চেয়ার-টেবিলে খাবার খাওয়া বিদয়াত; খাছ ফতওয়া মতে হারাম (২)
, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ مَا أَكَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلٰى خِوَانٍ وَلَا فِي سُكُرُجَةٍ وَلَا خُبِزٍ لَهٗ مُرَقَّقٌ. قُلْتُ لِـحَضْرَتْ قَتَادَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَلٰى مَا يَأْكُلُوْنَ قَالَ عَلَى السُّفَرِ.
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কখনো ‘খিওয়ান’ (টেবিলের মত উঁচু স্থানে)-এর উপর খাবার রেখে সম্মানিত আহার মুবারক করেননি এবং ছোট ছোট বাটিতেও তিনি সম্মানিত আহার মুবারক করেননি। আর উনার জন্য কখনো পাতলা রুটি তৈরী করা হয়নি। রাবী (হযরত ইউনুস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি) বলেন, আমি হযরত ক্বত্বাদাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, তাহলে উনারা কিসের উপর মহাসম্মানিত আহার মুবারক করতেন? তিনি বললেন, (খয়েরী রংয়ের) দস্তরখানার উপর।” (বুখারী শরীফ: কিতাবুত ত্বআমাহ: মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শরীফ নং ৫৪১৫, তিরমিযী শরীফ: মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১৭৮৮, ইবনে মাজাহ শরীফ: মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৩৪১৭)
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দস্তরখানা মুবারক ছিল চামড়ার এবং খয়েরী রংয়ের (খাসীর) চামড়ার। (শামায়েলে তিরমিযী শরীফ, আনিসুল আরওয়াহ্, জামউল ওসায়েল)
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দস্তরখানা বিছিয়ে মহাসম্মানিত আহার মুবারক করতেন। তিনি কখনো টেবিল বা টেবিলের মত উঁচু স্থানের উপর খাবার রেখে মহাসম্মানিত আহার মুবারক করেননি। তাই টেবিল বা টেবিলের মত উঁচু স্থানের উপর খাবার রেখে আহার করা সুস্পষ্ট বিদ্আত এবং জায়িয মনে করা কুফরী।
উল্লেখ্য, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ওলীমা মুবারকের মধ্যেও দস্তরখানার বিশেষ ব্যবস্থা ছিলো। কিন্তু বর্তমানে বিবাহের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মহাসম্মানিত সুন্নতী দস্তরখানার ব্যবহার দেখা যায় না। কিন্তু মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে প্রমাণিত হয় যে, চেয়ার-টেবিলে নয়; বরং দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক। আর চেয়ার-টেবিলে খাদ্য খাওয়া সু¯পষ্ট বিদ্আত-গোমরাহী ও জায়িয মনে করা কুফরী।
যমীনে বা মেঝেতে অর্থাৎ সমতল স্থানে বসে খাবার খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারকঃ
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত-
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَجْلِسُ عَلَى الْأَرْضِ وَيَأْكُلُ عَلَى الْأَرْضِ.
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনের বা মেঝের উপর বসতেন এবং যমীনে বা মেঝেতে বসে মহাসম্মানিত আহার মুবারক করতেন। (শুআবুল ঈমান শরীফ, বায়হাক্বী শরীফ, মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং: ৭৮৪৩; আল মু’জামুল কাবীর, তবারানী, মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং: ১২৪৯৪; মাজমাউয যাওয়ায়িদ, মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং: ১৪২২২)
উল্লেখ্য, এখানে যমীনে বা মেঝের উপর বসে খাওয়ার অর্থ হচ্ছে সমতল স্থানে বসে খাওয়া। অর্থাৎ যেখানে বসা হয়েছে পাত্র তার চেয়ে উঁচু স্থানে বা উঁচু কোনো কিছুতে রেখে না খাওয়া। তবে কেউ যদি চকিতে বসে চকির মধ্যেই দস্তরখানা বিছিয়ে তার উপরই পাত্র রেখে খাবার খান তাহলে সেটাও যমীনে বসে খাওয়ার মধ্যেই গণ্য হবে।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক - ২
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক -১
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হাত ও পায়ের নখ কাটার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেসব দিনে গোসল করা ও গোসলে কি কি ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (২)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৫)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৪)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












