সুন্নতী মুবারক তা’লীম
দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক (৩)
, ০৩ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১০ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-
سَمِعَ حَضْرَتْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يَقُوْلُ قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَبْنِي بِسَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ أُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الْعَاشِرَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ صَفِيَّةَ بِنْتِ حُيَيٍّ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَدَعَوْتُ الْمُسْلِمِيْنَ إِلٰى وَلِيْمَتِهٖ أَمَرَ بِالأَنْطَاعِ فَبُسِطَتْ فَأُلْقِيَ عَلَيْهَا التَّمْرُ وَالأَقِطُ وَالسَّمْنُ وَقَالَ حَضْرَتْ عَمْرٌو رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنْ حَضْرَتْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ بَنٰى بِهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ صَنَعَ حَيْسًا فِي نِطَعٍ.
অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনাকে উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র খিদমত মুবারকে গ্রহণ করলেন। আমি (হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) মহাসম্মানিত ওলীমা মুবারকের জন্য মুসলমানদের দাওয়াত করলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নির্দেশ মুবারকে দস্তরখানা বিছানো হলো। তারপর তার উপর খেজুর, পনির ও ঘি ঢালা হলো। হযরত ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনাকে উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র খিদমত মুবারকে গ্রহণ করলেন এবং চামড়ার দস্তরখানায় ‘হায়েস’ (ঘি, খেজুর ইত্যাদি মিশিয়ে বানানো খাবার) প্রস্তুত করলেন। (বুখারী শরীফ: মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং: ৫৩৮৭)
উল্লেখ্য, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ওলীমা মুবারকের মধ্যেও দস্তরখানার বিশেষ ব্যবস্থা ছিলো। কিন্তু বর্তমানে বিবাহের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মহাসম্মানিত সুন্নতী দস্তরখানার ব্যবহার দেখা যায় না। কিন্তু উপরোক্ত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে প্রমাণিত হয় যে, চেয়ার-টেবিলে নয়; বরং দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক। আর চেয়ার-টেবিলে খাদ্য খাওয়া সু¯পষ্ট বিদ্আত-গোমরাহী ও জায়িয মনে করা কুফরী।
জান্নাতবাসী উনাদেরকেও দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়ানো হবে
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
مَنْ مَّسَحَ فِيْهِ عَلٰى رَأْسِ يَتِيْمَ وَاَطْعَمَ جَائِعًا وَسَقٰى شَرْبَةً مِّنْ مَّاءِ أَطْعَمَهُ اللهُ مِنْ مَّوَائِدِ الْـجَنَّةِ وَسَقَاهُ اللهُ تَعَالٰى مِنَ الرَّحِيْقِ الْسَلْسَبِيْلِ.
অর্থ: “পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন কোন (মুসলমান) ব্যক্তি যদি কোন ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলায় অর্থাৎ খোঁজ খবর নেয়, কোন ক্ষুধার্তকে খাদ্য খাওয়ায় এবং কোন পিপাসার্তকে পানি পান করায় তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে সম্মানিত জান্নাতী “দস্তরখানায়” খাদ্য খাওয়াবেন এবং সম্মানিত ‘জান্নাতী সালসাবীল’ ঝর্ণা থেকে পানীয় (শরবত) পান করাবেন। ” সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সম্মানিত জান্নাতেও দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়ানো হবে। কাজেই দস্তরখানা ব্যবহারের গুরুত্ব-ফযীলত মুবারক বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ!
দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়ার বে-মেছাল ফযীলত মুবারকসমূহ:-
দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়ার ফযীলত মুবারক সম্পর্কে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُصَلِّي الْمَلَائِكَةُ عَلَى الرَّجُلِ مَا دَامَتْ مَائِدَتُهٗ مَوْضُوْعَةً.
অর্থ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা ঐ ব্যক্তির উপর ততক্ষণ পর্যন্ত পবিত্র রহমত মুবারক উনার দোয়া মুবারক করতে থাকেন, যতক্ষণ পর্যন্ত দস্তরখানা বিছানো থাকে। অর্থাৎ দস্তরখানায় খাবার খাওয়া পর্যন্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা তার জন্য পবিত্র রহমত মুবারক কামনা করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কুরতুবী শরীফ-৬/৩৭৪)
আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খরগোশের গোশত খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কাফির-মুশরিকদের পণ্য পরিত্যাগ করে মহাসম্মানিত সুন্নতী পণ্য ব্যবহার করতে হবে
০৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
০৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
০২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সন্তানের জন্য আক্বীক্বা করা খাছ সুন্নত মুবারক (৩)
০১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘ আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
০১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘ আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
০১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুন্নতী খাবার পরিচিতি
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সন্তানের জন্য আক্বীক্বা করা খাছ সুন্নত মুবারক (২)
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাঁটি মধুসহ সকল সুন্নতী সামগ্রী
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সন্তানের জন্য আক্বীক্বা করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)