চেয়ার-টেবিল ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার খিলাফ তো অবশ্যই বরং হারাম-নাজায়িযের অন্তর্ভুক্ত
, ১২ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৮ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৭ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ২৪ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আসমান, যমীন এবং তার মধ্যে যা কিছু রয়েছে, ইচ্ছায় এবং অনিচ্ছায় সবকিছু আমার দিকে রুজু হয়ে গেছে। অথচ তোমরা কি অন্য ধর্ম তালাশ কর? অন্য দ্বীন তালাশ কর? কিন্তু তালাশ করলে বা আমল করলে, তা গ্রহণ করা হবেনা। ”
পবিত্র দ্বীন ইসলাম অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত মত মুবারক এবং পথ মুবারক অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার মতে মত, মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে পথ ছাড়া যে কোন মত, যে কোন পথ, যদি কেউ গ্রহণ করে, তাহলে সে ক্ষতিগ্রস্থের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ .
অর্থ: “যে ব্যক্তি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন তালাশ করে, অনুসরণ অনুকরণ করে, তার থেকে সেটা গ্রহণ করা হবে না। সে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ: ৮৫)
আফসুসের বিষয় হচ্ছে বর্তমানে দেখা যায় যে, অনেক মুসলমান হীনমন্যতায় ভোগার কারণে মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক পালন করা থেকে দূরে সরে কাফির-মুশরিক, মুনাফিকদের অনুসরণ করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!
প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক হচ্ছে খাওয়া-দাওয়া, চলা-ফেরা, উঠা-বসা এককথায় সর্বক্ষেত্রে মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা করা। মুসলমানদের জন্য দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়ার ক্ষেত্রে এবং যাবতী মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা করার ক্ষেত্রে কোন অবস্থাতেই হিনমন্যতায়ভোগা যাবেনা; বরং মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার আমল করতে পারাটাই হচ্ছে শান-শওক্বত ও গর্বের বিষয়।
চেয়ার-টেবিলে খাবার খাওয়া হারাম ঃ
হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার কিতাবে উল্লেখ করেছেন যে, মাটির উপর অর্থাৎ মেঝেতে বা সমতল স্থানে দস্তরখানা বিছিয়ে তাতে খাদ্য-দ্রব্য রেখে আহার করা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক বা তরীক্বাহ মুবারক। কখনো কোন খাদ্য-দ্রব্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে পেশ করা হলে তিনি তা মেঝেতে সমতল স্থানে দস্তরখানায় রাখতে মহাসম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিতেন। কেননা এটা বিনয় ও আযীযী’র নিদর্শন মুবারক, দস্তরখানা পরকালে ছফরের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, কেননা এটা স্থানান্তর সাপেক্ষ। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরে সর্বপ্রথম যে চারটি বিদআতের প্রচলন শুরু হয়, তন্মধ্যে চেয়ার-টেবিলে পানাহার করা একটি। (ইহ্ইয়াউ উলূমিদ্দীন)
আল্লামা মানাউয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন, “টেবিলের উপর খাবার রেখে আহার করা হচ্ছে- অহংকারীদের অভ্যাস। ” নাউযুবিল্লাহ!
চেয়ার-টেবিলে পানাহার করলে অবশ্যই বে-দ্বীন-বদদ্বীন ও বেধর্মীদের অনুসরণ করা হবে। কেননা তারাই চেয়ার-টেবিলে খাদ্য খাওয়ার পদ্ধতি চালু করেছে। সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখবে, অনুসরণ-অনুকরণ করবে, সে সেই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হবে অর্থাৎ তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে। ” (আবূ দাউদ শরীফ)
কাজেই, কোন অবস্থাতেই চেয়ার-টেবিলে বসে খাদ্য খাওয়া জায়িয হবে না। বরং ইহা বিদআত ও গোমরাহীমূলক আমল। যারা চেয়ার-টেবিলে বসে খাদ্য খাবে তাদের হাশর-নশর অবশ্যই বে-দ্বীন-বদদ্বীন ও বেধর্মীদের সাথেই হবে। নাউযুবিল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে সর্বপ্রকার বিদয়াতী- গোমরাহী আমল থেকে কুদরতীভাবে হিফাযত করে সর্বপ্রকার কাজ-কর্ম, আমল মহাসম্মানিত সুন্নতী তরীক্বাহ মুতাবিক করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহের পূর্বে বরকে ও কনেকে দেখার সম্মানিত শরয়ী অর্থাৎ মহাসম্মানিত সুন্নতী তরীক্বাহ
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বিবাহের ক্ষেত্রে কুফু বা সমকক্ষতা রক্ষা করা পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বিবাহের প্রস্তাব দেয়া এবং সম্মতি জ্ঞাপন করার মহাসম্মানিত সুন্নতী তরীক্বাহ
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সুন্নত মুবারক অনুসরণে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক জিন্দা করার বেমেছাল ফযীলত
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
০৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নতী আসবাবপত্রের পরিচয় ও ব্যবহার করার গুরুত্ব-ফযীলত মুবারক
০৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অত্যন্ত বরকতময় মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্য “সিরকা” (৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
অত্যন্ত বরকতময় মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্য “সিরকা” (৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা” তথা অনুসরণ-অনুকরণ করার গুরুত্ব-তাৎপর্য এবং বেমেছাল ফযীলত মুবারক (৬)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












