্র থেকে হিফাযত করতে পারবে।
-আল্লামা মুহম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পুরুষের জন্য কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












