ছহিবে নিসাব প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য পবিত্র কুরবানী দেয়া ওয়াজিব (৫)
, ১৭ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ মে, ২০২৪ খ্রি:, ১২ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পূর্বের পর্বগুলোতে অকাট্য দলীলের ভিত্তিতে প্রমাণ করা হয়েছে, সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য পবিত্র কুরবানী দেয়া ওয়াজিব।
যারা বলে, “পবিত্র কুরবানী করা একটি সাধারণ ইবাদত, যতো সম্পদশালী হউক না কেন পবিত্র কুরবানী করলে ছাওয়াব আছে আর না করলে কোনো গুনাহ হবেনা। না‘উযুবিল্লাহ! এখানে পবিত্র কুরবানী সম্পর্কে তাদের গুরু ইবনে তাইমিয়ার মত উল্লেখ করা হলো।
তথাকথিত আহলে হাদীছ ওরফে আহলে হদছ, ওহাবী, সালাফী, লা-মাযহাবীদের গুরু ইবনে তাইমিয়ার মতেও পবিত্র কুরবানী করা ওয়াজিব:
وَأَمَّا الْأُضْحِيَّةُ فَالْأَظْهَرُ وُجُوبُهَا أَيْضًا فَإِنَّهَا مِنْ أَعْظَمِ شَعَائِرِ الْإِسْلَامِ وَهِيَ النُّسُكُ الْعَامُّ فِي جَمِيعِ الْأَمْصَارِ وَالنُّسُكُ مَقْرُونٌ بِالصَّلَاةِ فِي قَوْلِهِ: {إنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ} وَقَدْ قَالَ تَعَالَى: {فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ} فَأَمَرَ بِالنَّحْرِ كَمَا أَمَرَ بِالصَّلَاةِ. وَقَدْ قَالَ تَعَالَى: {وَلِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكًا لِيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ فَإِلَهُكُمْ إلَهٌ وَاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوا وَبَشِّرِ الْمُخْبِتِينَ}
অর্থ: আর পবিত্র কুরবানী সম্পর্কে অধিকতর স্পষ্ট ফতওয়া হচ্ছে, এটাও ওয়াজিব। কেননা পবিত্র কুরবানী হচ্ছেÑ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার একখানা মহান নিদর্শন মুবারক। এটা গোটা আলমের জন্য ব্যাপক এক পবিত্র ইবাদত। তাছাড়া মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরবানীকে নামাযের সাথে যুক্ত করেই কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণনা করেছেন। যেমন: মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনি বলে দিন নিশ্চয়ই আমার পবিত্র ছলাত, আমার পবিত্র কুরবানী, আমার মহাসম্মানিত হায়াত মুবারক, আমার মহাসম্মানিত দীদার মুবারক-এ গমন মুবারক একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আন‘আম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬২) মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “আমার হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি আপনার রব তা’য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য পবিত্র ছলাত আদায় করুন এবং পবিত্র কুরবানী করুন। অর্থাৎ বান্দা-বান্দী, উম্মতকে মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য ছলাত আদায় করতে এবং পবিত্র কুরবানী করতে আদেশ মুবারক দিন। (পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২) এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমনিভাবে পবিত্র কুরবানী করার আদেশ মুবারক দিয়েছেন, একইভাবে পবিত্র ছলাত আদায় করারও নির্দেশ মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (এটা দ্বারা পবিত্র কুরবানী ওয়াজিব প্রমানিত হয়। )
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য পবিত্র কুরবানী নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা মহান আল্লাহ পাক উনার দেয়া চতুস্পদ জন্তু যবেহ করার সময় মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নাম মুবারক উচ্চারণ করে। অতএব তোমাদের রব তায়ালা মহান আল্লাহ পাক তিনি একক। সুতরাং তোমরা উনার নিকট আতœসমর্পন করো এবং বিনয়ীগণকে সুসংবাদ দাও। পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৪। (মাজমূ’ আল ফতওয়া ২৩/ ১৬২, সুজূদুত তিলাওয়াত মা‘আনীহী ওয়া আহকামিহী ১/৬১-৬২, কুতুব ওয়া রসায়েল ওয়া ফতওয়া ইবনে তাইমিয়া ফিল ফিক্বহি ২৩/১৬২)
এরপর ইবনে তাইমিয়া তার উক্ত কিতাবে পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ উনার ৩৬ ও ৩৭ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উল্লেখ করে বলেছে, আর পবিত্র ঈদুল আদ্বহা হচ্ছে সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত দ্বীন উনার অন্তর্ভুক্ত। আর উনার সম্মানিত দ্বীন অনুসরণ করার জন্য আমরা আদিষ্ট হয়েছি। কাজেই এটা কি করে জায়িয হতে পারে যে, মুসলমানগণ এই পবিত্র ঈদুল আদ্বহা এবং সম্মানিত কুরবানী উনাকে ছেড়ে দিবে?
এখানে লা-মাযহাবীদের গুরু ইবনে তাইমিয়াও পবিত্র কুরবানীকে ওয়াজিব বলে স্বীকার করেছে। শুধু তাই নয়, পবিত্র কুরবানী করা যে ওয়াজিব এ বিষয়ে সে ৫খানা পবিত্র আয়াত শরীফ দলীল হিসেবে উল্লেখ করেছে। কাজেই তাদের গুরুর থেকেও প্রমাণিত হলো পবিত্র কুরবানী করা ওয়াজিব। যেটা কালামুল্লাহ শরীফ উনার থেকেই প্রমানিত।
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আখেরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র ছোহবত মুবারক গ্রহণের ফাযায়িল-ফযীলত, গুরুত্ব-তাৎপর্য ও আবশ্যকতা:
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
যে নিজে পর্দা করে না ও অধীনস্থদের পর্দা করায় না সে দাইয়ূছ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাক্বীক্বী মৃত্যুকে স্মরণ করার মধ্যেই শহীদী দরজা মিলে
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন রোগই ছোঁয়াচে নয়, ছোঁয়াচে বিশ্বাস করা কুফরী
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত আব্বাদ ইবনে বিশর ইবনে ওয়াকাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৩)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা কবীরা গুনাহ ও অসন্তুষ্টির কারণ
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বক্ষেত্রে ফায়সালাকারী হিসেবে মেনে নেয়াই ঈমানদারের পরিচয়
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












