ফতওয়া
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৭)
, ১৮ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৪ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ২২ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ০৬ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারাও দাড়ি রাখার আবশ্যকতা ও দাড়ি কাটার নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হয়। যেমন- মহান আল্লাহ পাক তিনি “পবিত্র সূরা নিসা শরীফ উনার” ১১৯নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلَآمُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللهِ- الخ
অর্থ: (ইবলীসের অঙ্গিকার) আর আমি তাদেরকে আদেশ করবো, যাতে তারা মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টিতে বিকৃতি বা পরিবর্তন ঘটাবে। ............” উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে (ব্যাখ্যায়) মুফাসসিরীনে কিরাম উনারা বলেন-
(১)
وخص من تغير خلق الله تعالى ........ وخضب للحية وقص ما زاد منها على السنة ونـحو ذالك. (تفسير روح الـمعانى ج ৩ صفه ১৫ ........ وتغير فطرة الله تعالى التى هى الاسلام
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার ফিৎরাতের পরিবর্তন মূলত পবিত্র ইসলাম উনারই পরিবর্তন ......... এবং বিশেষ করে মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির পরিবর্তনের মধ্যে ........ দাড়িতে (কালো) খেজাব ব্যবহার করা এবং এক মুষ্ঠির কমে দাড়ি কাটা ইত্যাদিও অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে রুহুল বয়ান ৩য় খ- পৃষ্ঠা-১৫০)
(২)
ومنها التنمص وهو نتف شعور الوجه. (تفسير روح البيان ج ৬ صفه ৬৮৮)..........( وَلَآمُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللهِ)
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির পরিবর্তন করার মধ্যে (التنمص) তানাম্মুছও অন্তর্ভুক্ত। আর তা হচ্ছে চেহারার লোম উৎপাটন করা, অর্থাৎ দাড়ি কেটে ফেলা। (তাফসীরে রুহুল বয়ান, ২য় খ- পৃষ্ঠা-২৮৮)
(৩)
)وَلَآمُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللهِ) اور ايت مين هرتغير
অর্থ: আর উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা প্রত্যেক পরিবর্তনকে গুনাহের কারণ বলা উদ্দেশ্য নয়। বরং যে সকল পরিবর্তন ফিৎনার কারণ, সেটাই গুনাহের কারণ। যেমন- দাড়ি চেঁছে ফেলা। ....” (তাফসীরে কামালাইন ফী শারহিল জালালাইন, ২য় খ- পৃষ্ঠা-১০৬)
(৪) (ইবলিস বলেছিল,) আমি আরো শিক্ষা দিবো, যা দ্বারা মানুষ মহান আল্লাহ পাক উনার দেয়া আকৃতিকে বিকৃত করবে। মূলত এগুলো ফাসিকী কাজের অন্তর্ভুক্ত। যেমন- দাড়ি মুন্ডন করা, শরীরে উল্কি আঁকা ইত্যাদি। (তাফসীরে বয়ানুল কুরআন, ২য় খ- পৃষ্ঠা-১৫৯)
(৫) উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা এটাই বুঝানো হয়েছে যে, মানুষের পরিবর্তনীয় বিষয় এই যে, জীবিত থাকার আশায় কান অথবা নাক ছিদ্র করতো, মহিলারা সৌন্দর্যের জন্যে খোপায় সোনা চান্দির অলংকার ব্যবহার করতো, রেত দিয়ে দাঁতসমূহ পাতলা করতো, পুরুষদেরকে খাসি করাতো .............. এর মধ্যে দাড়ি মুন্ডন করাও এসে যায়। অর্থাৎ দাড়ি মুন্ডন করাও আকৃতি বিকৃত হওয়ার অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে হক্বানী ৫ম খ- পৃষ্ঠা-৫৯)
(৬-৭) (আকৃতি বিকৃত করার) মধ্যে যেহেতু দাড়ি মুন্ডন করাও অন্তর্ভুক্ত সেহেতু প্রমাণিত হলো, যে তরীক্বার মধ্যে দাড়ি মু-ন করাকে ‘শেয়ার’ বানানো হয়েছে, সেটা ‘শয়তানী তরীক্বা’। যদিও মূর্খ লোকেরা এটার নাম রেখেছে ‘তরীক্বায়ে কলন্দরিয়া।’ (তাফসীরে কামালাইন ফী শারহিল জালালাইন, ১ম খ- পৃষ্ঠা-১০৭, অনুরূপ তাফসীরে বয়ানুল কুরআন উনার মধ্যে উল্লেখ আছে) ‘সূরা নিসা শরীফ’ উনার উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, এক মুষ্ঠির কমে দাড়ি মুন্ডন করা বা ছাটা শয়তানী নির্দেশ পালন করার নামান্তর, যেটা শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম। আর শরীয়ত উনার উসূল হলো- مَااَدَّى اِلَى الْحَرَامِ فَهُوَ حَرَامٌ অর্থাৎ “যে জিনিস হারামের দিকে নিয়ে যায়, তাও হারাম।
কাজেই, দাড়ি মু-ন করার কারণে যেহেতু ইবলীসের নির্দেশ পালন করা হয়, যেটা ইসলামী শরীয়ত উনার আলোকে হারাম। সেহেতু দাড়ি মুন্ডন করা বা এক মুষ্ঠির কমে দাড়ি ছাটাও হারাম। আর হারাম থেকে বেঁচে থাকা ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
যারা শরীয়তের খিলাফ কাজ করে তাদেরকে অনুসরণ করা যাবে না
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
শেষ মুহূর্তেও কত বড় ত্যাগ!!
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা ও তা’যীমার্থে ক্বিয়াম শরীফ করা সুন্নত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
অসংখ্য হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত- প্রাণীর ছবি হারাম
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে শব্দ চয়নের আদব
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
শায়েখ আল্লামা হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে মুহম্মদ ইবনে শিহাব ইবনে ইঊসুফ আল বাযযাযী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ: ৮২৭ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল ফাতাওয়াউল বাযযাযিয়্যাহ আউইল জামিউল ওয়াজীয’ উনার মধ্যে বলেন-
১৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ক্বদমবুছী করা খাছ সুন্নত মুবারক শরীয়তের ফতওয়া অনুযায়ী ক্বদমবুছী নেয়া বা করার জন্য অনুমতি দান করা আখাছ্ছুল খাছ সুন্নত মুবারক:
১৩ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৩ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৩ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তিনটি ছিফত সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হবে
১৩ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আজকের ঘোর বিরোধীদের পূর্বপুরুষরাই মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের ফযীলত বর্ণনা করেছেন
১৩ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)