খেজুরের বেমেছাল বরকতের মধ্যে বিশেষ কোন কারণ লুকায়িত
, ৫ই রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৭ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ৬ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ১৯ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পছন্দনীয় ফল খেজুর। পবিত্র কুরআন শরীফে ২৬ বার খেজুরের কথা উল্লেখ রয়েছে। পবিত্র কুরআন শরীফে বৃক্ষ-তরুলতার বিবরণ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন, ‘আমি জমিনে উৎপন্ন করেছি শস্য-আঙুর, শাক-সবজি, জয়তুন ও খেজুর বৃক্ষ। ’ (সূরা আবাসা, আয়াত শরীফ ২৭)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, ‘খেজুর ও আঙুর থেকে তোমরা সাকার ও উত্তম খাদ্য তৈরি করো। নিঃসন্দেহে জ্ঞানী লোকদের জন্য এতে নিদর্শন আছে। ’ (পবিত্র সূরা নাহল, আয়াত শরীফ ৬৭)
পবিত্র সূরা আনআম শরীফের ৯৯ নাম্বার আয়াত শরীফ, পবিত্র সূরা মরিয়ম শরীফের ২৩ নাম্বার আয়াত শরীফেও খেজুরের উপকারিতা বর্ণিত রয়েছে। সাধারণত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাতটি খেজুর গ্রহণ করতেন। কম-বেশীও করেছেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র রমাদ্বান শরীফে সবাইকে সর্বপ্রথম খেজুর ও পানি দিয়ে ইফতার করতে আদেশ মুবারক করতেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘যদি কারো ঘরে কিছু খেজুর থাকে, তবে তাকে গরিব বলা যাবে না। ’
প্রাথমিক অবস্থায় কুরআন শরীফ সংকলনে খেজুর পাতা ব্যবহৃত হয়।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই আজওয়া খেজুরের বীজ রোপণ করেছিলেন। এ খেজুর বিশেষভাবে বরকতময়।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে কয়েকটি আজওয়া খুরমা খাবে ওই দিন কোনো বিষ ও জাদু তার কোনো ক্ষতি করবে না। ’
অন্যরা বলেছেন, ‘সাতটি খুরমা’। (বুখারী শরীফ)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন ‘খোদ জান্নাত থেকে আজওয়া খেজুর এসেছে। ’ (তিরমিযী শরীফ)
উল্লেখ্য, হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ঈমান মুবারক গ্রহণ করার পূর্বে খেজুরের বাগানে কাজ করতেন। উনি যে বাগানে কাজ করতেন, সেই বাগানের মালিক ছিলো ইহুদী। তিনি যখন তার কাছ থেকে মুক্তি চাইলেন তখন ইহুদী ব্যক্তি শর্ত দিলো যে, তিনি যদি নির্দিষ্ট কয়েক দিনের মধ্যে নগদ ৬০০ দিনার দেন এবং ৩০০টি গাছ রোপণ করেন এবং গাছগুলোতে খেজুর ধরাতে পারেন তাহলেই উনার মুক্তি মিলবে। অন্যথায় নয়।
হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পক্ষে ৬০০ দিনার জোগাড় করা কঠিন। খেজুরগাছ রোপণ করে তাতে ফল ধরা, ফল পাকানো অনেক সময়ের ব্যাপার। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ৬০০ দিনারের ব্যবস্থা করে ইহুদীর কাছে পাঠালেন।
ইহুদী ব্যক্তি দ্বিতীয় শর্ত দিয়ে বললো, খেজুর থেকে চারা উৎপন্ন করে ফল ফলাতে হবে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সরাসরি তাশরীফ মুবারক রেখে দেখলেন, দুষ্ট ইহুদী তার খেজুর গাছগুলো সে পুড়িয়ে কয়লা করে ফেলেছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো তার অন্তরের অন্তঃস্থলের খবরও রাখেন, সে যে হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে, সেটা তিনি আগেই জানতেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এতে বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে খেজুরের কাঁদি হাতে নিয়ে ইমামুল আউওয়াল, হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে গর্ত করতে বললেন আর হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন পানি আনতে।
ইমামুল আউওয়াল, হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম গর্ত করলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজ মহাসম্মানিত নূরুল মাগফিরাত মুবারক অর্থাৎ হাত মুবারকে প্রতিটি গর্তে সেই পোড়া খেজুর চারা রোপণ করলেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত সালমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে নির্দেশ মুবারক দিলেন যে, বাগানের শেষ প্রান্তে না যাওয়া পর্যন্ত আপনি পেছনে ফিরে তাকাবেন না। হযরত সালমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পেছনে না তাকিয়ে পানি দিতে লাগলেন। সব কাজ শেষ হলো। এর অল্প কিছু দিনের মধ্যে তিনি দেখলেন যে প্রতিটি গাছ খেজুরে পরিপূর্ণ। এ খেজুর পৃথিবীর সবচেয়ে দামি খেজুর এবং স্বাদের দিক দিয়েও সবচেয়ে সুস্বাদু। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার অসীম দয়া-ইহসান মুবারক দান করলেন, উনার মু’জিযাহ শরীফ উনার সামান্য বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন। সুবহানাল্লাহ!
মূলত খেজুর এমন একটি ফল; যে ফল সবচেয়ে বেশী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ছোহবত প্রাপ্ত ফল। সুবহানাল্লাহ! সুন্নতি খাবার খেজুরে যত উপকারিতা আছে, অন্য কোন ফলে এত উপকারিতা নেই। সুবহানাল্লাহ! খেজুরের উপকারিতার পেছনে বিশেষ কারণ মূলত এটিই।
-মুহম্মদ সা’দ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত উম্মে সুরাইকা দাওসিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












