ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক (২)
, ১৮ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৭ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ২৫জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ১০ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَخَذَ مَضْجَعَهٗ قَبْلَ أَنْ يَنَامَ وَضَعَ يَدَهٗ تَحْتَ خَدِّهٖ وَقَالَ رَبِّ قِنِيْ عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ.
অর্থ: হযরত বারা’আ ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঘুমানোর উদ্দেশ্যে যখন মহাসম্মানিত বিছানা মুবারকে মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক আনতেন তখন উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল কুদরত মুবারক (মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাত মুবারক) উনার মহাসম্মানিত নূরুর রহমাহ মুবারক উনার (মহাসম্মানিত গাল মুবারক উনার) নিচে রাখতেন এবং দুয়া মুবারক করতে বলেন, আয় মহান আল্লাহ পাক! যেদিন আপনি আপনার বান্দাদেরকে পুনরুত্থান করবেন সেদিনের আযাব থেকে আমাকে রক্ষা করুন। (আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا اضْطَجَعَ لِيَنَامَ وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنٰى تَحْتَ خَدِّهِ الْأَيْمَنِ وَقَالَ اللّٰهُمَّ قِنِيْ عَذَابَكَ يَوْمَ تَجْمَعُ عِبَادَكَ.
অর্থ: হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঘুমানোর উদ্দেশ্যে যখন মহাসম্মানিত বিছানা মুবারকে তাশরীফ মুবারক নিতেন তখন উনার ডান মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরুল কুদরত মুবারক (মহাসম্মানিত মহাপবিত্র ডান হাত মুবারক) ডান মহাসম্মানিত নূরুর রহমাহ মুবারকের (মহাসম্মানিত গাল মুবারকের) নিচে রাখতেন এবং দুয়া মুবারক শিক্ষা দেন, “আয় মহান আল্লাহ পাক! যেদিন আপনি আপনার বান্দাদেরকে একত্রিত করবেন সেদিনের আযাব থেকে আমাকে রক্ষা করুন। (আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ঘুমানোর মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলোÑ
১) ঘুমানোর পূর্বে বিছানা পরিস্কার করে নেয়া।
২) চামড়ার তৈরী ভেতরে খেজুর গাছের ছালযুক্ত) বালিশে ঘুমানো।
৩) ডান কাত হয়ে ডান হাতের তালুর উপর মুখমন্ডলের অংশ বিশেষ (গালে) রেখে ক্বিবলামুখী হয়ে শয়ন করা।
৪) ঘুমের সময় চাদর গায়ে দেয়া।
৫) ঘুমানোর পূর্বে নিম্নোক্ত দুয়া মুবারক পাঠ করা
اَللّٰهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوْتُ وَ أَحْيٰى
অর্থ: আয় মহান আল্লাহ পাক! আপনার নাম মুবারকে আমি মৃত্যুবরণ করছি এবং পুনরায় জীবিত হবো।
৬) ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে নি¤েœাক্ত দুয়া মুবারক পাঠ করা-
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَاِلَيْهِ النُّشُوْرُ
অর্থ: সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, যিনি (নিদ্রারূপ) মৃত্যুর পর আমাদেরকে জীবিত করলেন, আর উনারই নিকট সকলের পুনরুত্থান।
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার মাধ্যমেই সর্বপ্রকার নেয়ামত মুবারক হাছিল করা সম্ভব। খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত-মা’রিফত মুবারক ও উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের প্রধান মাধ্যম হচ্ছেন মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক পালন করা।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ تَمَسَّكَ بِسُنَّتِي عِنْدَ فَسَادِ أُمَّتِيْ فَلَهٗ أَجْرُ مِائَةِ شَهِيْدٍ
অর্থ: “যে ব্যক্তি ফিতনা ফাসাদের যুগে আমার একটি মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক আকড়ে ধরে থাকবেন অর্থাৎ পালন করবেন, তিনি একশত শহীদ উনাদের সমপরিমাণ ছওয়াব লাভ করবেন। ” (মিশকাত শরীফ)
বর্তমান সময়ে মুসলমানরা কাফির, মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীন, নাস্তিক, ফাসিক-ফুজ্জারদের নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করে। অথচ মহাসম্মানিত ও মহপবিত্র সুন্নত মুবারক সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণ বেখবর। মুসলমানরা মূল থেকে সরে গিয়েছে। আর এজন্যই আজ সারা বিশ্বে মুসলমানরা লাঞ্ছিত, নির্যাতিত হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত-মা’রিফত মুবারক ও উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের ক্ষেত্রে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক পালনের বিকল্প কিছু নেই।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক -১
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হাত ও পায়ের নখ কাটার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেসব দিনে গোসল করা ও গোসলে কি কি ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (২)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৫)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৪)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












