সুন্নতী মুবারক তা’লীম
দামি বা মূল্যবান পোশাক পরিধান করাও সম্মানিত সুন্নত মুবারক
, ২১ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৮ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১০ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
সামর্থ্য অনুযায়ী পোশাক পরিধান করাই খাছ সুন্নত মুবারক। অধিক মূল্যমানের পোশাক পরিধানের সামর্থ্য থাকলে মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা যেমন সুন্নত মুবারক। তেমনি কম মূল্যমানের পোশাক পরিধান করতঃ ছবর করাও সম্মানিত সুন্নত মুবারক।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বেশি মূল্যমানের পোশাক পরিধান করেছেন। আবার কম মূল্যমানের পোশাকও পরিধান করেছেন। তিনি সকলের জন্যই আদর্শ মুবারক। কেননা, মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
لقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
অর্থ: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবীইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আর্দশ মুবারক। (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-২১)
কাজেই, যাদের দামি দামি পোশাক পরিধান করার সামর্থ্য আছে তাদের কম মূল্যের পোশাক পরিধান করা যেমন অনুচিত, তেমনি যাদের সামর্থ্য নেই তাদের জন্য তা পরিধানের আশা করাও ঠিক নয়। কারণ, তাতে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবীইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের নাফরমানী করার সম্ভবনা থাকে।
উল্লেখ্য যে, যারা অর্থ-সম্পদশালী তাদের জন্য ভাঙ্গা আয়নায় মুখ দেখা, ভাঙ্গা চিরনী দ্বারা মাথা আচড়ানো, পাখি খাওয়া, ফল-ফলাদী খাওয়া, এুটিযুক্ত জিনিসপত্র কেনা মাকরূহ। কেননা, সেগুলো গরীব-দুঃখীদের খাবার, ব্যবহারযোগ্য আসবাবপত্র। সেগুলো তাদের ক্রয় ক্ষমতার আওতাধীন থাকে। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতা ও বিমুখতার কারণে হাল যামানায় অনেক মানুষের এই আক্বীদা বদ্ধমূল হয়েছে, তারা বলে থাকে- যাঁরা ওলী-আউলিয়া হবেন, আল্লাহ ওয়ালা হবেন, সূফী-সাধক হবেন, যারা আলিম হবেন, উনারা অতি মূল্যবান পোশাক পরিধান করতে পারবেন না। উনারা ডেরার ঘরে, বেড়ার ঘরে থাকবেন। ছেঁড়া-ফাঁড়া অতি অল্প মূল্যের পোশাক পরবেন। উনারা কোন শান-শওকতে থাকতে পারবেন না। কেননা উনারা তো দরিদ্র ইত্যাদি ইত্যাদি। (নাউযুবিল্লাহ)
কিন্তু খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি তাদের সেই বদ ধারণা, বদ আক্বীদার মর্মমূলে আঘাত করে সেই আক্বীদার বিলুপ্তি ঘটিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন, অতীব মূল্যবান পোশাক পরিধান করাও যে সুন্নত মুবারক। উনার সুমহান তাজদীদ মুবারকের বদৌলতে বিলুপ্ত সুন্নত মুবারক জিন্দা হচ্ছে।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবীইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন-
احسنوا لباسكم
অর্থ: তোমরা উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহার কর। ” অপর একটি বর্ণনায় এসেছে
اذا اتاك الله مالا فلير اثرنعمة الله عليكم وكرامته
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন তোমাকে ধন-সম্পদ দান করবেন, তখন তোমার মধ্যে সেই নিয়ামত, মেহেরবানী ও সম্মানের চিহ্ন প্রকাশ পাওয়া উচিত। অর্থাৎ তোমার সাধ্য-সামর্থ্য অনুযায়ী উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করা উচিত। (জামিউস্ সগীর-১/১৩৫, আখলাকুন্ নবী-১৫৩)
হযরত ইসহাক ইবনে আব্দিল্লাহ ইবনে হারিস রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে-
ان النبى صلى الله عليه وسلم اشترى حلة بسبع وعشرين ناقة فلبسها.
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবীইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাতাশটি উটের বিনিময়ে এক সেট পোশাক মুবারক খরিদ করেছিলেন এবং তা পরিধানও করেছিলেন। ” (আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -১৭৪)
হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন-
ان ذيزان اهدى الى النبى صلى الله عليه وسلم حلة اشتريت بثلا ثة وثلا ثين بعيرا فلبسها مرة.
অর্থ: নিশ্চয়ই (হিমইয়ারের মুসলিম বাদশাহ) জুইয়াযান তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবীইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এমন এক সেট পোশাক মুবারক হাদিয়া দিলেন, যা তেত্রিশটি উটের বিনিময়ে খরিদ করা হয়েছিল। আর তিনি তা একবার মাত্র পরিধান করেছিলেন। ” (আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -১৬৩)
-মুহম্মদ হুসাইন নাফে’
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘নাবীয’
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হিজামা বা শিঙ্গা লাগানো খাছ সুন্নত মুবারক (৩)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘মাশরুম’
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিজামা বা শিঙ্গা লাগানো খাছ সুন্নত মুবারক (২)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন- “সুন্নতী চামড়ার মোজা”
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হিজামা বা শিঙ্গা লাগানো খাছ সুন্নত মুবারক (২)
৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী চামড়ার মশক
৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৮)
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন দাঁত ও মুখ পরিষ্কার করার ‘সুন্নতী মিসওয়াক’
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী খাদ্য ও পানীয় ‘দুধ’
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)